বৃহস্পতিবার ● ১১ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহে বিএনপি থেকে আ’লীগে যোগদান করা নিয়ে সংঘর্ষে আহত ২০
ঝিনাইদহে বিএনপি থেকে আ’লীগে যোগদান করা নিয়ে সংঘর্ষে আহত ২০
মো. জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ শহরের পৌর এলাকার খাজুরা গ্রামে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করাকে কেন্দ্র করে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় শহরের পৌর এলাকার খাজুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খাজুরা এলাকার জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে ৩৫/৪০ জন বিএনপি নেতাকর্মীরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা লিটনের মাধ্যমে রাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করে ভুরিভোজ করেন। এ নিয়ে প্রতিপক্ষ গ্রুপ ক্ষিপ্ত হয়। গতকাল বুধবার সকাল থেকে আওয়ামী লীগের অপরপক্ষের নেতা আবুল হোসেনের লোকজন নব্যযোগদান কৃত নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হতে থাকে। সন্ধ্যায় একটি চয়ের দোকানে আবুলের সমর্থকরা জাহিদের লোকজনের উপর হামলা চালালে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গোলাম বারীর ছেলে ফারুকসহ ২ জনের শারিরীক অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। ফারুকের ভুড়ি বের হয়ে গেছে। প্রত্যাক্ষদর্শী লিটন নামে একজন জানান, এ সময় তারা গুলি ও বোমার শব্দ শুনছেন। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান খান সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এলাকার পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
১২ দিনে ৪ খুনের পর এবার দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে বাড়িঘর ভাংচুর
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সামাজিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আ’লীগের দু‘দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাংচুর করা হয়েছে। বুধবার (১০ জুন) সকালে উপজেলার পৌর এলাকার সাতগাছি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ সুত্রে জানা যায়, পৌর এলাকার সাতগাছি গ্রামে আওয়ামীলীগের সামাজিক মাতব্বর সাবেক ওর্য়াড কমিশনার নজির উদ্দীন ভোল্টার সাথে স্থানীয় আ‘লীগ নেতা নজরুল ইসলামের বিরোধ চলে আসছিল। এরই সুত্র ধরে উভয়ই গ্রুপের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে নজরুল মাতব্বরে বাড়িতে ইট পাটকেল ছোড়ে ও একাধিক বাড়িঘর ভাংচুর করে প্রতিপক্ষরা। এরই জের ধরে নজরুল গ্রুপের লোকজনও দোকানপাট বাড়িঘরে হামলা চালায়। এসময় সাবেক কাউন্সিল ও পৌর যুবলীগ নেতা রবিউল ইসলাম লাল্টুকে আটক করেছে পুলিশ। শৈলকুপা সার্কেল আরিফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পুলিশ ৫ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে। তারপর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দেখা পাওয়া যায়।
গাঁজা ছেড়ে ঝুঁকছে মরণ নেশা ইয়াবার দিকে
ঝিনাইদহ :: করোনা সুযোগে ঝিনাইদহ জেলায় মাদকের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, মহেশপুর ও শৈলকুপা উপজেলা। এই এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা এখন গাঁজা ব্যবসার পাশাপাশি ব্যাপক হারে ঝুঁকছে মরণ নেশা ইয়াবার দিকে। যা উঠতি বয়সি তরুন-তরুনী শিক্ষার্থীদের হাতে খুব সহজেই পৌছে যাচ্ছে। ইয়াবা নামের এই মরণ নেশার বড়িটির আকৃতি ছোট হওয়ায় মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক সেবীদের হাতে এমনকি বাড়িতে বাড়িতে খুব সহজেই পৌছে দিতে সক্ষম হচ্ছে। ওই সব এলাকার অনেক পরিবারের মধ্যে মরণ নেশা ইয়াবা ঢুকে পড়েছে। পরিবারের উঠতি বয়সী স্বজন এমনকি ভাই-বোন মিলে একসাথে বসেও এই মরণ নেশা ইয়াবা সেবন করছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে ৬টি উপজেলার মধ্যে শৈলকুপা অন্যতম। জানা যায়, শৈলকুপা উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন আর ১টি পৌরসভার মধ্যে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে দেশের করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েও এখন চলছে মাদক ব্যবসা। এর মধ্যে শেখাপাড়া, ভাটই, রামচন্দ্রপুর,সাধুখালী, মাইলমারী,খুলুমবাড়ী ও পৌর এলাকার কবিরপুর মাদকের অন্যতম। বিশেষ করে কবিরপুর এলাকার ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী যুবকেরা ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। মরণ নেশা ইয়াবার টাকা জোগাড় করতে চুরি, ছিনতাইসহ সমাজের বিভিন্ন অপকর্মের সাথে তারা জড়িয়ে পড়ছে। এছাড়া শৈলকুপা উপজেলার সীমান্ত এলাকা হরিণাকুন্ডু উপজেলার চড়পাড়া এলাকায় মদ-গাজার পাশাপাশি মরণ নেশা ইয়াবার ছাড়াছড়ি। তথ্যা অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়ার মাদকের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার হতো শেখপাড়া এলাকাটি। যেখানে এক সময় বস্তা বস্তা গাঁজা আমদানি হয়ে তা বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়তো। কিন্তু বর্তমানে মাদক সেবীরা গাঁজা ছেড়ে মরণ নেশা ইয়াবার দিকে ঝুকছে। যে কারনে অধিকাংশ গাঁজা ব্যবসায়ীরা গাঁজার ব্যবসা ছেড়ে ইয়াবা ব্যবসার দিকে ঝুকছে। ইয়াবা আকৃতিতে ছোট হওয়ায় খুব সহজেই তারা লুকিয়ে রেখে অত্যান্ত গোপনে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কবিরপুর, শেখপাড়া, ভাটই, রামচন্দ্রপুর ও মাইলমারী এলাকায় মাদকের অবাধ বিচরনে শংকিত হয়ে পড়েছে উঠতি বয়সী স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা। এলাকাবাসী জানায়, এসব বেশিরভাগ মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীরা নিজেদের পুলিশ ও র্যাবের সোর্স পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জেলায় মাদকের কোন ভয়াবহতা নেই। যেখানেই মাদক ব্যবসা বা মাদকসেবীদের খবর পাওয়া যাবে সেখানেই অভিযান চালানো হবে। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। এদিকে সাংবাদিকদের হাতে বেশকিছু ইয়াবা ব্যবসা ও সেবনকারীদের ভিডিও এসেছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে স্কুল –পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা মরণ নেশা ইয়াবা সেবন করছে। এলাকার সচেতন মহলের দাবী যদি মাদকের ভয়াবহতা না থাকে বা এলাকায় মাদক ব্যবসা না হয় তাহলে কিভাবে স্কুল –কলেজের শিক্ষার্থীদের হাতে এসব ইয়াবা উঠছে? কোথায়, কিভাবে হাতের নাগালে পাচ্ছে এই মরণ নেশা ইয়াবা ট্যাবলেট? তাই প্রশাসনের কাছে আকুল আবেদন এই মরণ নেশা ইয়াবার হাত থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে এখনই জেলা প্রশাসক,পুলিশ সুপার ও র্যাবের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল।