শনিবার ● ১৩ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » জাতীয় » কাল ১৪ জুন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
কাল ১৪ জুন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
ঢাকা :: আগামীকাল ১৪ জুন ২০২০ বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সারাদেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ ও শপথ গ্রহণ এবং আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মূল কর্মসূচি পালিত হবে। ভাষা শহীদ থেকে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ, গত ৪৯ বছরে দেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছেন এবং এই সময়কালে করোনা মহামারীতে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদেরকে স্মরণ করে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হবে।
ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেলা ১১টায় পুস্পস্তবক প্রদান করে শপথ গ্রহণ করা হবে। পার্টির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দ পুস্পস্তবক অর্পণ করবেন।
পার্টির নেতাকর্মীরা ব্যক্তিগত সুরক্ষা ও শারীরিক দুরুত্ব রক্ষা করেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করবেন। ১৪ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সীমিত পরিসরে আলোচনা সভার আয়োজন করা যাবে।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক আজ এক বিবৃতিতে ‘মহামারী-দুর্যোগ থেকে মানুষ বাঁচাও- দেশ বাঁচাও’ এই স্লোগানে যথাযথ মর্যাদায় পার্টির ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের জন্য পার্টির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সংগঠক ও শুভ্যার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন করোনা মহামারীর এই দুর্যোগে পার্টির যেটুকু শক্তি-সামর্থ তা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই এখনকার গুরুত্বপূর্ণ বৈপ্লবিক মানবিক কর্তব্য। গত ক’মাসের মত আগামী দিনগুলোতেও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি তার এই মানবিক দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে।
উল্লেখ্য ২০০৪ সালে ওয়ার্কার্স পার্টির তৎকালীন নেতৃত্বে চরম আদর্শহীন-নীতিহীন লেজুড়বৃত্তির সুবিধাবাদী রাজনীতিকে প্রত্যাখান করে পার্টির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এর নেতৃত্বে কেন্দদ্রীয় পাঁঁচ নেতাসহ পার্টির নেতাকর্মীদের এক বড় অংশ আলাদা রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করেন এবং পার্টির বিপ্লবী সত্ত্বা ও রাজনীতিকে রক্ষা করতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি গঠন করেন। গত ১৬ বছরে পার্টি তিনটি জাতীয় সম্মেলন-কংগ্রেস ও একটি প্লেনাম অনুষ্ঠিত করে। ২০০৮ সালে পার্টি নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি নামে নিবন্ধন লাভ করে। পার্টির নির্বাচনী প্রতীক কোদাল। ২০০৮ এর ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পার্টি তার নির্বাচনী প্রতীক কোদাল নিয়ে ৫টি আসনে অংশগ্রহণ করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি তামাশার জাতীয় সংসদ নির্বাচন গণতান্ত্রিক ধারার অপরাপর রাজনৈতিক দলের সাথে পার্টিও বর্জন করে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১১টি আসনে পার্টি নিজস্ব কোদাল প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করে। বাম প্রগতিশীল ধারার আরো ৫টি দলও পার্টির নির্বাচনী প্রতীক কোদাল নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করে। তামাশাপূর্ণ জালিয়াতির এই নির্বাচনে কোদাল প্রতীকের ২৮টি আসনে ভোট দেখানো হয়েছে ১ লক্ষ ৭ হাজার। বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ পার্টিও এই নির্বাচন প্রত্যাখান ও বর্জন করে। তবে নেত্রকোনা, নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনসহ স্থানীয় সরকারের বেশ কিছু নির্বাচনে পার্টি তার নিজস্ব প্রতীকে অংশগ্রহণ করে।
২০০৪ সালে স্বতন্ত্র রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণের পর থেকে পার্টির শাসকশ্রেণীর দুই প্রধান রাজনৈতিক মেরুকরণের বাইরে প্রগতিশীল বাম গণতান্ত্রিক শক্তির কার্যকরি জোট গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং এই উদ্যোগের ফল হিসেবে বামপন্থী দলসমূহের সমন্বয়ে ও আন্ত্তরিক প্রচেষ্টায় ২০০৭ এর ১২ সেপ্টেম্বর ‘গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা গঠন করে। পরবর্তীতে এই জোটকে আরো সম্প্রসারিত করে ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই ৮টি দলের সমন্বয়ে গঠন করা হয় বাম গণতান্ত্রিক জোট। বর্তমানে পার্টি এই জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরীক সংগঠন হিসেবে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে বিশেষ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
পার্টি ও তার ১০টি সহযোগী শ্রেণী ও গণসংগঠন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ-বিদ্যুৎ বন্দর, সুন্দরবন রক্ষা আন্দোলন, শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর, নারী, ছাত্র-যুব, সাংস্কৃতিক আন্দোলনসহ নাগরিক সমাজসহ জনগণের প্রায় প্রতিটি ন্যায্য আন্দোলনেও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আসছে। এসব লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পার্টি ক্রমে জনগণের আস্থা অর্জন করছে। ঝড়া-বনা-জলোচ্ছ্বাস ও মহামারীতেও পার্টি জনগণের পাশে থাকছে।
পার্টির পত্রিকা ‘জনগণতন্ত্র’ গত ১৬ বছর ধরে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিসরেও পার্টি সাম্রাজ্যবাদীী -আধিপতবাদী আগ্রাসী তৎপরতা ও সাম্রাজবাদী যুদ্ধ তৎপরতার বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলন বিকশিত ও জোরদার করতে কমিউনিস্ট, বামপন্থী ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দল ও আন্দোলনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। এসবের উদ্দেশ্য হচ্ছে সাম্যবাদের লক্ষ্যে একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী মানবমুক্তির রাজনীতি আরো বেগবান করা।