মঙ্গলবার ● ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মাটিরাঙ্গায় ২টি পরিবার ঈদ করতে পারেনি
মাটিরাঙ্গায় ২টি পরিবার ঈদ করতে পারেনি
মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি:: ২৯ সেপ্টেম্বর : খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গায় পবিত্র ঈদ-উল-আযহার দিনেও দুই পরিবারে ঈদের খুশি নেই…আছে শুধু কান্না আর হাহাকার ৷ বসত্ত বাড়ী হারিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে খোলা আকাশের নীচে অসহায় অবস্থায় পরিবার পরিজনকে নিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে এই দুই পরিবারকে ৷ কান্না দিয়ে যাদের বরণ করে নিতে হয়েছে ঈদুল আযহার খুশিকে-তাদের একজনের নাম মো.আব্দুর রহিম মিয়া অন্যজনের নাম মো. শাহআলম মিয়া প্রকাশ আলম মাঝি ৷ সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে জানা যায়, মো.আব্দুর রহিম ১৯৭৯-৮০সালের পুর্ব থেকে মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়নের বাজার চৌধুরী পাড়ায় যে বাড়ীতে বসবাস করে আসছিলেন এই ঈদের আগের দিন তার বসতবাড়ীসহ রান্নাঘর,টয়লেট,গরুর গোয়াল,টিউবওয়েল ও প্রায় ৩ একর চাষের জমি ভেঙ্গে নিয়ে গেছে সর্বনাশা ধলিয়া খালের খরস্রোতা পানি ৷ সারা জীবনের অর্জিত ভুমি( সম্পদ) ও বসতবাড়ী হারিয়ে আ.রহিম মিয়া একেবারে নি:স্ব হয়ে গেছে ৷ পরিবারের প্রায় ১২/১৩ জন সদস্য নিয়ে তিনি এখন দিশেহারা ৷ আতংকের মধ্যে রয়েছে তার পরিবারের ছোট ছোট শিশুরা ৷ পরিবার সুত্রে জানা গেছে,তাদের অনেকে পাশের গ্রামে গিয়ে আত্মীয় স্বজনের বাসায় আশ্রয় নিয়েছে ৷ চোখের সামনে ভিটেবাড়ী ভাঙ্গনের দৃশ্য দেখে তারা এখন ভয়ে রাতে বাড়ী এলাকায় থাকতে চায়না৷ মো. রহিম মিয়া জানান,প্রায় ২ মাসের প্রবল বর্ষা শেষে মাত্র ৪৮ ঘন্টার প্রবল পানির চাপে তার চোখের সামনেই ধীরে ধীরে এক এক করে তলিয়ে যায় তার বসতবাড়ীসহ অন্যান্য ভূ-সম্পত্তিগুলো ৷ তিনি জানান,দূর্যোগে তার সর্বসাকুল্যে ক্ষতির পরিমাণ ২০ লাখ টাকা প্রায় ৷ বর্তমানে তিনি মানবেতর জীবন যাপন করছেন ৷ অন্যদিকে একই পরিস্থিতির মুখোমুখি রয়েছেন ঐ এলাকার দীর্ঘদিনের বসবাসরত মো.শাহআলম মিয়া প্রকাশ (আলম মাঝি)৷ তিনি জানান, এ পর্যন্ত তার একটি গোয়াল ঘর,একটি টিউবওয়েল,একটি রান্নাঘরসহ প্রায় এককানি মাঝারী গড়নের টিলাভুমি ভেঙ্গে নিয়ে গেছে সর্বগ্রাসী ধলিয়া খাল ৷ পরিবারে তার ছেলেমেয়েদের নিয়ে তিনি ভীষণ উদ্বেগ,উত্কন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন ৷ ধলিয়া খালের পানিতে যে কোন সময় বসত্বাড়ী ভেঙ্গে নিয়ে যাওয়ার ভয়ে ৷ এ পর্যন্ত তার প্রায় ১০লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে তিনি জানান ৷ প্রশাসনের কাউকে জানিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে মো. আ: রহিম মিয়া জানান, স্থানীয় মেম্বার মুকন্দ্র ত্রিপুরা ও সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হিরনজয় ত্রিপুরাকে জানালে তারা অদ্যবদি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে কেউই যাননি বলে জানান এবং তিনি কোন ধরণের সাহায্য সহায়তা অদ্যাবদি পাননি বলেও জানান ৷
এ বিষয়ে বাজার চৌধূরী পাড়া এলাকার মেম্বার মুকন্দ্র ত্রিপুরা জানান,বিষয়টি আমি জানি তবে বর্ষার কারণে আমি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় সময়মত যেতে পারিনি ৷ তবে তার বসতবাড়ীসহ অনেকখানী ভুমি ভেঙ্গে গেছে বর্ষার পানিতে এটা সত্য ৷ বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হিরনজয় ত্রিপুরা এ বিষয়ে বলেন, আমার ইউনিয়নে এমন কোন ভাঙ্গনের খবর আমার জানা নাই,যদি কোন বসতভিটা বর্ষার পানিতে ভেঙ্গে থাকে সেটা আমি জানিনা ৷ বিষয়টি নিয়ে কেউ আমার কাছে আসেনি ৷
এই বিষয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার মো.ইমরুল কায়েস (সহকারী কমিশনার ভুমি)জানান,আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই ৷ দূর্যোগে কেউ যদি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে তাহলে উপজেলা প্রশাসনের নিকট আবেদন করলে আমরা সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন পাঠাবো ৷
আপলোড : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময় : রাত ১০.২৬ মিঃ