সোমবার ● ১৫ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » মাকে নিয়ে বাড়ি যাওয়া হলোনা মিজানের
মাকে নিয়ে বাড়ি যাওয়া হলোনা মিজানের
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: করোনাভাইরাসের কারণে গণপরিবহনে না গিয়ে মাকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে সিলেটের বিশ্বনাথের মামার বাড়ি থেকে ছাতকের নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন মিজানুর রহমান মিজান (২৭) নামের এক যুবক। কিন্তু বিশ্বনাথ ও ছাতক সীমান্তের গোবিন্দগঞ্জে পিকাপের ধাক্কায় প্রাণ হারাতে হয়েছে তাকে। আর গুরুতর আহত হয়েছেন মোটরসাইকলে আরোহী মিজানের মা হুছনেয়ারা বেগম (৫০)। ফলে মাকে নিয়ে আর বাড়ি যাওয়া হলোনা মিজানের।
নিহত মিজান ছাতক উপজেলার সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের পীরপুর গ্রামের মৃত আহসানুর রহমান মুল্লাহর ছেলে। গতকাল রবিবার (১৪ জুন) বিকেল ৫টারদিকে সিলেটের বিশ্বনাথ ও সুনামগঞ্জের ছাতক সীমান্তের গোবিন্দগঞ্জ ব্রিজের পূর্বপাড়ের বায়তুল মামুর জামে মসজিদের সামনে এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, বাবা বেঁচে না থাকায় মামার বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের জয়নগরের মামার বাড়িতই বড় হয়েছেন মিজান।
সম্প্রতি গ্রামের বাড়ি থেকে তার মা হুসনেয়ারা বেগম, স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী তার ছেলেকে নিয়ে মামার বাড়িতে বেড়াতে আসেন মিজান। গত বুধবার তার স্ত্রী সন্তানকে পীরপুরের বাড়িতে রেখে আসেন। আর রোববার মাকে নিয়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে গণপরিবহনে না গিয়ে নিজ মোটরসাইকেলে করে মামার বাড়ি থেকে গ্রামের বাড়ি পীরপুর জাচ্ছিলেন মিজান। কিন্তু গোবিন্দগঞ্জের ব্রিজ পার হয়ে বায়তুল মামুর জামে মসজিদের সামনে যাওয়া মাত্রই তার মোটরসাইকলে (সিলেট-হ-১১-৮৬১৬) বিপরীত দিক থেকে আসা নাম্বার বিহীন দ্রুতগামী একটি পিকআপ-ভ্যান ধাক্কা দিলে ছিটটে পড়েন মিজান ও তার মা হুছনেয়ারা বেগম (৫০)। এতে মা-ছেলে দু’জনই গুরুতর আহত হন।
পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাদের দু’জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হলে সন্ধ্যা ৭টারদিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মিজানকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের জয়কলস হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ আমির উদ্দিন একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় ঘটনাস্থল থেকে পিকআপ-ভ্যানটিও জব্দ করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গেছেন।
নিহত মিজানের মামা ব্যবসায়ী আজিজুল হক এ প্রতিবেদককে বলেন, ছোটবেলা থেকেই মিজান তাদের বাড়িতে থেকে স্থানীয় উত্তর বিশ্বনাথ হাইস্কুলে লেখাপড়া করেছে। বর্তমানে বিয়ে করে মার-সঙ্গে ছাতকের পীরপুরের বাড়িতেই বসবাস করছিল। রোববার মিজান তার মাকে নিয়ে বাড়ি যাবার সময় গোবিন্দগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হবার পর মা-ছেলে দু’জন ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, সোমবার (১৫জুন) ময়না তদন্ত শেষে (তাদের বাড়িতে) জয়নগরে মিজানের প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।
সুনামগঞ্জের জয়কলস হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ আমির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়েই তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে পিকআপ-ভ্যান জব্দ করেছেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে মোটরসাইকেল চালক মিজান ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আর তার আহত মা ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।