শুক্রবার ● ১৯ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » জনদুর্ভোগ » মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ কমলগঞ্জ পৌরবাসী
মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ কমলগঞ্জ পৌরবাসী
এম এ কাদির চৌধুরী ফারহান, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :: করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই বেড়েছে মশার উৎপাত। করোনায় ঘরবন্দী মানুষ মশার কারনে ডেঙ্গু আতঙ্কে দিন পার করছেন। রাত-দিন সমান তালে মশার উপদ্রব অসহনীয় হয়ে উঠেছে। বেশি আতঙ্কে আছেন নিম্নআয়ের কর্মজীবী মানুষ।
বেকার হয়ে ঘরে বসে থাকায় একদিকে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট, অন্যদিকে করোনা-ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। সবমিলে আতঙ্ক-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে তাদের। দিনের বেলায় মশার উৎপাত তুলনামূলক কম থাকলেও সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। এর মধ্যে গত কয়েকদিনের লাগাতার বৃষ্টি হওয়ায় বাসা-বাড়িতে জাঁকিয়ে বেড়াচ্ছে মশা।
কমলগঞ্জ পৌরসভা বাজারের ড্রেনগুলো দীর্ঘদিন যাবত ময়লা আর্বজনায় ভরে যাওয়ায় পানি নিস্কাশনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ড্রেনে জমে থাকা পানির কারনে বৃদ্ধি পাচ্ছে মশা। বাসা কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সর্বত্রে বেড়েছে মশার উপদ্রব।
মশার উপদ্রব অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পৌরবাসির জনজীবন। আর এনিয়ে পৌরবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক অসন্তোষ। সন্ধ্যা কিংবা রাত নয় দিনেও মশার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলছেনা মানুষের। পৌর এলাকায় মশা নিধনে কার্যক্রম না থাকায় বেড়েছে মশার বংশ বিস্তার। মশার দংশনে শুধু মানুষই নয়,গৃহপালিত পশুরাও নেই স্বস্তিতে। আর এই মশার কারণে ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া সহ চিকুনগুনিয়া, ভাইরাস জ্বর ও ডেঙ্গুসহ নানা রোগ লোকজনের শরীরে দেখা দিতে পারে বলে সচেতন মহলের ধারণা।
বিশেষ করে সন্ধ্যা নামলেই বাড়ির ঘরগুলোতে শুরু হচ্ছে মশাদের রাজত্ব। মশাদের অত্যাচারে দুর্ভোগ নেমে আসলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, কমলগঞ্জ উপজেলার ‘খ’ শ্রেণীর এই পৌরসভায় মশার যন্ত্রণায় আমাদের জনজীবন বিরক্ত-অতিষ্ঠ হলেও মশার বিস্তার ও নিধনে চোখে পড়ার মতো কোনো কার্যক্রম নেই কর্তৃপক্ষের। এছাড়া বাজারে অতি সামান্য কেছু ড্রেনের ব্যবস্থা থাকলেও সে গুলোর পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ড্রেনে পলিথিন লতাপাতা ও বাজারের পচা মালামাল ফেলার কারণে ড্রেনের ভিতরে পচে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। আর দুর্গন্ধযুক্ত পানি থেকে মশার জন্ম হয়। এতে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়ে উৎপাত করতে থাকে ঘরে ঘরে।
আলাপকালে পৌরসভার ২নং ওর্য়াডের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম (৪২) বলেন, গত বছর সোস্যাল মিডিয়ায় মশা নিধনে তৎপরতা দেখা গেলেও বাস্তবে মশার অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও তিনি কোনো দিন তাঁর এলাকায় মশা নিধনের জন্য কারও কোনো তৎপরতা দেখেননি।
পৌর এলাকার তোফায়েল আহমেদ বলেন, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে ভয়ঙ্কর মশার উপদ্রব শুরু হয়। করোনা মহামারিতে ঘরবন্দি মানুষের কাছে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া এখন নতুন আতঙ্ক। এই অবস্থায় মশা নিধনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মিনহাজ নাসির বলেন, গ্রীষ্ম মৌসুমে সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দেয় মশার উপদ্রব। লোকজন অতিষ্ঠ মশার অত্যাচারে। এ অবস্থার অবসান প্রয়োজন। শুধু মাত্র মশক নিধনের অঙ্গিকার করলে আর কিছু রাস্থার দুইপাশের আগাছা পরিষ্কার করলেই মশা পালাবে না। মশা নিধনের জন্য উপযুক্ত পদ্ধতির বাস্তবায়ন করতে হবে। পৌর এলাকায় প্রকৃত পক্ষে মশা নিধনের কার্যকর কোন পদক্ষেপ আমার চোখে পড়েনি। পৌর মেয়র সহ কাউন্সিলরদের প্রতি আহবান থাকবে তারা যেন এলাকা ভিত্তিক সচেতনতা ও নিয়মিত ঔষধ স্প্রে করেন। মশা নিয়ন্ত্রণ করতে নিতে হবে সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনার মতো বিজ্ঞান সম্মত পদক্ষেপ। ধ্বংস করতে হবে মশার আবাসস্থল।
এবিষয়ে কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জুয়েল আহমেদ বলেন, পৌরসভার নাগরিক সুবিধা পেতে হলে নাগরিক হিসাবে যে দায়িত্ব আছে সে দায়িত্ব পালন করতে হবে নাগরিকদের। এছাড়াও তিনি বলেন, মশা নিধনের জন্য প্রত্যেকটি ওর্য়াডে কমিটি রয়েছে ও তাদের র্নিদেশ দেওয়া রয়েছে আগামী সাপ্তাহে মশক নিধনের স্প্রে ব্যবহার করার জন্য। তিনি আরো বলেন, পৌরসভার প্রতিটি নাগরিকদের ঘরে ঘরে গিয়ে মশার স্প্রে করা সম্ভব নয়।