বৃহস্পতিবার ● ২৫ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » মৌলভীবাজার » আব্দুস শহীদ এমপি’র করোনা জয়
আব্দুস শহীদ এমপি’র করোনা জয়
ম এ কাদির চৌধুরী ফারহান, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :: বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ, মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ -শ্রীমঙ্গল) আসনের ৬ বারের নির্বাচিত আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য ও অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি’র দ্বিতীয় করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তিনি গত ১৪ জুন জ্বর, সর্দি নিয়ে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন। পরদিন ১৫ জুন তাঁর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। পরবর্তীতে সতর্কতার জন্য মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে তাঁকে ১৮ জুন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ২৪ জুন প্রথম ফলোআপ টেষ্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সকালে আইডিসিআর থেকে তার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তিনি এখন সুস্থ আছেন। তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকা শ্রীমঙ্গল -কমলগঞ্জের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং চিফ হুইপের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন পাশে থাকার জন্য।
উপাধ্যক্ষ ড. মো.আব্দুস শহীদ এমপি’র একান্ত সচিব আহাদ মো. সাঈদ হায়দার জানান, করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ আসায় এমপি আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন এবং তিনি আশা প্রকাশ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাস্তবমুখী ও সাহসী বিভিন্ন পদক্ষেপে বাংলাদেশের জনগণ চলমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দেশের উন্নয়নের গতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনবেন। উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপি করোনামুক্ত হওয়ায় পরম করুণাময়ের দরবারে অশেষ শোকরিয়া জানিয়ে তাঁর নির্বাচনী এলাকা কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সহ সর্বস্তরের জনসাধারনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
এছাড়া গণমাধ্যমের সাংবাদিক, দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ, দেশে-বিদেশে অবস্থিত ডিপ্লোমেট এবং প্রবাসী যারা খোঁজ নিয়েছেন, দোয়া করেছেন, তাদের সবার প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। খুব দ্রুতই তিনি বাসায় ফিরবেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) বিকেলে সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি’র ব্যক্তিগত সহকারী ইমাম হোসেন সোহেল জানান, তিনি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। এখনো তিনি রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে আছেন। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ছাড়পত্র দেয়া হলে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হবে।
কমলগঞ্জ পৌর এলাকার কাল বৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে ঢেউটিন ও চেক বিতরণ
কমলগঞ্জ :: সম্প্রতি কাল বৈশাখী ঝড়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌর এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত দু:স্থ পরিবারের মাঝে ঢেউটিন ও গৃহ নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের চেক বিতরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) বিকাল ৪টায় কমলগঞ্জ পৌরসভা কার্যালয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দু:স্থ ১০ জনকে ১ বান্ডিল করে ঢেউটিন ও ৩ হাজার টাকা করে ৩০ হাজার টাকার চেক বিতরণ করা হয়। কমলগঞ্জ পৌর মেয়র মো. জুয়েল আহমদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী ও উপজেলা বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যান মো: ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল। অনুষ্ঠানে কমলগঞ্জ পৌরসভার উদ্যোগে পৌর এলাকার অসহায় ও হতদরিদ্র ৫০ জনকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ১০কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়।
কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া ডরমেটরিতে হামলা ও ভাংচুর : আটক-২
কমলগঞ্জ :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া ডরমেটরিতে রুম ভাড়া না দেয়ায় হামলা, ভাংচুর ও নগদ টাকা লুটে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ ফরহাদ ও আহাদ নামে ২ যুবককে আটক করেছে। ডরমেটরির কেয়ারটেকার ওয়াহিদ মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সকাল ১১ টার দিকে কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বটতল এলাকার আইনউল্ল্যার ছেলে ফরহাদ মিয়া, আশিক মিয়ার ছেলে কালাম মিয়া ও মাসুক মিয়ার ছেলে আহাদ মিয়াসহ ৮/৯ জন ডরমেটরিতে রুম ভাড়া চায়। তিনি রুম ভাড়া দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ডরমেটরির দরজা, জানালা ভাংচুর করে এবং তার কাছে নগদ ৫ হাজার টাকা চায়। সে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তার গলায় ছুরি ধরে তার সাথে ও টেবিলের ড্রয়ারে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে ওয়াহিদ মিয়া বিষয়টি রেঞ্জ কর্মকর্তাকে জানালে তিনি কমলগঞ্জ থানাকে খবর দেন। খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানার এসআই অনিক বড়ুয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ফরহাদ ও আহাদ নামে ২ যুবককে আটক করেন।
কমলগঞ্জ থানার এসআই অনিক বড়ুয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কমলগঞ্জে খাস টিলা কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত
কমলগঞ্জ :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বাদে উবাহাটা, সরই বাড়ি ও মধ্য কালাছড়ায় সরকারি খাস টিলা ভূমির মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার অভিযোগে কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি)র পক্ষে সরেজমিন তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি)। টিলা কেটে বাড়িঘর নির্মাণ, মাটি বিক্রি, কৃষিজমি তৈরি করার অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় একটি চক্রের বিরুদ্ধে। বনের টিলা ঘেষা ব্যক্তিগত এসব পাহাড়ি টিলা কেটে নিশ্চিহ্ন করছেন স্থানীয়রা। কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশারের (ভূমি) কার্যালয়ের সার্ভেয়ার (জরিপ কর্মকর্তা) বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল তদন্ত করেন।
জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বাদে উবাহাটা, সরইবাড়ি, মধ্য কালাছড়া, বড়চেগ গ্রাম এলাকায় খাস ভূমিতে বসবাসকারীরা প্রাকৃতিক টিলা কেটে মাটি বিক্রি করছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে তারা টিলা কেটে টিলাকে সমতল ভূমিতে পরিণত করছেন। পাহাড়ি দুর্গম এলাকা থাকায় স্থানীয়রা এসব উঁচু উঁচু টিলা কেটে বাড়িঘর নির্মাণ, মাটি বিক্রি, টিলঅ ভূমিকে কৃষিজমিতে পরিনত ও মাটি দিয়ে পুকুর ভরাট করছেন। বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (বাপা) সিলেট বিভাগীয় সম্পাদক আব্দুল করিম মুঠোফোনে বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া কোন অবস্থায় ভূমির ধরণ পরিবর্তন করা যাবে না। তাছাড়া টিলা কাটা সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ। তিনি মনে করেন টিলার মালিক হলেও তিনি ইচ্ছে করে টিলা কাটতে পারবেন না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তিনি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।
তবে নিজস্ব সম্পত্তি হলেও টিলাকাটার বিষয়ে প্রশাসন কিংবা পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি গ্রহণের প্রয়োজনবোধ মনে করছেন না স্থানীয় লোকজন। বাদে উবাহাটা গ্রামের দ্বিন ইসলাম, আব্দুল মালিক, ইব্রাহিম মিয়া, মধ্যকালাছড়ার আব্দুর রশীদ ব্যক্তিগত কাজে ও সরইবাড়ি এলাকার কয়েকটি স্থানে টিলা কাটা চলছে। বসতি তৈরির জন্যে অবৈধভাবে টিলা কাটতে গিয়ে কয়েকমাস আসে করিমবাজারের পার্শ্ববর্তী এলাকায় টিলার মাটি ধ্বসে জলিকা নামে এক মহিলা মারা যান। প্রাণি, উদ্ভিদ ও জীবজগতের জন্যে পাহাড়, টিলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও এক শ্রেণির মানুষের আগ্রাসী ভূমিকা পরিবেশকেও বিনষ্ট করছে।
স্থানীয় সচেতন মহল জানান, এসব এলাকা কিছুটা দুর্গম ও আড়ালে থাকায় প্রশাসনের নজর থাকে না। বাহির থেকে কেউ আসলে টিলা কাটার দৃশ্য দেখতে পান। এই টিলাগুলো প্রাকৃতিকভাবে উঁচু মানের রয়েছে। নানা উচ্চতার অসংখ্য টিলা সমতলে পরিণত হয়েছে। টিলাগুলো পর্যায়ক্রমে প্রকাশ্য দিবালোকে কেটে ফেলা হলেও জনপ্রতিনিধিসহ কারো মাথা ব্যাথা নেই। ফলে পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির স্থল হিসাবে পরিণত হচ্ছে।
অভিযোগ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে বৃহস্পতিবার সরেজমিন সার্ভেয়ার তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। এরপর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহনে নির্দেশনা চেয়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের কাছে বৃহস্পতিবার বিকেলেই প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। আপাতত ঘটনাস্থল সরকারি খাস ভূমি এ ভূমির টিলা ও মাটি নিষেধ লিখে একটি সাইবোর্ড স্থাপন করা হচ্ছে বলেও সহকারি কমিশনার জানান। তবে টিলা কাটার সাথে জড়িত স্থানীয়দের দাবি, এসব টিলা তাদের নিজস্ব সম্পত্তি থাকায় নিজেদের প্রয়োজনে কেটে ফেলছেন। এতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পরিবেশ অধিদপ্তরকে অবহিত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।