সোমবার ● ২৯ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » অপরাধ » ঢাকা দক্ষিণ সিটির পরিচ্ছন্ন বিভাগের দূর্নীতির মহারাজা আব্দুল লতিফ (অডিওসহ)
ঢাকা দক্ষিণ সিটির পরিচ্ছন্ন বিভাগের দূর্নীতির মহারাজা আব্দুল লতিফ (অডিওসহ)
নির্মল বড়ুয়া মিলন :: ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি তার সব চেয়ে বড় প্রমান পাওয়া গেল নিরীহ জনগোষ্ঠী পরিচ্ছন্নতাকর্মিদের নাম বিক্রয় করে ন্যায় অধিকার হরণ করছেন কিছু অসাধু নেতা। দুর্নীতির মাধমে লোপাট করছেন রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে সেবা প্রদানের জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে ৫ হাজার ৩শত জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী থাকা সত্বেও কেন ঢাকার পরিস্কার পরিচ্ছন্নতায় এত অনিয়ম, কেন ঢাকার মানুষ পরিচ্ছন্নতায় সেবা পাচ্ছেন না ? কেনইবা আবর্জনায় সয়লাব রাজধানী ঢাকা দক্ষিণ সিটির কর্পোরেশন। এর উত্তর খোজা যাক, পরিচ্ছন্ন কর্মীদেরই নানা দুর্নীতির অভিযোগ পরিচ্ছন্ন বিভাগের স্ক্যাভেঞ্জার্স ইউনিয়ন নেতা আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী পরিচ্ছন্ন কর্মীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য অনুসন্ধানে বেরিয়ে আছে স্ক্যাভেঞ্জার্স ইউনিয়ন নেতা আব্দুল লতিফের দুর্নীতির একের পর এক দুর্নীতির তথ্য। একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর বেতন প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু সেখান থেকে প্রতিমাসে ৫ শত টাকা কেটে নেওয়া হয়। কেন নেওয়া হয়, আদৌ এর কোন হদিস পাওয়া যায়নি। পাওয়া গেছে বিশাল আকারের আব্দুল লতিফে এর দুর্নীতির আখড়ার সন্ধান।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায় ৫৩০০ পরিচ্ছন্নকর্মীর বেতনের প্রতিমাসে সাড়ে ২৬ লক্ষ টাকা বছরে ৩ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা হজম করছেন পরিচ্ছন্নকর্মীদের ইউনিয়ন নেতা আব্দুল লতিফ ও পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তারা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৫ হাজার ৩শত জন পরিচ্ছন্ন কর্মি থাকা সত্বেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি বাসীরা ধুলো ময়লায় জর্জরীত, ড্রেনেজ ব্যবস্থা খারাপ থাকার কারণে একটু বৃষ্টি পড়লেই পঁচা পানিতে ভেসে যায় ঢাকা। এর কারণ হচ্ছে ১৫শত থেকে ২হাজার পরিচ্ছনকর্মীরা কাজ না করে বসে বসে সরকারের বেতন হাতিয়ে নিচ্ছে । এরা ৯০ শতাংশই অ-হরিজন এবং এদের থেকে আব্দুল লতিফ চক্র নেয় প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা প্রতিমাসে গিলে খাচ্ছে চক্রটি।
পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ৭০ শতাংশ দৈনিক কাজের ভিত্তিতে (মাষ্টার রোল) ভাবে নিয়োজিত তাই এদের কোন পেনশন নাই। দুর্নীতিবাজরা এটাকে পুজি করে বিগত ৪ বছর ধরে প্রত্যেক মাসে ২শত টাকা কর্তন করে সাড়ে ১০ লক্ষ টাকা প্রত্যেক মাসে ইউনিয়নের ফান্ডে জমা রেখে দেয়। কিন্তু ৫জন মৃত ব্যক্তির পরিচ্ছন্ন কর্মীকে ৭০ হাজার টাকা করে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে বাকি ৭ লক্ষ টাকা ইউনিয়নের নেতা আব্দুল লতিফের পকেটে গেছে। বিগত ৪ বছরে গরীব দুঃখী পরিচ্ছন্ন কর্মীদের প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাত করেছে ধূর্তবাজ আব্দুল লতিফ। দীর্ঘ দিন ধরে এই প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন খোদ নিরীহ পরিচ্ছন্ন কর্মীরা।
ধূর্তবাজ এ দুর্নীতিবাজ আব্দুল লতিফ স্থানীয়তার দোহায় দিয়ে মাস্তানদের ভয় দেখিয়ে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের মুখ বন্ধ রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
কোন পরিচ্ছন্ন কর্মী মারা গেলে সেই মৃত কর্মীর চাকরি ৪-৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ছবি বদল করে চাকুরী কেনা বেচা হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। যার নেতৃত্বেও রয়েছেন ইউনিয়নের নেতা আব্দুল লতিফ।
পরিচ্ছন্ন কর্মীদের এমন অভিযোগ শুনে্ তাদের ইউনিয়ন নেতা আব্দুল লতিফের মুঠোফোন (০১৭১১-১৩০২৭৪) তে সিএইচটি মিডিয়ার পক্ষ থেকে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় দিলে পরে যোগাযোগ করতে বলেন । কিন্তু পরে বারবার ফোন দিলেও আব্দুল লতিফ আর ফোন রসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিচ্ছন্ন কর্মিদের জন্য আবাসন ব্যাবস্থা করেছিলেন কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সুন্দর উন্নয়নকেও ওই দুর্নীতীবাজরা ধূলিসাৎ করেছে। এই দুর্নীতীতে জোটবদ্ধ হয়ে কোটি কোটি টাকা লোপাট করেছেন রাজস্ব কর্মকর্তা ও স্ক্যাভেঞ্জার্স ইউনিয়ন এবং পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তারা। (অডিও লিংক যুক্ত)
গনকটুলী সিটি কলোনীর, হিন্দু, সম্প্রদায় এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের বসবাসের জন্য বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস এর উন্নয়ন কল্পে ৬ টি মুসলিম সমাজ এবং ১টি হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য আবাসন ছয়তলা ভবন করে নির্মান হয়। এবং আরো ৫টি ভবন হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য নির্মানাধীন প্রক্রিয়ায় রয়েছে। ৬টিভবনে ৩৬০ পরিবারের জন্য রুম বরাদ্দ্বের কথা থাকলেও প্রত্যেকটি পরিবার থেকে ৪লক্ষ টাকা করে নিয়ে ১৪কোটি ৪০লক্ষ টাকা ভাগাভাগি করেন এই দুর্নীতিবাজ কর্তারা।
গতকাল ২৮ জুন রবিবার মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস গণমাধ্যমের সাথে এক স্বাক্ষাতকারে বলেছেন, দক্ষিন সিটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে দুর্নীতির চিত্র ব্যাপক গভীরে। এসব দুর্নীতিবাজদের খোজে বের করতে কিছুদিন সময় তো লাগবে। দুর্নীতি আর সেবা এক সাথে চলতে পারেনা। (মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস ভিডিও লিংকসহ)।
বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসে বন্ধ হয়নি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের দূর্নীতির মহারাজা আব্দুল লতিফ দুর্নীতির কর্মকান্ড জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিচ্ছন্নকর্মীরা।
এই দুর্নীতিবাজরা ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে নতুন আবাসন জায়গা গুলোতে কত রকম ভাবেই দুর্নীতি করছে। কয়েকজন ভুক্তভোগী পরিচ্ছন্নকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নতুন মেয়র দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন সুষ্ঠু তদন্ত করলে সব দুর্নীতিবাজ ধরা পড়বে। দুর্নীতিবাজদের কঠোর হস্তে দমন করার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস এর কাছে দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিচ্ছন্নকর্মী হরিজন সম্প্রদায়।