সোমবার ● ২৯ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধায় করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও একজনের মৃত্যু
গাইবান্ধায় করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও একজনের মৃত্যু
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা সদর উপজেলার পৌরসভার মধ্যপাড়ায় রবিবার রাতে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মোস্তফা লালন নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। সে শহরের মধ্যপাড়ার বাবলু মিয়ার ছেলে।
জানা গেছে, মোস্তফা দীর্ঘদিন থেকে চট্রগ্রামে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে চাকুরী করে আসছিল। সে চট্রগ্রাম থেকে জ্বর ও শ্বাস কষ্ট নিয়ে গাইবান্ধার বাড়িতে আসে। বাড়িতে এসে তার শ্বাস কষ্ট বেশী হলে এবং ডায়রিয়া দেখা দিলে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়। এদিকে সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে একটি টিম তার নমুনা সংগ্রহ করে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পারিবারিক কবর স্থানে তার দাফন করা হয়।
পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে গাইবান্ধায় ব্যাপকভাবে নদী ভাঙন
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ঘাঘট নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্র জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় সোমবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের পানি তিস্তামুখ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৮ সে.মি. ও ঘাঘট নদীর পানি নতুন ব্রীজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরও মারাত্মক অবনতি হওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে পানিবন্দী হয়ে পড়ছে হাজার হাজার মানুষ। এছাড়া পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী ভাঙনও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাঙন কবলিত ও পানিবন্দী লোকজন তাদের বাড়ি ঘর ছেড়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও গরু-ছাগল নিয়ে নৌকায় করে আসবাবপত্র নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ও উঁচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে।
পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ফুলছড়ি ইউনিয়নের জামিরা ও নামাপাড়া গ্রামের ৫৭টি, এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের জিগাবাড়ি, আলগারচর, ভাটিয়াপাড়া, পূর্ব হরিচন্ডি, পাগলারচর, তিনথোপা গ্রামে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ৮৫টি পরিবার তাদের বসতভিটা হারিয়েছে। এদিকে আকস্মিক বন্যায় বালাসীঘাটের দক্ষিণ পার্শ্বে ফুলছড়ি উপজেলার রসুলপুর ও কাইয়ারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দুটি বন্যার পানিতে নিমজিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান জানান, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও গাইবান্ধা শহর রক্ষা বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তবে বাঁধ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সারাদেশে নারী-শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে
বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের মানববন্ধন
গাইবান্ধা :: সারাদেশে নারী-শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে সোমবার জেলা শহরের ১নং ট্রাফিক মোড়ে এক মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন জেলা বাসদ (মার্কসবাদী)র সদস্য সচিব মনজুর আলম মিঠু, নারীমুক্তি কেন্দ্রের জেলা সভাপতি রোকেয়া খাতুন, হালিমা খাতুন, পারুল বেগম, শামিম আরা মিনা, সাংস্কৃতিক কর্মী শাহনাজ আমিন মুন্নী, গাইবান্ধা কলেজিয়েট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আফরোজা খানম লিলি প্রমুখ।
বক্তরা বলেন, করোনা মহামারী সময়েও নারী-শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত একমাসে শুধু গাইবান্ধাতেই গণ ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক শিশুর জননী, স্কুল শিক্ষক কর্তৃক শিশু গৃহ পরিচারিকা এবং ভন্ড কবিরাজ কতৃক তিন শিশু। ধর্ষকদের বেশিরভাগই এখনো গ্রেফতার হয়নি। যারা গ্রেফতার হয় তারাও আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে রক্ষা পেয়ে যায়। দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি না হওয়ায় ধর্ষণ-নির্যাতন বেড়েই চলেছে। সিনেমা-নাটক এবং ধর্মীয় গুরু-মোল্লাদের বক্তৃতায় নারীকে ভোগ্যপণ্য হিসেবে উপস্থাপনের কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে নারী নির্যাতন-ধর্ষণ। তারা নারী-শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যা বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন এবং প্রয়োগ করার জোর দাবী জানান। নেতৃবৃন্দ করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের চরম ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা করে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপের দাবী করেন। তারা বলেন, জেলা ও উপজেলায় করোনা টেষ্টের ল্যাব স্থাপনসহ সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের রেশনে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
বাঁধ নির্মাণের নামে কোটি টাকার বাণিজ্য বন্ধের দাবিতে বাসদ মার্কসবাদীর পথসভা
গাইবান্ধা :: বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের নামে কোটি টাকার বানিজ্য বন্ধ, পাউবোর দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে সোমবার বাসদ মার্কসবাদী গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে জেলা শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভাগুলোতে বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির সদস্য কাজী আবু রাহেন শফিউল্যা, সদস্য নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, পরমানন্দ দাস, কীর্তন বাসফোর প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রতিবছর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষার নামে জনগনের সাথ চরম রসিকতা করছে। কাজ ঠিকমতো না করে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করছে, ফলে জনগণকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অবিলম্বে পাউবোর এই দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের ক্ষতিপুরণ এবং নদী ভাংগন রোধে স্থায়ী সমাধান, জেলা ও উপজেলায় করোনা টেষ্ট ল্যাব স্থাপন করে সকল মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত সহ কর্মহীন মানুষদের নগদ অর্থ ও রেশন প্রদানের দাবী জানান।