মঙ্গলবার ● ৩০ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » থামছে না পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকের ভোগান্তি
থামছে না পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকের ভোগান্তি
অলক চৌধুরী নয়ন, রাউজান (উত্তর) প্রতিনিধি :: অতিরিক্ত বিলে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সদর দপ্তর রাউজানে গিয়ে দেখা যায় ভুক্তভোগীদের দীর্ঘ লাইন। সবার অভিযোগ প্রায় অভিন্ন। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ-এর বিল আসা। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যে সামাজিক দূরত্বের যে নির্দেশনা আছে এখানে তার কোন বালাই নেই। এখানে সবাই শরীর ঘেঁষাঘেঁষি করি একজনের পিছনে দাঁড়িয়েছেন আরেকজন। মনগড়া বিদ্যুৎ বিল পূর্বের বিলের চেয়ে দ্বিগুণ বা তিনগুণ বেশি পরিমাণ টাকা বসিয়ে বিল দেওয়া হয়েছে বলে রাউজানের বিভিন্ন এলাকার কয়েকশত গ্রাহক অভিযোগ করেন। মিটার না দেখে মনগড়া অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল সংশোধন করতে হাজার হাজার বিদ্যুতের গ্রাহক লকডাউনের মধ্যেও ভিড় করছেন এখানে। আবার অনেককে দেখা যায বিদ্যুৎ অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়তে। এর মধ্যে কিছু ব্যতিক্রমও আছেন যারা মনগড়া বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার পরও বিদ্যুৎ বিল সংশোধন না করে সময়ের অভাবে বা করোনা ভাইরাসের ভয়ে ভীড় এড়িয়ে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছেন।
করোন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে রাউজান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন কিছু কিছু এলাকায় মিটার রিডার গ্রাহকের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্টানে না গিয়ে অফিসে বসে মনগড়া বিদ্যুৎ বিল তৈরি করে গ্রাহকের বাড়ি পৌঁছায়। এর মধ্যে মার্চ মাসের বিদ্যুৎ বিলের কাগজ ও বাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্টানে না দিয়ে পরে মে মাসের বিলের সাথে মাস উল্লেখ করে যোগ করে দেয়। গ্রাহকদের অভিযোগ বিদ্যুৎ বিল রিডিংয়ের জন্য গ্রাহকের বাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্টানে যেতে না পারলেও বিল আদায় করার জন্য রাউজান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন যাচ্ছেন বাড়ি বাড়ি। বাড়ি গিয়ে বিল আদায় করতে না পারলেও গ্রাহক কখন পরিশোধ করবেন জোর করে আদায় করা হচ্ছে তার প্রতিশ্রুতি। অথচ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে লকডাউনের মধ্যে বেশির ভাগ মানুষের আয়ের পথ বন্ধ থাকায় সারা দেশের এনজিও গুলোকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কিস্তি আদায়ের জন্য চাপ না দিতে সরকারি ভাবে নির্দেশ দিলেও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি একমাসের বিলও বিলম্বও মানতে নারাজ । মোবাইল ফোনে এসএমএস করে বা বিভিন্ন মাধ্যমে লকডাউনের কারণে আটকে থাকা বকেয়া বিলের পরিশোধের জন্য বিদ্যুৎ বিলের গ্রাহকদের তাগাদা দিয়েও নিশ্চিত থাকতে পারছেন না রাউজান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্তৃপক্ষ। যার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিল আদায়ের জন্য মাঠে নেমে পড়েছেন। সরকার যেখানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন, সেখানে রাউজান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়ি গিয়ে মানুষকে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন।
রাউজান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অফিসে সরেজমিনে গিয়ে কয়েকজন গ্রাহকের সাথে কথা বলে জানা যায় অনেকের ক্ষেত্রে পূর্বের পরিশোধ করা বিলের টাকা ও নতুন বিলের সাথে বসিয়ে যোগ করে বিলের কাগজ তৈরী করা হয়েছে। পুরাতন বিলের কাগজ যাদের কাছে সংরক্ষিত আছে তারা পুরাতন পরিশোধের বিল দেখানোর পর পরিশোধ করা বিলের টাকা বাদ দিয়ে নতুন করে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ দেওয়া হচ্ছে। আর যাদের কাছে পুরাতন বিলের কাগজ সংরক্ষিত নেই তাদেরকে পূর্বের মাসে পরিশোধ করার পরও আবার পরিশোধ করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। এইসব অনিয়মের খবর নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলেও, থামছে না পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকের ভোগান্তি।