মঙ্গলবার ● ৩০ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » লালমোহনে দুর্বৃত্তরা ঘর ভেঙে দেয়ার কারণে খোলা আকাশের নিচে ফুলজান
লালমোহনে দুর্বৃত্তরা ঘর ভেঙে দেয়ার কারণে খোলা আকাশের নিচে ফুলজান
ভোলা প্রতিনিধি :: ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ৮নং ওয়ার্ড বাত্তিরখাল বেড়ীবাঁধে থাকা অসহায় ফুলজানের ঘরটি ভেঙে দিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী মাওঃ নুরুল ইসলামের ছেলে নয়ন ও তার লোকজন। ফলে ঘর হারিয়ে প্রায় মাসখানেক যাবত স্বামী ও সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে ফুলজানের পরিবার।ভুক্তভোগী ফুলজান জানায়, প্রায় মাস খানেক আগে টাকা পয়সা লেনদেন নিয়ে তার বোন ও খালার মধ্যে ঝগড়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নুরুল ইসলাম মৌলভী/মেম্বারের ছেলে নয়ন তার লোকজন নিয়ে ফুলজানের ঘরে হামলা চালায়। একপর্যায়ে হামলাকারীরা তার ঘরটিকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়।
ফুলজানের স্বামী ইলিয়াছ পেশায় জেলে। ঘর ভাঙচুরকালে ইলিয়াছ হামলাকারীদের হাত পা ধরেও ঘরটি রক্ষা করতে পারেনি। তাই সন্তান ও স্বামী নিয়ে বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে ফুলজান।
ফুলজান আরও জানায়, ঘর ভেঙে ফেলার বিচার চাইতে গিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন বিচার পায়নি সে। নুরুল ইসলাম মৌলভী মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান ছিলেন বিধায় সকলে সাথে তার সখ্যতা, এজন্য কোথাও গিয়ে ন্যায্য বিচার পাচ্ছেনা বলেও জানায় ফুলজান।
এদিকে ঘর ভাঙচুরের বিষয়টি অস্বীকার করে মৌলভীর ছেলে নয়ন জানায়, ফুলজানের বাসার পাশেই মসজিদ। ফুলজানের পরিবারের প্রতিনিয়ত হট্টগোলের কারণে মুসল্লীদের নামাজ পড়তে সমস্যা হয় বিধায় একাধিকবার তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল। ঘটনার দিনও তারা হট্টগোল করায় নামাজ শেষে মুসল্লীরাই ফুলজানের ঘর ভেঙে দিয়েছে।
ঘর ভেঙে দেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম মৌলভী জানান, ফুলজানের চরিত্র খারাপ। তারা এ ঘরে অসামাজিক কার্যকলাপ চালাতো।
এদিকে নুরুল ইসলাম মৌলভীর ছোট ভাই ও অভিযুক্ত নয়নের চাচা ফারুক জানান, ফুলজান তার প্রতিবেশি। তবে সে বা তার পরিবারের কেউ অসামাজিক কার্যকলাপ করতো বলে কখনো দেখেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লালমোহন থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর খায়রুল কবীর বলেন, এমন ঘটনার কোন লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ প্ইানি।
এদিকে নুরুল ইসলাম মৌলভী ও তার ছেলে নয়নের বিচার দাবি করেছে ভুক্তভোগী ফুলজান ও তার পরিবার।
ভোলায় শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের মানববন্ধন
ভোলা প্রতিনিধি :: ভোলা জেলা শিক্ষানবিশ আইনজীবী পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে লিখিত পরীক্ষা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনিশ্চিত হওয়াই ২০১৭ ও ২০২০ইং সালের উত্তীর্ণ সকল শিক্ষানবিশ আইনজীবিদের গেজেট প্রকাশ করে সনদ প্রদান। ও ২০১৭ সালের মহামান্য হাইকোর্টের আপিল বিভাগের রায় অনুসারে প্রতিবছর পরীক্ষা শুরু করে একই বছরে ক্যালেন্ডার অনুসারে শেষ করার দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টায় ভোলা জেলা প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ভোলা জেলা শিক্ষানবিশ আইনজীবী পরিষদের সভাপতি ফরহাদ হোসেনে এর সভাপতিত্বে এই ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ভোলা জেলা শিক্ষানবিশ আইনজীবী পরিষদের সহ-সভাপতি আবুল হাসেম শাকিল, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক মালেক, এইচএম মামুন ও মুক্তারা রাণী দে, মাহবুবুর রহমান, মিজানুর রহমান, ইয়ামিন হাওলাদার প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক করোনাভাইরাস মহামারীতে মানুষ জীবন বাঁচানোর জন্য যখন ঘরে অবস্থান করছে। তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা আজ তারা রাস্তায় নেমেছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বিধি অনুযায়ী প্রত্যেক ৬ মাস পর পরীক্ষা গ্রহণ করার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে তা আড়াই থেকে তিন বছরও লেগে যায়। আবার একবার পিলি এমসিকিউ পরীক্ষা শুরু করলে তা শেষ করতে দেড় বছর সময় লেগে যায়। বিনা বেতন ও সম্মানীভাতা বিহীন এই স্বাধীন পেশায় বছরের পর বছর সময় নষ্ট করে পর্যায়ক্রমে পিলি, লিখিত, ভাইবাসহ তিনটি পরীক্ষা নিচ্ছে তারা। পরীক্ষায় ১০ থেকে ১৫ পার্সেন্ট পাশের হার নিয়েও চরম হতাশা ও অসন্তুষ্ট রয়েছেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা।
এই রকম অদ্ভুত, দীর্ঘসূত্রতার পদ্ধতির পরীক্ষা নেওয়া বিধান বিশ্বের আর কোথাও নজির নেই। যা বাংলাদেশের প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষানবিশ আইনজীবীর জন্য আজ বিষফোড়ায় পরিণত হয়েছে।
২০১৪ সালের শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের রিটের প্রেক্ষিতে ২০১৭ ইং সালে মহামান্য হাইকোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে প্রত্যেক বছর পরীক্ষা শুরু করে তা একই বছরের ভিতর শেষ করার নির্দেশ দেয়া থাকলেও বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ওই রায়ের আদেশেকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বছরের-পর-বছর পরীক্ষা না নিয়ে তারা চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। তাদের এই দায়িত্বহীনতা, উদাসীনতা ও অবহেলার কারণে আজ দেশের শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
তারা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সকল সেক্টরের দিকে আপনি লক্ষ্য রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। দয়া করে বার কাউন্সিলের দিকে আপনি একটু নজর দিন।
এই করোনা মহামারীর কারণে ১৭ ও ২০ সালে যারা পিলি (এমসিকিউ) পরীক্ষায় উত্তীর্ণদেরকে দ্রুত গেজেটের মাধ্যমে সনদের ব্যবস্থা এবং প্রতি বছর পরীক্ষা নিয়ে সকল শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের সামাজিক ভাবে জীবন যাপনের ব্যবস্থা করে বেকারত্ব অভিশাপ দূর করার দাবি তোলেন তারা।
এসময় মনিরুল ইসলাম, ইব্রাহিম হাওলাদার, রফিকুল ইসলাম, নুরুদ্দিন, আজিমউদ্দিন, শহীদুল্লাহ, মাহবুবুর রহমান, সেলিম সুজন কর্মকার, ফয়জুন্নেসা, জান্নাত বেগমসহ ভোলা জেলার সকল শিক্ষানবিশ আইনজীবীগণ উপস্থিত ছিলেন।