রবিবার ● ৫ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, মামলা নিতে গড়িমসি
প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, মামলা নিতে গড়িমসি
পলাশ বড়ুয়া, উখিয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের উখিয়ার রাজাপালংস্থ তুতুরবিল গ্রামে চিহ্নিত বখাটে যুবক কর্তৃক প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মামলা নিতে গড়িমসি করছে বলে জানিয়েছে ভিকটিমের পরিবার।
ধর্ষণের চেষ্টাকালে বাঁধা দেয়ায় অমানুষিক নির্যাতন ও মারধরে মারাত্মক জখমের শিকার গৃহবধূ বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মঙ্গলবার উখিয়া থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী অফিসার নন্দ দুলাল রক্ষিত সহ একদল পুলিশ অনুসন্ধান করেছেন বলে জানা গেছে।
ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগ, থানায় মামলা না নিতে প্রভাবশালী মহলের চাপ প্রয়োগসহ ভিকটিমের পরিবারকে হুমকি ধমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।
উখিয়া থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের তুতুর বিল গ্রামের প্রবাসী রুমু আলমের স্ত্রী কাজল আক্তার গত ২৮ জুন
অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন শিকার হন।
ওই দিন তিনি বিকেলে বাড়ির নিকটবর্তী দু’খালের মুখস্থ ব্রীজের নিচে বালু সংগ্রহ করতে গেলে বখাটের কবলে পড়ে। লিখিত অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয় যে, উক্ত গৃহবধূ বাড়িতে ব্যবহারের জন্য পার্শ্ববর্তী খালের ব্রিজের পাশে বালু আনতে গেলে একই এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকীর পুত্র লম্পট ও নারী লোভী মোস্তফার কু নজরে পড়ে। আগে থেকে উৎপাতে থাকা বখাটে যুবক তাকে একা পেয়ে গৃহবধূকে কু প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় মুখে কাপড় দিয়ে গৃহবধূর শরীরের স্পর্শকাতর ও আপত্তিকর স্থানে আঘাত সহ ধর্ষনের চেষ্টা চালায়।
পাশ্ববর্তী আবুল কাশের স্ত্রী সাবেকুন নাহার ও মৃত ঠান্ডা মিয়ার পুত্র শাহজাহান জানান, ভিকটিমের শৌর চিৎকার শুনে তার স্বামী ও এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে
চিহ্নিত দুর্বৃত্তরা তাদের মারধর করে পালিয়ে যায় ।
স্থানীয় গ্রামবাসী নির্যাতনের শিকার আহত গৃহবধূকে প্রথমে উখিয়া হাসপাতালে পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ভর্তি করে।
স্বামী রুমু আলম (৩২) অভিযোগ করে বলেন, ধর্ষণের চেষ্টাকারী লম্পট মুস্তাফা কে সাহসিকতার সহিত আটকে রাখার চেষ্টা করা হলে পরক্ষণে আমানত উল্লাহ সহ অন্যান্য সহযোগীরা এসে আমার স্ত্রীসহ আমারকে হামলা ও নির্যাতন চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, বিদেশে প্রবাসকালীন সময়ে বখাটে মোস্তফা আমার স্ত্রীকে প্রায় সময় উত্যক্ত করত। এমনকি যাতায়াতের পথে তার অশালীন কটূক্তির কারণে ঘর থেকে বের হতে পারত না। স্ত্রীর মুখ থেকে এ ধরনের খবর বারংবার পেয়ে আমি অবশেষে বিদেশ থেকে চলে আসি। অত্যন্ত দুঃখজনক এখনো বখাটেদের নির্যাতনের কবল থেকে আমার স্ত্রীকে বাঁচাতে পারছিনা।
এ ব্যাপারে স্বামী রুমু আলম বাদী হয়ে মোস্তফা ও আমানত উল্লাহ কে আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। এর জের ধরে তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক নন্দদুলাল রক্ষিত ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ করেছে বলে জানান।
উখিয়া থানার উপ-পরিদর্শক নন্দ দুলাল রক্ষিত বলেন, অনুসন্ধানে বিষয়টি পরষ্পর আত্নীয় স্বজনের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ধর্ষণের
আলামত পাওয়া যাচ্ছে না বলেও তিনি জানান।
তবে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক কাজল আকতারকে শারীরিক নির্যাতন করা হয় বলে ছাড়পত্রে উল্লেখ করেছে।
এ ব্যাপারে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মর্জিনা আক্তার মরজু বলেন, বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত
সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি তিনি জানিয়েছেন।