বুধবার ● ৮ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » অনলাইনে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ থাকায় রাউজানে বিপাকে গ্রাহকরা
অনলাইনে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ থাকায় রাউজানে বিপাকে গ্রাহকরা
অলক চৌধুরী নয়ন, রাউজান (উত্তর) প্রতিনিধি :: রাউজানে সঞ্চয়পত্র বিক্রয় ও পুনঃবিনিয়োগ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সহস্রাধিক গ্রাহক। আগে সঞ্চয় অধিদপ্তর থেকে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সঞ্চয় কুপন ইস্যু করে ডাকঘরে পাঠানো হতো। সেই কুপনের আলোকে সুদ ও আসল পরিশোধ সহ সব হতো ডাকঘরের মাধ্যমে। তবে গত বছরের এপ্রিল থেকে অনলাইন (অটোমেশন) ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালুর পর থেকে নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরিচালিত হয় সঞ্চয়পত্রের কার্যক্রম । অনলাইন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালুর পর থেকে রাউজান উপজেলার ডাকঘর গুলোতে বন্ধ আছে সব ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রয় এবং পুনঃবিনিয়োগ। যদিও রাউজান উপজেলা ডাকঘরে কম্পিউটার সহ যাবতীয় উপকরণ থাকলেও এখনও পর্যন্ত চালু হয়নি অনলাইনে (অটোমেশন) সঞ্চয়পত্র বিক্রয়, যার জন্য বিপাকে পড়েছেন গ্রাহকরা। এখন যারা সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে ইচ্ছুক তাদেরকে রাউজান উপজেলা ডাকঘর কর্তৃপক্ষ বলছেন চট্টগ্রাম জিপিওতে গিয়ে ক্রয় করার জন্য। একবার সঞ্চয়পত্র কিনতে চট্টগ্রাম জিপিওতে যেতে হয় কম করে হলেও তিনবার। প্রথমে ফাইল জমা করতে হয়, এর কয়দিন পর ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হয়, এর কিছুদিন পর মোবাইলে ম্যাসেজ আসলে সঞ্চয়পত্রের ডকুমেন্টস আনার জন্য যেতে হয়। এইভাবে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা অধিকাংশ গ্রাহকের পক্ষে শুধু কষ্টকর নয় করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারের ঘোষিত লকডাউনের মধ্যে একপ্রকার অসম্ভব। সঞ্চয়পত্রের শতকরা ৯০ ভাগ গ্রাহক বয়োবৃদ্ধ এবং মহিলা। ত্রৈমাসিক সঞ্চয়পত্র যে কেউ করতে পারলেও পারিবারিক সঞ্চয়পত্র করতে পারে শুধু মহিলারাই যার মধ্যে বেশিরভাগ বয়স্ক। বেশিরভাগ দেখা যায় চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর আবার কেউ প্রবাস থেকে দেশে আসার পর জমানো জীবনের শেষ সম্বল টুকু দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনে বাকী সময়টা আর্থিক ভাবে নিরাপদে কাটানোর চেষ্টা করেন । কিন্তু সেই আর্থিক নিরাপত্তার খাতটি এখন পড়েছে ঝুঁকির মধ্যে। বয়স্ক ব্যক্তি বা মহিলা কারো পক্ষেই সম্ভব নয় চট্টগ্রাম জিপিওতে গিয়ে সঞ্চয়পত্র কেনা। তাই এই অসহায় মানুষগুলো বাধ্য হয়ে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্টানে বিনিয়োগ করছেন, আর পড়ছেন ঝুঁকির মধ্যে। আমরা অতীততেও অনেক এনজিওকে দেখেছি গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যেতে । তাই এনজিও গুলো বেশি মুনাফা দেওয়ার পরও সাধারণ মানুষ নিরাপত্তার স্বার্থে রাউজান ডাকঘর থেকে সঞ্চয়পত্র কিনতেন। এখন সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা মানুষগুলো যার বেশিরভাগ বয়োবৃদ্ধ তাঁরা জীবনের শেষ সম্বলটুকু এনজিও বা বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্টানে বিনিয়োগ করে যদি ক্ষতির সম্মুখীন হয় তাহলে প্রাণঘাতি হওয়া ছাড়া আর বিকল্প কোন পথ এদের কাছে খোলা থাকবে না। অতীতেও আমরা দেখেছি শেয়ার মার্কেটে এবং কিছু হায় হায় কোম্পানির দ্বারা প্রতারিত হয়ে কিছু মানুষকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে। তাই রাউজানে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীদের দাবি দ্রুত রাউজান উপজেলার ডাকঘরে অনলাইনে সঞ্চয়পত্র বিক্রয় করার ব্যবস্থা যেন করা হয়।