শুক্রবার ● ১০ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » অপরাধ » চুরির অপরাধে গাছের সাথে বেঁধে দুই শিশুকে নির্যাতন
চুরির অপরাধে গাছের সাথে বেঁধে দুই শিশুকে নির্যাতন
এম এ কাদির চৌধুরী ফারহান, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা চা বাগানে মোবাইল চুরির অপবাদ তুলে আজ শুক্রবার সকাল ৭টায় মুন্না পাশি (১২) ও জগৎ নুনিয়াকে (১৩) কে বাগান ফ্যাক্টরির সামনের গাছের সাথে বেঁধে রেখে ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে কয়েকজন মিলে বেধড়ক পিঠিয়েছে। তাদের অভিবাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে বিকাল ৩টায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কমলগঞ্জ সদর হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী ও নির্যাতিতদের পরিবার অভিযোগ করে সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, শুক্রবার সকাল ৭টায় মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে চা বাগান হাসপাতালের কম্পাউন্ডার মামুনুর রশীদ শিশুদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি নারদ পাশিসহ কয়েকজন মিলে বাগান ঘরে নিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক প্রহার করে। পরে তাদের ২ জনকে কুরমা চা বাগান ফ্যাক্টরির সামনে গাছের সাথে সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৮ ঘন্টা খোলা আকাশের নিচে পিছনে হাত নিয়ে বেঁধে রাখে। মুন্নার মা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, ইউপি সদস্য দীপেন সাহা উপস্থিত থেকে তাদের পিটিয়েছেন। সাথে ছিল চা বাগান পঞ্চায়েতের সভাপতি নারদ পাশি, সাদেকসহ অনেকে। বিকাল ৩টায় ছেলেদের অভিবাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। তাদের অবস্থার অবনতি হলে বিকাল ৪টায় মুন্না ও জগৎকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
নির্যাতিত মুন্নার মা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে আরো জানান, এ ব্যাপারে তারা থানায় মামলা দায়ের করবেন। ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে ইসলামপুর ইউপি সদস্য দীপেন সাহা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, শিশুদের বেঁধে রাখা হয়েছিল। তবে নির্যাতন করা হয়নি। কয়েকটি চড়-থাপ্পড় দেয়া হয়েছে মাত্র। তিনি আরো বলেন, বাগান ম্যানেজারের কথায় তিনি প্রথমে ছাড়তে পারেননি। পরে বিকাল ৩টার পর অভিবাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
কুরমা চা বাগান ব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, মোবাইল চুরির অপরাধে দুই শিশুকে আটকে রাখা হয়ছিল। কোন নির্যাতন করা হয়নি। পরে অভিভাবকদের জিম্মায় মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আরিফুর রহমান সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, মোবাইল চুরির জন্য তাদের আটকানো হয়েছিল, তবে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে শুনতে পেরেছি। এ ব্যাপারে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেল) আশরাফুজ্জামানের সাথে কথা বললে তিনি এ ঘটনায় তড়িত ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান।
করোনা দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০ পরিবারের মাঝে অর্থ সহায়তা
কমলগঞ্জ :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে করোনা (কোভিড-১৯) দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ দু:স্থ ও অসহায় ৩ পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। শুক্রবার (১০জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় ভানুগাছ বাজারস্থ কমলগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গাবাড়ি প্রাঙ্গনে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ কমলগঞ্জ উপজেলা শাখার উদ্যোগে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ৩শ পরিবারের মাঝে নগদ ৪শ টাকা করে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়।
কমলগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শংকর লাল সাহার সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক প্রনীত রঞ্জন দেবনাথের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য রামভজন কৈরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র দাস, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন দেব, বীর মুক্তিযোদ্ধা নির্মল কুমার দাশ, প্রধান শিক্ষক বীরেন্দ্র চন্দ, প্রত্যুষ সিংহ প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য শিক্ষক কৃষ্ণ কুমার সিংহ, সাংবাদিক সুব্রত দেবরায় সঞ্জয়, বীর মুক্তিযোদ্ধা নিরঞ্জন দাশসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্টানে দুই করোনা জয়ী শমশেরনগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিজিত পাল ও উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা প্রধান শিক্ষক শিমুল চন্দ্র পালকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়।
রাস্তা পাকাকরণ, গাইড ওয়াল নির্মাণ ও দিঘীর ইজারা প্রদান বন্ধের দাবীতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন
কমলগঞ্জ :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের রনচাপ গ্রামে চলাচলের সড়ক পাকাকরণ, ইলিমউদ্দীন দিঘীর অবৈধ ইজারা প্রদান বন্ধ, দিঘীর পাড়ে গাইড ওয়াল নির্মাণের মাধ্যমে প্রাচীন কবরস্থান, প্রাইমারী স্কুল, মসজিদ, মক্তব রক্ষা করার দাবীতে স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্যোগে এক বিরাট মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রনচাপ জামে মসজিদ কমিটির মোতাওয়াল্লী এম এ মালেক খাঁন এর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় শুক্রবার (১০ জুলাই) বেলা ২টায় রনচাপ জামে মসজিদ সংলগ্ন রাস্তায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
রনচাপ মসজিদ কমিটি, ঈদগাহ কমিটি, কবরস্থান কমিটি, রনচাপ খাদিমুল কোরআন যুব সংঘসহ স্থানীয় এলাকাবাসীর আয়োজনে মো. ছওয়াব আলীর সভাপতিত্বে ও মামুনুর রশীদ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন মো. ইলিয়াছ মিয়া, সুলতান উদ্দীন আহমদ, ইসমাইল হোসেন সর্দার, মো. ছমরু মিয়া, জসীম উদ্দীন, ফখর উদ্দীন আহমদ, আরাফ উদ্দীন, সুমন আহমদ, কালাম আহমদ, জিবলু মিয়া, হাফিজ রজব প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, রনচাপ গ্রামে চলাচলের সড়ক দিয়ে কয়েকটি গ্রামের শত শত স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থী ছাড়া স্থানীয় এলাকাবাসী ও যানবাহন যাতায়াত করে। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক পাকাকরণ এলাকার দীর্ঘদিনের দাবি থাকলেও স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান এই রাস্তাটি পাকাকরণের আশ্বাস দিলেও আজোবধি রাস্তাটি পাকাকরণ হচ্ছে না। তারা বলেন, ইলিমউদ্দীন দিঘীর পাড় দিয়ে রাস্তাটি প্রবাহিত হওয়ায় দিঘীরপানির ঢেউয়ে রাস্তা ভেঙ্গে পড়ছে। এছাড়াও দিঘীর পশ্চিম পাড়ে মসজিদ, মক্তব ও কবরস্থান, পূর্ব পাশে ঈদগাহ এবং উত্তর ও দক্ষিণ পাশের দিঘীর পাড়ে শত বছরের পুরনো কবরস্থান পানি ঢেউয়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
বক্তারা বলেন, আইনে পাবলিক ইজমেন্ট এর জন্য ব্যবহৃত জলাশয় সমূহ ইজারা বা বন্দোবস্ত প্রদান করা যাবে না। অথচ বিগত সময়ে অবৈধভাবে ইজারা প্রদান করায় রাসায়নিক খাদ্য ও সারসহ যথেচ্ছ ব্যবহারে ওজু-গোসলেরও ব্যাঘাত ঘটেছে। দিঘীর সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণ ও সুষ্ট ব্যবহারের জন্য মসজিদ, ঈদগাহ ও কবরস্থান কমিটিকে সার্বিক দায়িত্ব প্রদানসহ মেয়াদ ভিত্তিক দিঘী ইজারা প্রদান বন্ধ এবং এলাকাবাসীর বৃহত্তর স্বার্থে দ্রুত রনচাপ রাস্তা পাকাকরণের দাবি জানান।