শনিবার ● ১১ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » সাংবাদিকতা সমাজসেবা ও সংগঠন প্রসঙ্গে
সাংবাদিকতা সমাজসেবা ও সংগঠন প্রসঙ্গে
মুহাম্মদ শওকাত হোসেন :: সাংবাদিকতা ও সমাজ সেবা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনার পর ‘সংগঠন’ প্রসঙ্গে কিছু বলা প্রয়োজন। সাংবাদিকতা বলেন আর সমাজসেবা বলেন , এ ধরনের মননশীল মহৎ কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজন সুসংগঠিত উদ্যোগ। এখানেই প্রয়োজন সংগঠন । সাংবাদিকদের সংগঠন রয়েছে সমাজসেবীদের জন্যও সংগঠন রয়েছে । তবে সাংবাদিকরা পেশাগত কারণে সংগঠন করে এবং নিজেদের বিনোদনের ও পেশাগত মান উন্নয়নের জন্য সুসংগঠিত থাকার লক্ষে সংগঠনভুক্ত হয়ে থাকে।
অন্যদিকে সমাজ সেবা যারা করতে চান তারা তাদের সহযোগীদের কে ঐক্যবদ্ধ করে সুসংগঠিতভাবে সমাজের উন্নয়ন ও কল্যাণের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য সংগঠনভুক্ত হন, অথবা নিজেরা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এসব সংগঠনগুলোর লক্ষ্য উদ্দেশ্য থাকে জনসেবা, সমাজ ও জনগণের কল্যাণ সাধন করা। সেক্ষেত্রে কোন বিশেষ পেশার অথবা বিশেষ এলাকার অথবা বিশেষ ধর্মের কিংবা বিশেষ গোষ্ঠীর কল্যাণের জন্য সমাজসেবী সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। বর্তমানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এ জাতীয় সমাজ সেবা মূলক সংগঠন কে রেজিস্ট্রেশন দেয়া হয় এবং তাদের জন্য সরকার কিছু বরাদ্দ দিয়ে তাদেরকে উৎসাহিত করে থাকে।এছাড়াও জয়েন্ট স্টক কম্পানি কিংবা সাব-রেজিষ্টার অফিস আর অফিস থেকেও কল্যাণ মূলক প্রতিষ্ঠান ও ট্রাস্ট রেজিস্ট্রেশন করা যায়।
“সংগঠন” হচ্ছে একটি লক্ষ্য আদর্শকে সামনে নিয়ে কিছু কর্মসূচি এবং কর্মপদ্ধতি ঘোষণা করে তার বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কিছু মানুষ একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্ল্যাটফর্ম। সংগঠন নানা ধরনের হতে পারে। মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে হতে পারে ,আবার অসৎ উদ্দেশ্যেও হতে পারে । সংগঠনের মাধ্যমে কেউ শিক্ষা, ধর্ম ,নীতি-নৈতিকতার আদর্শ প্রচার করে, সমাজ ও মানুষের জন্য কল্যাণের জন্য কাজ করে, আবার কোন কোন সংগঠন তাস খেলা ,জুয়া খেলা কিংবা এ জাতীয় খেলা কিংবা অন্য কোন অসৎ উদ্দেশ্যও করতে পারে।
সংগঠন নানা ধরনের হয়ে থাকে। ধর্মীয় সংগঠন, রাজনৈতিক সংগঠন ,সাংস্কৃতিক সংগঠন, অর্থনৈতিক সংগঠন, পেশাগত সংগঠন, সাংবাদিক সংগঠন, সমাজসেবী সংগঠন, ইত্যাদি। এছাড়া সংগঠনের পরিধিও বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কিছু কিছু সংগঠন আছে স্থানীয়ভাবে হয়ে থাকে, আবার কিছু কিছু সংগঠন জাতীয়ভাবে গঠিত হয়ে বিভিন্ন জেলা পর্যায়ে তাদের শাখা থাকে। আবার কিছু কিছু সংগঠন আন্তর্জাতিক সংগঠন, বিভিন্ন দেশ এসব সংগঠনের সভ্য হয় অথবা বিভিন্ন দেশের নির্ধারিত ব্যক্তিরা সংগঠনের সদস্য হয়ে থাকে।
সৃষ্টির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সকল ভালো কাজ সুসংগঠিতভাবে অর্থাৎ সংগঠনের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়েছে । নবী রাসূলগণ তাদের অনুসারীদেরকে সংগঠিত করে আল্লাহর বাণী প্রচার করেছেন, পৃথিবীতে শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করেছেন। বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে বহু ভালো কাজ সংঘটিত হয়েছে। পৃথিবীতে অনেক জাতিসত্তা সুসংগঠিত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করেছে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভিন্ন ভিন্ন আদর্শের জন্য মানুষ সংগঠিত হয়ে নিজেদের শক্তি সামর্থ্য এমনকি জীবন পর্যন্ত বিসর্জন দিয়েছে। সুসংগঠিত সংগঠনের মাধ্যমেই নির্ধারিত আদর্শের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করা হয়ে থাকে। পৃথিবীতে ভালো কিছু প্রতিষ্ঠা করতে , ভালো চিন্তার বাস্তবায়ন ঘটাতে হলে সংগঠনের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। কারণ সুসংগঠিত সংগঠন ছাড়া কোন মতাদর্শ কিম্বা চিন্তা চেতনার বাস্তবায়ন সম্ভব নয় । তাই মানব ও সমাজ জীবনে সংগঠনের গুরুত্ব অপরিসীম।
চলবে,,,,
লেখক : মুহাম্মদ শওকাত হোসেন, সম্পাদক, দৈনিক আজকের ভোলা।