বৃহস্পতিবার ● ১৬ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » পিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ১৭তম কাউন্সিল সম্পন্ন
পিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ১৭তম কাউন্সিল সম্পন্ন
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ১৭তম কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে। এতে সমর চাকমা সভাপতি ও নিকেল চাকমা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
গতকাল বুধবার (১৫ জুলাই ) সকাল ১০টায় দলীয় সংগীত বাজিয়ে কাউন্সিল উদ্বোধন করা হয়।
কাউন্সিলের অধিবেশন শুরুতেই গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে যারা জীবন দিয়েছেন সেসব শহীদের সম্মান জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
“মানুষের দুঃসহ যন্ত্রণায় ছাত্ররা কখনোই নীরব দর্শক হয়ে থাকতে পারে না, এসো পার্বত্য চট্টগ্রামে অসহায় বিপন্ন মানুষকে দানবীয় কবল থেকে মুক্ত করতে জনসেবার মহৎ আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলি” এই আহ্বানে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুমন্ত চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সমর চাকমার সঞ্চালনায় কাউন্সিল অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন (ইউপিডিএফের-মুল) খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা, পিসিপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি রিপন জ্যোতি চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নীতি শোভা চাকমা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তথ্য ও প্রচার সম্পাদক রোনাল চাকমা এবং চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক অমিত চাকমা প্রমুখ।
ইউপিডিএফের জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা বলেন, যে কোন আন্দোলন, লড়াই-সংগ্রাম এগিয়ে নেয়ার জন্য ছাত্র সমাজকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হয়। সুনির্দিষ্ট ও সঠিক আদর্শকে বুকে ধারণ করে কঠোর, কঠিন পরিস্থিতিতেও ছাত্র সমাজকে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি জাতীয় দুর্দিনেও ছাত্র সমাজকে সামনের কাতারে থাকতে হবে। একাধিক সংগঠন জাতির জন্য কাজ করছে দাবি করলেও আদতে তারা জাতির অস্তিত্ব রক্ষায় কোন ভূমিকা পালন করছে কিনা সেটা ছাত্র সমাজকে নির্ণয় করতে হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
রিপন জ্যোতি চাকমা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পানছড়ি, রামগড়, গুইমারা, দীঘিনালা ও বান্দরবানের বিভিন্ন স্থানে সেটলার, সেনা-বিজিবিসহ বিভিন্ন কোম্পানীর নামে ভূমি বেদখল করার পায়ঁতারা করা হচ্ছে। অবিলম্বে ভূমি বেদখল বন্ধ করতে হবে। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে আপোষহীনভাবে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অমিত চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ পাহাড় এবং সমতলে নিপীড়িত-নির্যাতিত জনগণের জন্য লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের লড়াইকে এগিয়ে নিতে ছাত্রসমাজকে সোচ্চার হতে হবে।
নীতি শোভা চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত নারী নির্যাতন, ধর্ষণ-খুন-গুম বেড়ে চলেছে। যার কোনটির সুষ্ঠু বিচার হচ্ছে না। ফলে অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। এগুলো প্রতিরোধ করার জন্য নারী-ছাত্র-যুব সমাজকে একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করতে হবে।
রোনাল চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে দিন দিন সামরিক শাসনের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বান্দরবানে সেনাবাহিনী কর্তৃক নিরীহ জুম চাষী শান্তিলতা তঞ্চঙ্গ্যাকে হত্যা ও শিশুপুত্র অর্জুন তঞ্চঙ্গ্যাকে গুলি করে আহত করার ঘটনা এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
সভাপতির বক্তব্য সুমন্ত চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ছাত্রসমাজকে দমিয়ে রাখার জন্য শাসকগোষ্ঠীর নীলনক্সাকে দৃঢ়তার সাথে প্রতিহত করতে হবে।
শেষে কাউন্সিলে উপস্থিত সকলের সর্বসম্মতিক্রমে সমর চাকমাকে সভাপতি, নিকেল চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও নরেশ ত্রিপুরাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট নতুন জেলা কমিটি গঠন করা হয়। ইউপিডিএফের খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা নতুন কমিটির সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান।