বৃহস্পতিবার ● ১৬ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » নওগাঁ » আত্রাইয়ে তিন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত
আত্রাইয়ে তিন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: নওগাঁর আত্রাইয়ে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। তিন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আত্রাই নদীর পানি কিছুটা কমলেও আজ বৃহস্পতিবার বিপদসীমার প্রায় ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে বাঁধ ভেঙে যাবার ফলে আত্রাই-সিংড়া এবং আত্রাই-বান্দাইখাড়া সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের লক্ষাধিক মানুষ।
গত কয়েকদিন থেকে আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া ও মধুগুড়নই গ্রামে বেড়ি বাঁধ ভেঙে যায়। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার আত্রাই- বান্দাইখাড়া পাকা সড়কের জাতআমরুল নামক স্থানে এবং আত্রাই- সিংড়া পাকা সড়কের বৈঠাখালী ও পাঁচুপুর নামক স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে অসংখ্য গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। বাঁধ ভাঙার ফলে কালিকাপুর ইউনিয়নের গন্ডগোহালী, ধনেশ^র, বাজেধনেশ^র, গোয়ালবাড়িয়া, আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের সিংসাড়া, দীঘা, দমদমা, ব্রজপুর, পাঁচুপুর ইউনিয়নের মধুগুড়নই, পাঁচুপুর, ব৭াকিওলমা, কাঁন্দওলমা, বিশা ইউনিয়নের বৈঠাখালী, পারমোহনঘোষ, বিশা, থলওলমাসহ অর্ধশতাধিক গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী অনেকে পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচু বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলার জগদাস গ্রামের রহিমা খাতুন বলেন, আমাদের গ্রামসহ পাশ^বর্তী চকবিষ্টুপরের প্রায় অর্ধশত ঘরবাড়িতে পানি ডুকেছে। আমরা চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। এখন পর্যন্ত সরকারী কোন ত্রাণ আমরা পাইনি। ত্রাণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পিআইওকে বলেছি।
উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) নভেন্দু নারায়ন চৌধুরী বলেন, পানিবন্দী প্রায় ১ হাজার ৮০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ হিসেবে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। গতকালও পানিবন্দী মানুষের মাঝে ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার চিড়া, মুড়ি, গুড়, খাবার স্যালাইন বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে আত্রাই-সিংড়া এবং আত্রাই-বান্দাইখাড়া সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই এলাকার লোকজন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে এসব রুটে চলাচলকারী সিএনজি, অটোচার্জার ও রিক্সা ভ্যান চলকরা চরম বিপাকে পড়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে এম কাউছার হোসেন বলেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টির পানি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে উপজেলার কয়েক স্থানের বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় ২ হাজার ৫৭ হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষক অনিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সানাউল ইসলাম জানান, আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার প্রায় ৭৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলা প্রশাষনের পক্ষ থেকে পানিবন্দী পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে এবং এ কর্মচূচী অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো বলেন যেসব স্থানের সড়কগুলো ঝুঁকিপূর্ণ তা রক্ষায় জোর চেষ্টা চলছে।