বৃহস্পতিবার ● ১৬ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » পাবনা » সরকারি গাছ কাটায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সরকারি গাছ কাটায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
মো. নূরুল ইসলাম, পাবনা জেলা প্রতিনিধি :: পাবনার চাটমোহরে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান ও কলেজ অধ্যক্ষসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বিপুল কুমার জোয়ার্দ্দার বাদী হয়ে এ থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও হরিপুর দূর্গাদাস স্কুল এন্ড কলেজের গর্ভনিং বডির সভাপতি এবং হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মকবুল হোসেন এবং অধ্যক্ষ সরদার আলী হায়দারকে আসামী করা হয়েছে। অন্য আসামীরা হলেন, কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য- আতিকুল ইসলাম, শাহজালাল উদ্দিন, মোশারফ হোসেন, আজাদ হোসেন, প্রণবী রানী, সিরাজুল ইসলাম ও গোলজার হোসেন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হরিপুর দূর্গাদাস স্কুল এন্ড কলেজ এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একই জায়গায় অবস্থিত এবং একই নিয়মে পরিচালিত হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দীর্ঘ পুরানো ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় অতিসম্প্রতি সেখানে একটি নতুন ভবনের অনুমোদন হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে এবং দরপত্র ছাড়াই শুধুমাত্র ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশনের মাধ্যমে ১৪টি গাছ স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সেই মোতাবেক সোমবার প্রতিষ্ঠানের ভেতরে এবং প্রাচীরের নিকটবর্তী সরকারি রাস্তার পাশ থেকে মেহগণি, আম, কাঁঠাল, দেবদারুসহ মোট ৬টি গাছ কাটা হয়। স্থানীয়রা এর প্রতিবাদ জানালেও কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো কর্ণপাত না করায় বিষয়টি ইউএনও সরকার মোহাম্মদ রায়হানকে জানালে তিনি গাছ কাটা বন্ধ করেন। পরে এ ঘটনায় বুধবার থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং- ০৯। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ রায়হান বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে শুধুমাত্র ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশনের মাধ্যমে সরকারি গাছ কাটা হয়েছে। তদন্ত্রে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় থানায় এজাহার দেয়া হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যেহেতু ইউপি চেয়ারম্যান তাই তার নামও রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চাটমোহর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এজাহার দায়েরে পর মামলা নেয়া হয়েছে। আসামীরা পলাতক রয়েছে।
চাটমোহর খাদ্য গুদামে ধান সংগ্রহ ধীরগতি
পাবনা :: সরকার কর্তৃক কৃষকের নিকট থেকে খাদ্য গুদামে ধান সংগ্রহে পাবনার চাটমোহরে ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। উদ্বোধনের পয়তাল্লিশ দিন পার হলেও ইতিমধ্যে মাত্র ১শ ৫৭ টন ধান সংগ্রহ হয়েছে যা লক্ষ মাত্রার দশ ভাগের এক ভাগেরও কম।
চলনবিল অধ্যুষিত চাটমোহরের হান্ডিয়াল, নিমাইচড়া, ছাইকোলা ও বিলচলন ইউনিয়নে আগাম বৃষ্টির পানিতে অনেক ধান তলিয়ে যায়। এ এলাকার অনেক কৃষক আধাপাকা ধান কেটে ঘরে তোলেন। এসময় শ্রমিক সংকট প্রকট আকার ধারণ করে এবং শ্রমিকের পারিশ্রমিকও বেড়ে যায়। ফের আগাম বন্যায়ও কৃষকের ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে যায়। দুই দফা প্রাকৃতিক বিপর্যয় কাটাতে এ এলাকার অনেক কৃষক ফরিয়াদের নিকট ধান বিক্রি করতে বাধ্য হন। অনেকে আরো বেশি দামের আশায় ধান বিক্রি না করে গুদামজাত করে রেখেছেন। অন্য ইউনিয়নগুলোর ধান না ডুবলেও ধানের বর্তমান বাজার মূল্য এবং সরকার নির্ধারিত খাদ্য বিভাগের ক্রয় মূল্যে খুব একটা তফাত না থাকায় খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহে আগ্রহ নেই কৃষকের। হাট বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে চাটমোহরে প্রতিমন ধান ৯শ ৫০ টাকা থেকে ৯শ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চাটমোহরে কর্মরত খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, কৃষকের নিকট থেকে স্বচ্ছ ভাবে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যে গত ২০ মে উন্মুক্ত লটারী করা হয়। এক হাজার তিনশ পনেরো টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যে চাটমোহর পৌরসভাসহ ১১ টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৩ শত ১৫ জন কৃষকের নাম ওঠে লটারীতে। ২৬ টাকা কেজি দরে পহেলা জুন থেকে শুরু হয় ধান সংগ্রহ। এবছর ধানের বাজার মূল্য বেশ ভাল থাকায় কৃষক খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
ধান চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি ও চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ রায়হান জানান, ৩০ আগষ্ট পর্যন্ত ধান সংগ্রহের সময়সীমা রয়েছে। ধান সংগ্রহে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।