শুক্রবার ● ২৪ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » অপরাধ » নিখোঁজ নববধূ কিশোরগঞ্জ থেকে উদ্ধার : অপহরণকারী গ্রেফতার
নিখোঁজ নববধূ কিশোরগঞ্জ থেকে উদ্ধার : অপহরণকারী গ্রেফতার
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে বাবার বাসা থেকে নববধূ কোহিনুর আক্তার আশা (২১) কে নিখোঁজের ১৩দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার শতরদরিয়া গ্রামের আব্দুর রহিমে পুত্র শাওন মিয়ার বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় অপহরণকারী শাওন মিয়া (২১)’কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে কোহিনুর আক্তার আশা’কে বিশ্বনাথ থেকে অপহরণ করে কিশোরগঞ্জ নিয়ে যায় শাওন। এরপর সেখানে শাওন তার নিজ বাড়িতে কোহিনুরকে জিম্মি করে রাখে।
ইতিপূর্বে একই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার দেবীদ্বার থানার গজারিয়া গ্রামের রাকিবুল ইসলামের স্ত্রী ও ছাতক উপজেলা সমবায় অফিসের এমএলএস রুজিনা আক্তার (৩০) এবং তার ভাই সিলেট সদর সমবায় অফিসের এমএলএস রাজিব সরকার (২৫)’কে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।
জানা যায়, ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার পানিশ্বর গ্রামের রমজান মিয়া দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বনাথ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কর্মরত। সেই সুবাদে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে তিনি উপজেলা সদরের জানাইয়া রোডস্থ তেরাবুন ভিলায় ভাড়াটিয়ে হিসেবে বসবাস করে আসছেন। প্রায় ৫বছর পূর্বে আত্মীয় উমান প্রবাসী আলমগীর হোসেনের সঙ্গে তার বড় মেয়ে কোহিনুর আক্তার আশার বিয়ের ঠিক করা (এনগেজমেন্ট) হয়। গত ৫ জুন ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার নিজ বাড়িতে কোহিনুর আক্তার আশা ও আলমগীর হোসেনের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর স্বামী আলমগীরকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো ১৯ জুন বিশ্বনাথে বাবার বাসায় আসেন কোহিনুর। এরপর গত ৯ জুলাই সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ করে বাসা থেকে নিখোঁজ হন। তখন বাসার আশপাশ ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ী ছাড়াও বিভিন্ন স্থানের খোঁজাখুজি করে মেয়ে কোহিনুরের কোন সন্ধ্যান না পাওয়ায় পরদিন ১০ জুলাই বিশ্বনাথ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন রমজান আলী। এরপর নিখোঁজ কোহিনুরকে উদ্ধারের নামে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করার অফিযোগে গত সোমবার (২০ জুলাই) রুজিনা ও রাজিবকে অভিযুক্ত করে নিখোঁজ কোহিনুর আক্তার আশা’র পিতা বিশ্বনাথ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী রমজান মিয়া বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-১৫।
মামলা দায়েরের পর নিখোঁজ কোহিনুর আক্তার আশা’র অবস্থান প্রায় নিশ্চিত হয় পুলিশ। এরপর কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় বিশ্বনাথ থানার এসআই ফজলুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে অভিযান চালিয়ে করিমগঞ্জের শতরদরিয়া গ্রামের আব্দুর রহিমে পুত্র শাওন মিয়ার বাড়িতে কোহিনুর আক্তার আশা’কে উদ্ধার এবং অপহরণের অভিযোগে শাওন’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
ভিকটিম উদ্ধার ও অপহরণকারী শাওনকে গ্রেফতারের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার এসআই ফজলুল হক বলেন, গ্রেফতারকৃত শাওনকে আজ শুক্রবার (২৪ জুলাই) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং ভিকটিম গৃহবধূকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি’তে ভর্তি করা হয়েছে।
বন্যায় বিপর্যস্ত জনজীবন
বিশ্বনাথ :: দু’দফা বন্যার রেশ কেটে উঠার আগেই ফের বন্যার মুখে পড়েছে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা। পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে তৃতীয় দফায় প্লাবিত হয়েছে উপজেলার নিম্নঞ্চল। ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেকের কাঁচাঘর, রাস্তা-ঘাট, বীজতলা, ফসলি জমি, সবজি ক্ষেত, ভেসে গেছে মৎস্য খামার ও পুকুরের মাছ। এর মধ্যে ফের পানি বৃদ্ধি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে জনমনে। গবাদিপশু নিয়েও বেকায় রয়েছেন কৃষকরা। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন পানিবন্ধি প্রায় ১৫ হাজার মানুষ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বন্যায় সব’চে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের বাসিন্দারা। সুরমা নদীর পার্শ্ববর্তী হওয়ায় বার বার ব্যনার পানি সহজেই প্রবেশ করে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে। সম্প্রতি পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ে ঘর ছেড়েছেন অনেকেই। প্লাবিত হয়েছে রাস্তা-ঘাট ও দোকানপাট। ভেসে গেছে মাছের ঘের, বীজতলা ও সবজি ক্ষেত। নতুন করে পানিবন্ধি হয়েছেন এ ইউনিয়নের প্রায় ৮ হাজারের অধিক মানুষ। একই অবস্থা পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন খাজাঞ্চীতেও। এ ইউনিয়নে পানিবন্ধি রয়েছেন প্রায় ৫ হাজারের অধিক মানুষ। ঝুঁকির মুখে পড়েছে ইউনিয়ন দিয়ে যাওয়া রেললাইন ‘ছাতক-সিলেট’ রেলপথ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরকারি-বেসরকারি রাস্তা-ঘাট ও ব্রীজ-কালর্ভাট। এছাড়াও উপজেলার অলংকারি ও দশঘর ইউনিয়নেও নতুন করে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এতে পানিবন্ধি হয়ে পড়েছেন অলংকারীর দেড় শতাধিক পরিবার ও দশঘর ইউনিয়নের প্রায় ২০টি পরিবার।
খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তালুকদার মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, তৃতীয় দফা বন্যায় নতুন করে আমার ইউনিয়নে আরও অনেক পরিবার পানিবন্ধি হয়ে পড়েছেন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অবস্থার আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. কামরুজ্জামান বলেন, সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে। পানিবন্ধিদের মধ্যে শুকনো খাবারসহ বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
২৭ হাজার ভারতীয় বিড়িসহ র্যাবের খাঁচায় বন্দী
বিশ্বনাথ :: ভারতীয় আমদানি নিষিদ্ধ সাড়ে ২৭ হাজার পিস ভারতীয় পাতার বিড়িসহ সিলেটের বিশ্বনাথ থেকে একজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বিশ্বনাথ উপজেলার পুরানবাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
বুধবার (২২ জুলাই) বিকেলে বিড়ি বিক্রির ৮ হাজার টাকাও জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃত মো. জালাল উদ্দিন (২৫) সিলেটের বিশ্বনাথের মজলিশবুকশাই গ্রামের মোসাইদ আলীর ছেলে।
র্যাব জানায়, উল্লিখিত ঘটনায় জব্দকৃত আলামতসহ র্যাব বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করে আলামত ও আসামীকে বিশ্বনাথ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
মানসিক ভারসাম্যহীন গৃহবধূ নিখোঁজ
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ থেকে ফাতিমা খানম (৪০) নামের মানসিক ভারসাম্যহীন এক গৃহবধূ নিখোঁজ হয়েছেন। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের জাহারগাঁও গ্রামের আপ্তাব আলীর স্ত্রী। বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে নিখোঁজ হন ফাতেমা। ধারণা করা হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের অজান্তে মানসিক ভারসাম্যহীন গৃহবধূ ফাতেমা কোথাও চলে গেছেন।
তিনি নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার পরিবারের সদস্যরা নিজেদের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি ছাড়াও আশাপাশ এলাকায় সন্ধান করে তাকে না পেয়ে বিশ্বনাথ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। ডায়েরী নং- ৮৮৪, তাং- ২৪/০৭/২০২০ইং।
যদি কোন হৃদয়বান ব্যক্তি ফাতেমার সন্ধান পেয়ে থাকেন তাহলে বিশ্বনাথ থানা অথবা তার স্বামী আপ্তাব আলীর সঙ্গে যোগাযোগ (০১৭১৭-০২৫৩৯০, ০১৭১৪-৯৫৬৪৩৫) করতে পরিবারের পক্ষ হতে আহবান করা হয়েছে।