সোমবার ● ২৭ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » মুসলিম মেয়ের প্রেমে ফেঁসে হিন্দু প্রেমিক কারাগারে
মুসলিম মেয়ের প্রেমে ফেঁসে হিন্দু প্রেমিক কারাগারে
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: বাগেরহাটের শরণখোলার মুসলিম মেয়ে (১৬) মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এক হিন্দু ছেলের সঙ্গে। গত ৮ জুলাই প্রেমের টানে মেয়েটি ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায় মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের ধনখালী গ্রামের সেই হিন্দু প্রেমিক অনজিৎ রায়ের (১৯) বাড়িতে। সেখানে হিন্দু রীতি অনুযায়ী তাদের বিয়েও হয়। ঘটনা টের পেয়ে মেয়ের পরিবার ছেলে-মেয়েকে গত বৃহস্পতিবার রাতে কৌশলে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে ছেলের নামে দায়ের করা হয় অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা। সেই হিন্দু যুবক এখন জেলহাজতে।
পুলিশ জানিয়েছে, শরণখোলার ধানসাগর ইউনিয়নের পূর্ব রাজাপুর গ্রামের জনৈক ব্যক্তি তার মেয়েকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মোংলা উপজেলার ধনখালী গ্রামের মনোজিৎ রায়ের ছেলে অনজিৎ রায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ছেলেকে গ্রেপ্তার করে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ছেলের পরিবারের অভিযোগ, ওই মেয়ে নিজেই জেনেশুনে অনজিতের সঙ্গে প্রেম করেছে। একবছর আগে আরো একবার সে পালিয়ে ছেলের বাড়িতে উঠেছিলো। তখন তারা স্থানীয়দের মাধ্যমে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় মেয়েকে। দ্বিতীয়বার আবার চলে এলে মেয়ের ইচ্ছাতেই হিন্দু রীতি অনুযায়ী শাখা-সিঁদুর পরিয়ে তাদের বিয়ে হয়। এঘটনা মেয়ের পরিবার জানতে পেরে সম্পর্ক মেনে নেওয়ার কথা বলে কৌশলে ছেলে-মেয়েকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে অনজিৎকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে তার বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
মেয়ের বাবা জানান, তার মেয়ে উপজেলার নলবুনিয়া আপগ্রেট স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। তার অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে নিয়ে যায় ওই হিন্দু ছেলেটি। তাদের মধ্যে বিয়ের বিষয়টি সঠিক না। ছেলেকে কোনো মারধরও করা হয়নি।
পূর্ব রাজাপুর ৮নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) মো. ইসমাইল খলিফা বলেন, পরিবারের আশ্বাসে গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই মেয়ে হিন্দু ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে এসে ওঠে। পরেরদিন শুক্রবার সকালে মেয়ের বাবা আমাকে খবর দিয়ে তাদের বাড়িতে নেয়। এসময় মেয়ে জানায়, ওই হিন্দু ছেলের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক। ছেলে মুসলমান হয়ে তাকে বিয়ে করতে রাজি। ওকে যেনো কেউ মারধর না করে। এসময় মেয়ের এক চাচাতো ভাই ছেলেটিকে চড়থাপ্পড় মারলে আমি নিষেধ করি। পরে ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার বাড়ির লোকজনকে মোবাইল ফোনে বলার পরও তারা না আসায় থানায় হস্তান্তর করা হয়।]
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ডালিম হোসেন মাঝি বলেন, একবছর আগেও ওই মেয়ে ছেলের বাড়ি পালিয়ে গিয়েছিলো। তখন উভয় এলাকার গণ্যমান্যদের মাধ্যমে মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এবারও সেই একই কান্ড ঘটিয়েছে। শুনেছি সেখানে হিন্দুমতে শাখা-সিঁদুর পরে তাদের বিয়েও হয়েছে।
শরণখোলা থানার ওসি এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ বলেন, সম্পর্ক মেনে নেওয়ার কথা বলে কৌশলে ছেলে-মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসে মেয়ের পরিবার। পরে ছেলেকে থানায় হাজির করে মেয়ের বাবা বাদী হয়ে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। শনিবার সকালে ছেলেকে জেলহাজতে এবং মেয়েকে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জবানবন্দী শেষে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
করোনার ক্রান্তিকালে বাগেরহাটে এ্যান্টিসেপ্টিকের চরম সংকট
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের ৯ উপজেলার ফার্মেসী (ওষুধের দোকান) গুলোতে তরল এ্যান্টিসেপ্টিক মিলছে না। কসমেটিক্স অথবা মুদি দোকানে দু’একটি তরল এ্যান্টিসেপ্টিক মিললেও তা চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। ঘরবাড়ির পরিবেশ জীবানুমুক্ত ও পরিস্কার রাখতে স্যাভলন বা ডেটল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। দেশে করোনার ক্রান্তিকালে এই সংকট নিরসনের জন্য এলাকাবাসী সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক গৃহবধূ জানান, অনেক কষ্টে তিনি এসিআই কোম্পানীর ১১২ এমএল’র এক বোতল স্যাভলন ১০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন। কিন্তু বোতলের গায়ের মূল্য লেখা ৪৪ টাকা। কারোনা আসার আগে ওই দামেই তিনি কিনতেন। এখন দ্বিগুনেরও বেশি দামে কিনতে বেগ পেতে হচ্ছে। এর প্রতিকার হওয়া দরকার বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মোরেলগঞ্জের বাজারের ফার্মেসির মালিকরা জানান, প্রায় তিন মাস ধরে এ্যালোপ্যাথি ওষুধের দোকানগুলোতে স্যাভলন, ডেটলের সংকট দেখা দিয়েছে। কোম্পানী হতে সরবরাহ নেই। খুলনা হতে যারা আনছেন তাদের স্যাভলনের বোতলের গায়ের দামের চেয়ে মাত্রাতিরিক্ত দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। গ্রাম পর্যায়ের সাধারণ ক্রেতারা এই মাত্রাতিরিক্ত দামে স্যাভলন কিনতে চায় না। ফলে প্রায়শ ক্রেতা-বিক্রেতার ঝগড়া দেখা যায়।
বাগেরহাটের ৯ উপজেলারও মোরেলগঞ্জ সহ অন্যান্য এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংকটের সুযোগে বাজারের কনফেকশনারী ও কসমেটিকসের কিছু দোকানে ওই স্যাভলন মাত্রাতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। কোন কোন দোকানে এসিআই কোম্পানীর স্যাভলনের মতো দেখতে ভিন্ন কোম্পানীর স্যাভলনও রয়েছে বলে তারা জানান। তবে তরল এই জীবানুনাশক পাওয়া না গেলেও, এসিআই’র স্যাভলন এবং রেকিট বেনকিজার কনজ্যুমার কেয়ারের ডেটল সাবান সঠিক দামে পাওয়া যাচ্ছে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুফতি কামাল হোসেন জানান, করোনা ভাইরাসসহ যে কোন জীবানুনাশকে আসল স্যাভলন বা ডেটল খুবই কার্যকর। এক চামচ স্যাভলন বা ডেটলের সাথে ১০ভাগ পানি মিশিয়ে ঘরের মেঝে ধোয়ামোছা, কাপড় পরিস্কারসহ বাহ্যিক পরিচ্ছন্নতার কাজে ব্যবহার করা হয়। এটা পর্যাপ্ত পরিমাণ সুলভে বাজারজাত থাকা দরকার।
এসিআই কোম্পানী কিংবা রেকিট বেনকিজার কনজ্যুমার কেয়ারের কোন প্রতিনিধিকে পাওয়া যায়নি এই বিষয়ে মতামতের জন্য ।
বাগেরহাটে মাস্ক ব্যবহার না করায় ভ্রাম্যমান আদালতের অর্থদন্ড
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের চিতলমারীতে সরকারি নির্দেশ অমান্য ও মাস্ক ব্যবহার না করায় ভ্রাম্যমান আদালত ১৫ জনকে অর্থদন্ড দিয়েছেন। সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জান্নাতুল আফরোজ স্বর্ণা এ অর্থদন্ডাদেশ দেন। রবিবার দুপুরে উপজেলার শহীদ মিনার এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়।
চিতলমারী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জান্নাতুল আফরোজ স্বর্ণা জানান, সরকারি নির্দেশ অমান্য ও মাস্ক ব্যবহার না করায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ১৫ জনকে ৪ হাজার ২৫০ টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। সেই সাথে তাদেরকে বাড়ির বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সুন্দরবনের দুটি হরিনের মাথাসহ ৩০ কেজি মাংস উদ্ধার
বাগেরহাট :: পূর্ব সুন্দরবনের চাদপাইরেঞ্জের করমজল পর্যটন স্পট ও বন্যপ্রানী প্রজনন কেন্দ্র সংলগ্ন চাড়াখালী খাল দিয়ে পাচরকালে দুটি হরিনের মাথা ত্রিশ কেজি মাংস ও দুটি নৌকা জব্দ করেছে বনবিভাগ।
পূর্ব সুন্দরব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: বেলায়েত হোসেন মুঠোফোনে জানান,রবিবার ভোরে বনের চাড়াখালী খাল দিয়ে দুটি নৌকা যাচ্ছিল। এমন সময় বন প্রহরীরা নৌকা দুটিকে তল্লাশির জন্য থামাতে বল্লে নৌকায় থাকা সংর্ঘবদ্ধ পাচারকারীরা বনের মধ্যে পালিয়ে যায়। পরে বন কর্মীরা নৌকা তল্লাশি করে ৩০ কেজি হরিনের মাংস, আটটি পা,দুটি মাথা ও দুটি নৌকা এবং হরিন শ্বীকারের সরঞ্জাম জব্দ করে । তবে পাচারের সাথে জড়ি দের চিনতে পারলেও পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করতে পারেনি তারা। বেলায়েত হোসেন আরো জানান,জব্দ কৃত হরিনের মাংস খুলনায় আদালতে প্রেরন করা হবে। বন আইনে মামলা দায়ের শেষে আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক বিনষ্ট করা হবে জব্দকৃত মাংস গুলো। এর আগে ৪ জুলাই বন সংলগ্ন চিলাবাজার এলাকা থেকে ১৫ কেজি হরিনের মাংস,একটি মাথা ও একটি নৌকা জব্দ করে বন বিভাগ।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় জানান, বনবিভাগের পাশাপাশি জেলা পুলিশও সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী রক্ষায় অভিযান অব্যহত রেখেছে। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে চোরা শিকারীরা যাতে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সে জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে।