শনিবার ● ৮ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাইবান্ধার বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাইবান্ধার বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা :: উত্তরাঞ্চলের দীর্ঘ মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হলেও দুঃখ কষ্ট দীর্ঘ মেয়াদী হওয়ার আংশকায় ভেঙ্গে পড়েছে বানভাসী মানুষের মন। পানি কমায় কিছু মানুষ বাড়িতে ফিরতে শুরু করলেও অনেক পরিবারের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় এখনও বাঁধের উপরেই থাকতে হচ্ছে তাদেরকে।
আজ শনিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এইচ.ই. মিস্টার ইরাল মিল্লার গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদী তীরবর্তী সীপ্লেন যোগে অবতরণ করেন এবং প্রত্যন্ত চরের উজালেরডাঙ্গা গ্রামের বন্যা কবলিত পরিবারের সাথে কথা বলেন।
এসময় রাষ্ট্রদূত মিলার বন্যা কালীন সময়ে চর এলাকার অসহায় দরিদ্র নারীদের বিভিন্ন অসুবিধার কথা শোনেন এবং এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে আরও কি কি ধরনের উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহন করা প্রয়োজন তা জানতে চান। মাঠ পরিদর্শনকালে বেসরকারি সংগঠন এসকেএস ফাউন্ডেশন এবং কেয়ার বাংলাদেশ কর্তৃক বাস্তবায়িত সৌহাদ্য কর্মসূচির আওতায় ৩টি উচুঁকরণ ভিটা ঘুরে দেখেন এবং তিনি ২০ জন উপকারভোগীর হাতে সহায়তা তুলে দিয়ে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাহাত গাওহারী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু রায়হান দোলন, ইউএসএইডের পরিচালক মিস্টার থোমাস পপি, কেয়ার বাংলাদেশের চীফ অব পার্টি ওয়ালটার মাওসা, এসকেএস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী প্রধান রাসেল আহম্মেদ লিটন এবং অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা।
কেয়ার বাংলাদেশ গাইবান্ধা অফিস সুত্রে জানা গেছে- বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং জাতি সংঘের চলমান সহযোগিতার অংশ হিসেবে উত্তরবঙ্গের বন্যাকবলিত অঞ্চলে ঘর-বাড়ি বা জীবিকা হারানো নাজুক পরিবার গুলোকে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) এর মাধ্যমে জরুরী মানবিক সহায়তা প্রদানের ঘোষনা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এরই ধারাবাহিকতায়, গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের সৌহার্দ্য-৩ কর্মসূচি বাস্তবায়নাধীন ৭টি গ্রামের ৫৮০টি পরিবার যারা সবচেয়ে বেশি বিপদাপন্ন, ঘর-বাড়িহারা, ক্ষুধার্ত, আশ্রয়হীন এবং অন্য কোন সহায়তা পায়নি, তাদেরকে চিহ্নিত করে পর্যায়ক্রমে সহায়তা প্রদান করা হবে।
মানবিক সহায়তা হিসেবে প্রত্যেকটি পরিবারকে নগদ ৪,৫০০/= টাকা এবং নন ফুড আইটেম- লাইফবয় সাবান-১টি, হুইল সাবান-১টি, ডিটারজেন্ট পাউডার- ১ কেজি, স্যানিটারি ন্যাপকিন- ২ প্যাকেট, প্লাস্টিক মগ- ১টি, প্লাস্টিক বালতি (২০ লিটার)- ১টি এবং মাস্ক ২টি প্রদান করা হবে জানানো হয়েছে।
পানিতে ডুবে গাইবান্ধায় শিশুসহ ৪ জনের মৃত্যু
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা জেলার পৃথক স্থানে নদী-পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (৭ আগস্ট) দুপুরে জেলার পলশাবাড়ী, সাদুল্লাপুর ও সদর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলো- সিয়াম মিয়া (২১), সাজিব হোসেন (২১) ইশামনি খাতুন (৪) ও আবিদ মিয়া (৫)।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার দুপুরের দিকে বগুড়া উপশহরের বাসিন্দা সিয়াম মিয়া (২১) ও তার বন্ধু সাজিব হোসেন (২১) কে নিয়ে পলাশবাড়ীর চেরেঙ্গা বাঁধ এলাকার করতোয়া নদীতে গোসল করছিলেন। এরপর পানিতে নিখোঁজ হয় তারা। পরে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে সিয়াম ও সাজিবেরমরদেহনদী থেকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। তারা গত ৩ দিন আগে পলাশবাড়ী উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নে জগৎনাথপুর গ্রামস্থ নানা জয়নাল আবেদীন দুদুর বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন।
এদিকে, সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের বড় জামালপুর গ্রামের ইলিয়াস আলী তার মেয়ে ইশামনি খাতুন (৪) কে নিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করছিলেন। ইশামনিকে গোসল করিয়ে দেওয়ার পর পুকুর পারে দাঁড়িয়ে রেখে ইলিয়াস আলী নিজেও গোসল করতে থাকেন। এরপর ইশামনিকে না দেখে খোঁজাখুঁজি করা হয়। এক পর্যায়ে ওই পুকুরে তার ভাসমান মরদেহ দেখা যায়। পরে স্থানীয়রা এসে ইশামনির মরদেহ উদ্ধার করেন।
অপরদিকে শুক্রবার একই সময় সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের জোহা মিয়ার ছেলে আবিদ মিয়া (৫) বাড়ির উঠানে খেলছিল। কিছুক্ষণ পর আবিদকে না দেখতে পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে স্বজনরা। এরপর বাড়ির পাশের একটি পুকুরে আবিদের ভাসমান মরদেহ দেখা গেলে তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করা হয়। স্ব স্ব থানার পুলিশ অফিসাররা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গাইবান্ধায় সেলাই মেশিন ও টাকা বিতরণ
গাইবান্ধা :: বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আজ শনিবার গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে সংযুক্ত হয়।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় শাখার উপ-পরিচালক মোছা: রোখছানা বেগমের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো: ফরহাদ আব্দুল্যাহ হারুন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ সারোয়ার কবির, পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির মিলন, জেলা মহিলা বিষয় কর্মকর্তা মোছা: নার্গিস আক্তার, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোছা: মাহামুদা বেগম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জেলায় ৪২টি সেলাই মেশিন ও ২২ জন দুঃস্থ ও অসহায় নারীদের মধ্যে দুই হাজার টাকা করে মোট ৪৪ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।