রবিবার ● ৯ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » অপরাধ » ভন্ড কবিরাজের কান্ড
ভন্ড কবিরাজের কান্ড
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় এক ভন্ড কবিরাজের কান্ডে এলাকাজুড়ে চলছে তোলপাড়। ছেলেকে সুস্থ্য করতে তিন বৎসর প্রবাসির স্ত্রীকে ধর্ষন করে ভিডিও ধারণ করে তার নিকট থেকে হাতিয়ে নেয়া ২লাখ টাকা স্বার্ণালঙ্কার ও ৩টি ছাগল ফেরৎ চাইলে কবিরাজ ভিডিও ফাঁস করার হুমকি দিলে প্রবাসির স্ত্রী জেলার হরিনাকুন্ডু থানায় অভিযোগ করেন। এঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে এলাকা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ড থানার কালা পাহাড়িয়া গ্রামের নূরুল ইসলাম (প্রবাসী) এর স্ত্রী চায়না খাতুন (৪০) তার ছোট ছেলে আকাশ (১৮) মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে কবিরাজের দ্বারস্থ হন। এমতাবস্থায় চায়না খাতুনকে তাহার ছেলের জ্বীনের আছর আছে বলে শৈলকুপার দেবীনগর মাইলমারী গ্রামের আমজাদ মোল্ল্যার ছেলে ভন্ড কবিরাজ নবী মোল্ল্যা (৪০) চায়না খাতুনের ছেলেকে সুস্থ করে দেওয়ার কথা বলে আনুমানিক তিন বৎসর যাবৎ বিভিন্ন সময়ে প্রবাসীর স্ত্রী চায়না খাতুনকে একাধিক বার ধর্ষন সহ নগদ দুই লক্ষ টাকা (২,০০,০০০/-),৩টি ছাগল, সহ স্বর্ণালংকার যার আনুমানিক মূল্য ৪০০০০ চল্লিশ হাজার টাকা। চায়না খাতুনের কাছ থেকে প্রতারক কবিরাজ নবী মোল্ল্যাকে উক্ত সম্পদ লুফে নেওয়ার পরে তার ছেলে সুস্থ না হওয়াই সে ভন্ড কবিরাজ নবী মোল্ল্যার কাছে টাকা ফেরৎ চাইলে নবী চায়না বেগমের কাছে উল্টা এক লক্ষ টাকা দাবি করছে যদি টাকা না দেয় তাহলে চায়না বেগমের সাথে অনৈতিক ও কুরুচিপূর্ণ কাজের ভিডিও ইন্টারনেটে প্রকাশ করে দিবে মর্মে সাফ জানিয়ে দিলে অবশেষে চায়না বেগম হরিনাকুন্ডু থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে চায়না বেগমের ধর্ষন করা ভিডিও ধারণ ও ছবি ডিলেট করার শর্তে ঘটনার সমাধান হয়েছে মর্মে সাংবাদিকদের জানান।
প্রকাশ্য ঘুষ বাণিজ্য চলছে ‘জমি আছে ঘর নেই’ প্রকল্প
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের বিভিন্ন ইউনিয়নে সরকারি ঘর দেয়ার নাম করে হতদরিদ্রদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে দায়ী চেয়ারম্যান ও মেম্বররা পার পেয়ে যাচ্ছেন। গত বছর শৈলকুপার ত্রিবেনী ইউনিয়নের ঋষিপাড়ার বাসিন্দারা এরকম অভিযোগ তোলেন ইউপি মেম্বার নাছির উদ্দীনের বিরুদ্ধে। ওই গ্রামের ৩০জন হতদরিদ্র ব্যক্তির কাছ থেকে সরকারী বরাদ্দের ঘর পাইয়ে দেয়ার কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৫ হাজার করে টাকা করে নেন স্থানীয় মেম্বর নাছির। তারা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাননি। শৈলকুপার ইউএনও সাইফুল ইসলাম তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানালেও বছর পার হয়ে যায়। হরিণাকুন্ডুর রঘুনাথপুর ইউনিয়নের ৫জন মেম্বার বৃহস্পতিবার সকালে হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ইউনিয়ন পরিষদের নানা অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পদ্মাকর ইউনিয়নের তিওরদাসহ বিভিন্ন গ্রামের হতদরিদ্ররা জনপ্রতি ১৫ হাজার টাকা একজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে দিয়েছেন। তবে অনেকে টাকা ফেরৎ পেলেও বেশির ভাগ মানুষের টাকা পকেটস্থ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঝিনাইদহ সদররের সুরাটের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও এক মেম্বারের বিরুদ্ধে ঘর করে দেয়ার নাম করে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে প্রতিকারের অপেক্ষায় আছেন। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, দুই বছর আগে সুরাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন জোয়ার্দার কেবি ও ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার তাইজুল ইসলাম ভেলু ‘জমি আছে ঘর নেই’ প্রকল্পের ঘর করে দেয়ার নাম করে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষের কাছ থেকে টাকা করে নিয়েছেন। কিন্তু তারা ঘর পাননি। টাকাও ফেরৎ দিচ্ছেন না। টাকা চাইতে গেলে হুমকি দেয়া হচ্ছে। সুরাট ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত সাহেব আলীর ছেলে খয়বার মন্ডল,মৃত কিরাদত মন্ডলের ছেলে সিদ্দিক মন্ডল, মৃত খালেকের মেয়ে আসমানি বেগম,মন্টু মন্ডলের ছেলে সজিব হোসেন, কিরাদত মন্ডলের ছেলে মধু মন্ডল, সিদ্দিক মন্ডল, মর্জেত মন্ডলের ছেলে কালাম মন্ডলসহ ১০জন লিখিত অভিযোগে সাক্ষর করেছেন। একই ইউনিয়নের কল্যানপুর গ্রামের ফজিলা খাতুন, মনোরা, ফিরোজা, সালেহা ও তোয়েব আলী গত ২০ জুলাই ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের কাছ থেকে চেয়ারম্যান কবির হোসেন জোয়ার্দার কেবি টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান কবির হোসেন জোয়ার্দার কেবি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কারো কাছ থেকে টাকা গ্রহন করিনি। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিভিন্ন দপ্তরে এ সব বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দিচ্ছে। তিনি বলেন বৃহস্পতিবার আমি ঝিনাইদহ শহরে এসে বিস্তারিত বলবো। কিন্তু তিনি আর কথা বলেননি। লিখিত অভিযোগের বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরুদ্দোজা শুভ’র মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
হলিধানী-বাজার গোপালপুর সড়কের করুণ দশা
ঝিনাইদহ :: একটু খানি বৃষ্টি হলেই ঝিনাইদহের রাস্তাঘাটগুলোর করুন চিত্র ফুটে ওঠে। সে পৌরসভা এলাকা আর জেলার বাইরেই হোক। রাস্তা নির্মান ও মেরামত বাবদ সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে। অথচ গ্রামাঞ্চলের রাস্তাগুলোর দৈন্যদশা দেখে মানুষ ক্ষুদ্ধ হচ্ছে। শুধু গ্রাম বা ইউনিয়নের রাস্তায় নয়, জেলা শহরের সড়ক মহাসড়কগুলো মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হচ্ছে। ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগ ও এলজিইডি এসব রাস্তা মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষন করে থাকে। তাদের গাফলতি আর ঠিকাদারের দুর্নীতির কারণে মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ঝিনাইদহের সদর উপজেলার হলিধানী-বাজার গোপালপুর-খাড়াগোদা রাস্তার বেহাল দশার কারনে বিপাকে পড়ছে এলাকা ও দুর দুরান্ত থেকে চলাচল করা আমজনতা। হলিধানী বাজার থেকে কিছু দুর এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে রাস্তায় রয়েছে বড় বড় গর্ত সহ গোটা রাস্তা জুড়েই খানাখোন্দকে ভরপুর। বৃষ্টি হলে চলাচল করা যায় না। প্রতিনিয়ত যানবাহন উল্টে দূর্ঘটনা ঘটছে। বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। সরেজমিনে দেখা গেছে হলিধানী থেকে বাজার গোপালপুর সড়কের হলিধানী মাদ্রাসার সামনে বড় বড় গর্তে পানি জমে সড়ক ভেঙে পুকুরে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পথচারীরা কোন প্রতিকার পাচ্ছে না। হলিধানী গোপালপুর সড়কে প্রতিদিন শতশত ছোট বড়সহ বিভিন্ন বানিজ্যিক যানবাহন ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে। হলিধানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মতি দ্রুত রাস্তাটি মেরামতের জন্য এলজিইডি কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়েছেন।