রবিবার ● ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » নাটোরে তিন শিশুকে বেঁধে লাঠিপেটার ঘটনায় বাজার কমিটির সভাপতিসহ চারজন জেলে
নাটোরে তিন শিশুকে বেঁধে লাঠিপেটার ঘটনায় বাজার কমিটির সভাপতিসহ চারজন জেলে
নাটোর প্রতিনিধি :: (১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৬: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.০২ মিঃ) নাটোরের বাগাতিপাড়ায় দোকানে চুরির চেষ্টার অভিযোগে তিন শিশুকে রশি দিয়ে বেঁধে লাঠি পেটার পর জরিমানা আদায় করার ঘটনায় বাজার কমিটির সভাপতিসহ চারজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন নাটোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-২৷ আটকের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বাজারের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে মালিকেরা৷ আদালত ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাগাতিপাড়া উপজেলার মাকুপাড়া বাজারে ব্যবসায়ী সরলের কম্পিউটারের দোকানে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে চুরির চেষ্টা হয়৷ এ সময় বাজারের নৈশ প্রহরী নজরুল ইসলাম পাঁকা গ্রামের রমজান আলীর সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে রুমনকে আটক করে৷ বিষয়টি বাজার কমিটির সভাপতি ইমাজ উদ্দিন ও সাধারন সম্পাদক সাইদুর রহমানকে জানানো হয়৷ বাজার কমিটির লোকজন চুরি চেষ্টায় রুমনের সাথে জড়িত সন্দেহে রাতেই মাকুপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের অষ্টম শ্রেনীতে পড়ুয়া ছেলে মেহেদী ও একই গ্রামের সিদ্দিকের চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে ফিরোজকে আটক করে৷ পরদিন শুক্রবার বিকেলে স্কুল মাঠে সালিশের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিশু তিনজনকে পেছনে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেদমভাবে পেটানো হয়৷ এমন ঘটনার পরও চুরির চেষ্টার অভিযোগে শিশু রুমন ও মেহেদীকে প্রথমে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হলেও পরে তিন হাজার টাকা করা হয় এবং ফিরোজের দুই হাজার টাকা করা হয়৷ অভিভাবকদের কাছ থেকে জরিমানার টাকাও নিয়ে নেয়া হয়৷ শুক্রবার রাতেই ফিরোজকে এবং পরদিন শনিবার সকালে মেহেদীকে চিকিত্সার জন্য বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়৷ পরে আহত শিশু ফিরোজের পিতা সিদ্দিক প্রামানিক এ ব্যাপারে বাজার কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করলে পুলিশ ১৩ ফেব্রুয়ারী শনিবার সকালে বাজার কমিটির সভাপতি ইমাজ উদ্দিনকে আটক করে৷ রোববার দুপুরে মামলায় অভিযুক্ত অপর চারজনের মধ্যে ব্যবসায়ী শাহাকুল ইসলাম, জার্মান আলী ও নজরুল ইসলাম নাটোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-২ এ আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করলে আদালতের বিচারক মোমিনুল ইসলাম তাদের জামিন না মঞ্জুর করে চারজনকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন৷ এ দিকে ১৩ ফেব্রুয়ারী শনিবার সকালে বাজার কমিটির সভাপতি ইমাজ উদ্দিনকে আটক করার পর থেকে বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান বন্ধ করে রেখেছে৷ রবিবার বিকেলেও বাজারের কোন দোকান খুলতে দেখা যায়নি৷ আহত শিশুরা আবারো অভিযোগ করে বলেছে, রাতে বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় বাজার কমিটির লোকজন তাদেরকে মাকুপাড়া বাজারে ডেকে নিয়ে যায়৷ সেখানে গিয়ে চুরির দোষ স্বীকার করতে প্লাস দিয়ে আঙ্গুল থেকে নখ তুলে নেওয়ার ভয় দেখায়৷