বুধবার ● ১২ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » উখিয়ায় মনগড়া গ্যাসের দাম নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা
উখিয়ায় মনগড়া গ্যাসের দাম নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা
পলাশ বড়ুয়া, উখিয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের উখিয়ায় নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ না থাকায় ইচ্ছামতো এলপি গ্যাসের মূল্য আদায় করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এমনিতে রোহিঙ্গা আসার পর থেকে ভাড়াসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন থেকে গত ২১ জুলাই থেকে কার্যকর করার জন্য প্রতিটি সাড়ে ১২ কেজি/লিটারের এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের সর্বোচ্চ খুঁচরা মূল্য ৬শ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা ১ হাজার টাকা পর্যন্তÍ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
কেউ এর বেশি মূল্য আদায় করা হলেও জাতীয় ভোক্তা অধিকার আইন অনুযায়ী জরুরী সেবা নম্বর ৯৯৯ তে অভিযোগ করার কথাও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে কেউ বিক্রি করলে তা আইনত দ-নীয় অপরাধের কথাও বলা হয়েছে।
এদিকে বাড়তি মূল্যে গ্যাস বিক্রি করলেও বেসরকারি এলপিজি পরিবেশকরা খুচরা বিক্রেতাদের বিক্রি মূল্যের রশিদ দেন না। ফলে দাম বৃদ্ধি নিয়ে ভোক্তাদের মনে সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রশ্ন।
আবদুল আজিজ আজাদ নামে একজন বলেনছেন, গ্যাস সিলিন্ডার এর মুল্য যে কমে গেছে সেটা আমরা কেউ জানতাম না। আগে ১১০০ শত টাকায় কিনতাম। এখন ১০০০ টাকায় কিনছি।
উখিয়ার জসিম উদ্দিন চৌধুরী নামে একজন ভোক্তা জানিয়েছেন, উখিয়ার প্রেস ক্লাবের সামনের দোকান থেকে তিনি ৮০০ টাকায় গ্যাস কিনেছেন। তিনি জানতে চাইলে দোকানদারের বরাত দিয়ে সরকারি নির্দেশনা পাননি বলে জানায়।
সোনারপাড়া এলাকার ভোক্তা আবদুল হামিদ খান বলেন, স্কুল রোডের মেসার্স জামান ট্রেডার্স থেকে ৮৫০ গ্যাস কিনেছি। সরকারি মূল্যের কথা বললে কেউ কেউ অশালীন আচরণ করছে বলেও তিনি জানায়। খোরশেদ আলম নামে অপর এক ভোক্তা বলেন, কোটবাজার স্টেশন থেকে ৮০০টাকায় ওমেরা গ্যাস কিনেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সোনারপাড়া বাজারের গ্যাসের ডিলার মো. দিদার বলেন, সরকারের নির্ধারিত মূল্য তালিকাটি পেয়েছি। তবে কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ বোতল প্রতি খরচ হচ্ছে ৬৮০ টাকা। যা পাইকারী ৭২০টাকায় এবং খুঁচরা ৭৫০টাকায় বিক্রি করা ছাড়া উপায় নাই।
তিনি এও বলেন, কক্সবাজার এলপিজি সমিতি থেকে ৮০০টাকায় বিক্রির নির্দেশনা রয়েছে। তবে উখিয়ায় এ নিয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
একই ধরনের কথা বলেন কোটবাজারের এন.এম গ্যাস ট্রেডিং এর স্বত্ত্বাধিকারী মো: ইসমাইল। তিনি জানান এটা শুধুমাত্র সরকারি এলপি গ্যাসের ক্ষেত্রে নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বসুন্ধরা এবং জেএমআই গ্যাসের ডিলার।
এক প্রশ্নের জবাবে কয়েকজন পরিবেশক বলেন, খুচরা বিক্রেতারা বিক্রয় রশিদ চায় না, তাই দেওয়াও হয় না।
এ বিষয়ে কথা বলতে উখিয়া গ্যাস বিক্রেতা সমিতির আহবায়ক ইসহাক ট্রেডার্সের সাথে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়টি জেনেছি। তবে এ সংক্রান্ত অফিসিয়ালি কোন চিঠি এখনো পায়নি। নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
কনজুম্যার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) উখিয়ার সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, বোতলের গায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য লেখার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও এখনও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ওজনে কম দেওয়া এবং টুইনিং (বোতলে হাওয়া ভরা) করার অভিযোগ রয়েছে মাঠ পর্যায়ের বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি উদ্যোগ তেমন নেই বললেই চলে। ফলে ঠকছেন গ্রাহকরা। লাভবান হচ্ছেন উৎপাদক ও মধ্যস্বত্বভোগীরা।