শুক্রবার ● ১৪ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » ঢাকা » গুম-খুন-ক্রসফায়ার বন্ধ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বাম জোট
গুম-খুন-ক্রসফায়ার বন্ধ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বাম জোট
ঢাকা :: সিনহা রাশেদ সহ সকল বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিচার, শাস্তি এবং গুম-খুন ক্রসফায়ার বন্ধ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে আজ ১৩ আগষ্ট বৃহস্পতিবার, সকাল ১১ টা ৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল - বাসদ‘র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি- সিপিবি‘র সহকারী সাধারন সম্পাদক কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, ইউনাইটেড কমিউনিষ্ট লীগের সম্পাদক কমরেড অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির প্যালিট ব্যুরো সদস্য কমরেড আকবর খান, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা কমরেড মানস নন্দী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহবায়ক কমরেড হামিদুল হক, গণতান্ত্রীক বিপ্লবী পার্টির নেতা কমরেড শহীদুল হক সবুজ প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তাগন বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্যতম ভিত্তি হচ্ছে গণতান্ত্রিক আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশে গণতান্ত্রিক আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়নি। উপনিবেশিক আমলের মতই নতুন নতুন নিবর্তনমূলক কালা-কানুন প্রণয়ন করা হচ্ছে এবং গণতান্ত্রিক অধিকার হরন চলছে। বন্দুকযুদ্ধ, ক্রসফায়ার, এনকাউন্টারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। বিশেষ ক্ষমতা আইন স্বাধীন দেশে বলবত আছে। সন্ত্রাস দমন আইন, জননিরাপত্তা আইনের দ্বারা মানুষের উপর নির্যাতন নিপীড়ন চলছে। মানুষের বাক-স্বাধীনতা হরণ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিবর্তন মূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন চালু করা হয়েছে।
সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের জন্য সমস্ত নিবর্তনমূলক আইন প্রবর্তন করেও সরকার যখন মানুষের ক্ষোভ-বিক্ষোভ দমনে ব্যার্থ হচ্ছে তখন সরকার বিভিন্ন বাহিনী দ্বারা গুম-খুন এবং ক্রসফায়ারের মাধ্যমে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড সংগঠিত করে মানুষের মধ্যে এক ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। বক্তাগণ বলেন, শোষণমূলক লুটপাটের এই শাসন ব্যবস্থায় ক্রসফায়ার, ক্রাইম, করাপশন ও কোয়ারসন আজ রাষ্ট্রের চেহারা হয়ে উঠেছে।
বক্তাগণ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই বিচার বহির্ভূত যে হত্যাকান্ড সিরাজ সিকদারকে হত্যার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল তারই সর্বশেষ বলি মেজর (অব:) রাশেদ সিনহাকে হত্যাকান্ড। সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্য হওয়ার কারনে বিষয়টি যেভাবে সামনে এসেছে এবং অভিযুক্তরা গ্রেফতার হয়েছে কিন্তু সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে তা দেখা যায়না। শুধুমাত্র গত ২০ বছরেই বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে ৪৮০০ মানুষ। কিন্তু আজও পর্যন্ত একটি হত্যাকান্ডেরও বিচার এবং শাস্তি হয়নি। অপারেশন ক্লিনহার্টসহ অনেক ক্ষেত্রে এইসব হত্যাকান্ডে জড়িত বিভিন্ন বাহিনীকে দায়মুক্তির দেয়া হয়েছে॥ বর্তমান সরকার পুলিশ-র্যাবসহ নানা বাহিনীকে ব্যবহার করে দিনের ভোট রাত্রে ব্যালটে সীল মেরে বাক্স ভর্তি করে ক্ষমতাসীন হয়েছে। ফলে ঐসব বাহীনিও এখন দুর্নীতি, লুটপাটে বেপরোয়া। রাষ্ট্রিয় বিভিন্ন বাহিনী এবং আমলারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর পরিবর্তে বর্তমান সরকার ও দলের আজ্ঞাবহে পরিণত হয়েছে।
বক্তাগণ অবিলম্বে, স্বাধীন কমিশন গঠন করে রাশেদ সিনহাসহ সকল বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের সুষ্ট বিচার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং গুম-খুন-ক্রসফায়ার, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বন্ধ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের জোর দাবি জানান।