সোমবার ● ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » গাজীপুরে গৃহবধু হত্যা: ধামাচাপার চেষ্টা
গাজীপুরে গৃহবধু হত্যা: ধামাচাপার চেষ্টা
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় রোজিনা বেগম (২০) নামে গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে৷
উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের নলগাঁও খয়রাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে৷ শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে পেট্রোল-জাতীয় পদার্থ ঢেলে গায়ে আগুন ধরিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন৷
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নলগাঁও খয়রাপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে টমটম চালক সোহাগের সাথে প্রায় এক বছর আগে একই উপজেলার সূর্যনারায়ণপুরের কাওলার টেকের দরিদ্র আবুল সরদারের মেয়ে রোজিনা বেগমের বিয়ে হয়৷ বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ শুরু হয় তার পর থেকেই রোজিনার উপর তার স্বামী সোহাগ নানাভাবে নির্যাতন শুরু করে৷
গত এক সপ্তাহ আগে সোহাগ পেট্রোল-জাতীয় পদার্থ ঢেলে রোজিনার গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ আগুনে রোজিনার শরীরের বেশির ভাগ অংশ পুড়ে যায়৷ ওই সময় সোহাগও দগ্ধ হন৷
পরে গৃহবধুর চিত্কারে আশপাশের বাড়ীর লোকজন ছুটে এসে আগুন নিভিয়ে রোজিনা সহ তার স্বামীকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করেন৷ নিহতের স্বামী সোহাগ প্রাথমিক চিকিত্সা নিয়েই সুস্থ হয়ে উঠেন৷
অপরদিকে গৃহবধুর অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করা হয়৷ কিন্তু শেষপর্যন্ত বাঁচানো সম্ভব হয়নি গৃহবধু রোজিনা বেগমকে৷
১২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাতে চিকিত্সাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিটে তার মৃত্যু হয়৷
রোজিনার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে৷
এদিকে রোজিনা হত্যার ঘটনায় থানায় এখনো কোন মামলা হয়নি৷ এলাকাবাসীর দাবি এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড৷ বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল উঠেপরে লেগেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷
সূর্যনারায়ণপুরের ইউপি মেম্বার নজরুল ইসলাম প্রধান জানান, শুক্রবার রাতে চিকিত্সাধীন অবস্থায় রোজিনা মারা যান৷ শনিবার সন্ধ্যায় তার লাশ বাবার বাড়িতে দাফন করা হয়৷
চাঁদপুর ইউনিয়নের নলগাঁও খয়রাপাড়া এলাকার প্রভাবশালী ইউপি মেম্বার আকরাম হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে এড়িয়ে যান৷ কোন তথ্য দিতে অস্বকৃতি জানিয়ে ফোন কেটে দেন৷ পরে বিভিন্ন নাম্বার থেকে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কোন ফোন রিসিভ করেননি৷ তার এব্যবহারে সন্দেহর মাত্রা আরও তীব্র হয়৷
উল্লেখ্য, নিহতের লাশ দাফনের আগে ময়না তদন্ত হয়েছে কিনা বা ময়না তদন্তের রিপোর্ট পুলিশকে দেখানো হয়েছিল কিনা এব্যাপারে সঠিক তথ্য কোন মাধ্যম থেকেই পাওয়া যায়নি৷ বিষটি সম্পর্কে বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করা হলে রহস্যের তীব্রতা আরও বাড়তে থাকে৷ আসল রহস্য উত্ঘাটনের জন্য স্থানীয় ব্যক্তিদের সাথে নানা ভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি৷