বুধবার ● ২৬ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » রাউজানে ক্রস ফায়ারের ভয় মামলায় ওসির বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু
রাউজানে ক্রস ফায়ারের ভয় মামলায় ওসির বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু
রাউজান প্রতিনিধি :: রাউজান থানার সাবেক ওসি কেপায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। মামলাটি চট্টগ্রাম সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ কায়সার নিজেই তদন্ত করছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার ২৫ আগষ্ট আদালতে হাজির ছিলেন মামলার বাদী কাঞ্চন চৌধুরী। তবে বাদীর সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করার কথা থাকলেও তার অনুপস্থিতির কারণে জবানবন্দি রেকর্ড করতে পারেনি আদালত। পরে বাদীর আবেদনে আগামী ১ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। গত ২৪ আগষ্ট চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালতে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রাউজান থানার সাবেক ওসি কেপায়েত উল্লাহসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন রাউজানের কুন্ডেশ^রী এলাকার কাঞ্চন চৌধুরী নামে এক ব্যাক্তি। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য রাখা হয়। একই ভাবে মামলার সাক্ষীকে জবানবন্দি দিতে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
মামলার অভিযোগ পত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর রাত ১১টায় শহর থেকে গ্রামের বাড়ি যায় কাঞ্চন চৌধুরী। রাউজান পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কুন্ডেশ্বরী এলাকায় তার বাড়ি। ওই রাতের ১টায় দিকে ওসি কেফায়েত উল্লাহ ও তার বাহিনী হঠাৎ তার বাড়ি ঘিরে ফেলেন এবং কাঞ্চন চৌধুরীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ঘর তল্লাশি চালায়।একপর্যায়ে আলমারিতে থাকা মেয়ের বিয়ের জন্য জমি বিক্রির দুই লাখ টাকা, একটি চেইনসহ এক ভরি ১২ আনা স্বর্ণ থানা হেফাজতে নেয় কেফায়েত উল্লাহ। সঙ্গে কাঞ্চন চৌধুরীকেও থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। কাঞ্চন চৌধুরীকে নিয়ে যাওয়ার সময় তার মেয়ে কেফায়েত উল্লাহর কাছে জানতে চাই বাবাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তখন কেফায়েত উল্লাহ বলেন, তোমার বাবার থেকে মাপ চেয়ে নাও। তিনি আর ফিরে আসবেন না। পরদিন কাঞ্চন চৌধুরীর স্ত্রী ও তার মেয়ে থানায় গেলে ক্রসফায়ার দেবে বলে আরও দুই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অপারগতা জানালে কাঞ্চন চৌধুরীকে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এসব বিষয় আদালতে করা মামলার এজহারে উল্লেখ করেন বাদী কাঞ্চন চৌধুরী। অপর দিকে রাউজান থানায় দীর্ঘ ৪ বছর ৪ মাস ৪দিন কর্মরত আলোচিত ওসি কেফায়েত উল্লাহ বদলী জনিত কারণে রাউজান ত্যাগ করলে কাঞ্চান চৌধুরী মামলাটি দায়ের করেন। রাউজান থানার ওসির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের অভিযোগটি এতদিন পরে কেন করা হয়েছে জানতে চাইলে কাঞ্চান চৌধুরী বলেন, ওসির ভয়ে রাউজান ছাড়তে হয়েছে আমাকে। আমি সবসময় ওসির আতংকে ছিলাম। তাই বদলীর পর অভিযোগটি আদালতে উপস্থাপন করেছি। আদালত অভিযোটি আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করছেন।
কাঞ্চান চৌধুরীর পর ওসি কেপায়েতের বিরুদ্ধে আরো মামলা হচ্ছে বলে রাউজানে গুণজন উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক উরকিচর উনিয়নের এক ব্যাক্তি জানিয়েছে, ওসি কেপায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে তিনি মামলা করবেন কয় একদিনের মধ্যে। তবে আর অভিযোগ প্রকাশ করেনি এই প্রতিবেদকের কাছে। কাঞ্চন চৌধুরীর মামলা ও রাউজানে বিভিন্ন জনের অভিযোগ প্রসঙ্গে জন্য জানার ফোন করা হলে ওসি কেপায়েত উল্লাহ ফোন রিসিভ করেনি।