বুধবার ● ২ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » ডাক্তার ও নার্সের বিরুদ্ধে গাইবান্ধায় শিশু হত্যার অভিযোগ
ডাক্তার ও নার্সের বিরুদ্ধে গাইবান্ধায় শিশু হত্যার অভিযোগ
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মজিদুল ইসলাম ও নার্স বিউটি বেগমের বিরুদ্ধে শিশু হত্যার অভিযোগ থানায় দায়ের করা হয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার খলসী গ্রামের মৃত-রুহুল হাসানের ছেলে সাজিদ আল-হাসান (২৪) এর থানায় দায়ের করা এজাহার সুত্রে জানা গেছে, তার স্ত্রী নাইমা সুলতানা তিশা (২৩) গর্ভবতী হওয়ার পর থেকেই উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.মজিদুল ইসলামের কাছে চেকআপ করতেন। তিনি ওই গর্ভবর্তী গৃহবধুর শারিরীক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ডেলিভারির তারিখ নির্ধারণ করে দেন ১৪ সেপ্টেম্বর ২০।
কিন্তু নির্ধারিত তারিখের আগেই গত ৩০ আগষ্ট ওই গর্ভবর্তীর পেটের ব্যথা উঠলে এজাহারের স্বাক্ষী মালেকা পারভীন ও মুনছুর পারভীন সন্ধ্যা অনুমান ৬.৪০ মিনিটের দিকে চেকআপের জন্য ভাড়াকৃত সিএনজি যোগে ডা.মজিদুলের ব্যক্তিগত চেম্বার-নর্থ বেঙ্গল ডিজিটাল ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারে নিয়ে আসে। ডা. মজিদুল ইসলাম ওই গর্ভবতীকে না দেখে তার চেম্বারের দ্বি-তল (ভবন) থেকে মোবাইল ফোনে উপজেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স বিউটি বেগমের সাথে কথা বলে তাদের হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। তার কথামত ওই গর্ভবতীকে জরুরী হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং সন্তান ডেলিভারির জন্য তারাহুড়া করে ডেলিভারি রুমে নেয়া হয়।
নার্স বিউটি বেগম ২ জন আয়ার সহযোগিতায় ডেলিভেরি হওয়ার ব্যথা উঠানোর জন্য ইনজেকশন করেন এবং পেটে স্ব-জোরে ঘুষি মেরে পেটের উপর প্রবল চাপ প্রয়োগ করে ডেলিভেরি চলাকালে নার্স বিউটি বেগম মোবাইলে সারাক্ষণ কথা বলতে বলতে নবজাতক সন্তানটির গলাটিপে ধরে জোরপূর্বক টানাহেচড়া করে ভূমিষ্ট করায়। ভূমিষ্ট হওয়ার পর নবজাতক পুত্র সন্তানের নারী না কাটিয়া মায়ের বুকের উপর স্ব-জোরে ছুরে মারিয়া বকাবকি করে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যায়। এরপরে এজাহারে উল্লেখিত স্বাক্ষীগণ ডেলিভেরি রুমে গিয়ে নবজাতক সন্তানকে খিচুনি উঠা, মাথা তুলতুলে নরম, গলায়, বুকে, হাতে-পায়ে আঘাতের চিহৃ দেখতে পায়।
নবজাতক সন্তানের বিষয়টি কর্তব্যরত চিকিৎসককে অবহিত করলে দ্রুত বগুড়া (শজিমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নবজাতক সন্তানের নাক দিয়া রক্ত ঝড়ে এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩১ আগষ্ট সকাল অনুমান ১০.২০ মিনিটে শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। নবজাতক শিশুর পিতা সাজিদ আল-হাসান সন্তান হত্যার অভিযোগ নিয়ে এসে ৩১ আগষ্ট ওই দিন বিকেলে ডা.মজিদুল ইসলাম, নার্স বিউটি বেগম সহ অজ্ঞাত ২ জন আয়ার নাম উল্লেখ করে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আফজাল হোসেন থানায় এজাহার দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।