রবিবার ● ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » কৃষি » আক্কেলপুরে পুকুরের মাছ মরে ভেসে উঠছে
আক্কেলপুরে পুকুরের মাছ মরে ভেসে উঠছে
নিশাত আনজুমান, আক্কেলপুর প্রতিনিধি :: জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বৈরি আবহাওয়ার কারনে পুকুর জলাশয়ের পানিতে গ্যাস সৃষ্টি হয়ে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়ায় বিভিন্ন পুকুরের মাছ মরে ভেসে উঠছে। ফলে মৎসচাষীদের কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
যার ফলে উপজেলার হাটবাজার গুলোতে এখন দেশী মাছে সয়লাব। কেউ মাছ কিনতে আবার কেউবা তা দেখতে ভীর করছেন। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে হাটে মাছ কেনার জন্য মাইকিংও করা হয়েছে । তবুও এসব মাছের তেমন একটা ক্রেতা মিলছেনা। অনেক মাছ ব্যবসায়ীরও চাষিদের মাছ বিক্রি না হওয়ায় বাজারেই পঁচে গেছে।
বাজারে রুই-কাতলাসহ বিভিন্ন মাছে বাজার সয়লাব। সাধারণত বড় আকৃতির মাছ কেজিপ্রতি ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকার নিচে মেলে না। সেখানে এদিন এমন মাছের দর চাওয়া হচ্ছিল মাত্র ২৫ টাকা থেকে ৮০ টাকা। আর ছোট আকৃতির মাছের ক্রেতাই নেই বললেই চলে।
মাছ চাষি ও মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর ও বিলের পানিতে হঠাৎকরে অক্সিজেনের অভাব দেখা দিয়েছে। এতে ব্যাপক হারে মাছ মরে গেছে। ফলে প্রচুর পরিমান মাছ বাজারে চলে আসায় তা অল্প দামে বিক্রয় হচ্ছে। সব মিলিয়ে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছেন মাছ চাষিরা।
সরেজমিনে আক্কেলপুর পৌরসদরের কলেজ বাজার হাটে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারে অল্প দামে বিভিন্ন মাছ বিক্রি হচ্ছে । বড় রুই-কাতলা মিলছিল ৮০ টাকা থেকে ১৮০ কেজি দরে, যা একদিন আগেই ছিল ২০০-৩০০ টাকা। বিভিন্ন প্রজাতির খুচরা মাছ দুদিন আগে (গত মঙ্গলবার) প্রতি কেজি ছিল ৩০০-৪০০ টাকা সেই মাছ (গত বুধবার) ২০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারে অন্য দিনের তুলনায় লোকসমাগমও ছিল চোঁখে পড়ার মতো।
আওয়ালগাড়ি গ্রামের সাগর হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, সকালে বাজার করতে হাটে এসেছিলাম। দেখি বাজারে প্রচুর মাছ উঠেছে। আমি ৮০ টাকা কেজি দরে বড় রুই, জাপানি, বড় বাটার পাঁচ কেজি মাছ কিনেছি। এর আগে কখনও এতো অল্প দামে মাছ কিনতে পারিনি।
নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার গয়েসপুর গ্রামের মৎস্যচাষি শাহিন হোসেন বলেন, সকালে জানতে পারেন তার পুকুরের মরা মাছ ভাসছে। বিষয়টি জেনে পুকুরে গেলে ততক্ষণে অনেক মাছ মরে ভেসে উঠেছে। পরে মাছ গুলো কিছু অংশ তুলে বাজারে নেয় বাকি মাছ পুকুরে মরে পচে গেছে।
মাছ চাষি নুরুল হোসেন ও ইসরাফিল বলেন, বাজারে যে মাস ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায় বিক্রি হতো সেই মাছ ৮০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে এমন বড় লোকসানের মুখে এর আগে কখন পরিনি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম বলেন, দুর্যোগ পরবর্তি সময়ে পুকুর গুলোতে অক্সিজেনের সল্পতা দেখা দেয়। আবার অনেক সময় এসিড বৃষ্টি অর্থাৎ বায়ুমন্ডলে যদি কোন কারণে এসিটিক বাতাস প্রবাহিত হয় আর ঠিক ঐ সময়ে যদি বৃষ্টি হয়। তাহলে বৃষ্টির সঙ্গে বাতাসের এসিডটা মিশ্রিত হয়ে পানিতে পড়ে। আর তখন পানিতে অক্সিজেন সল্পতা দেখা দেয় এবং পানির চঐ কমে যায় যার ফলে পানি এসিটিক হয় এবং মাছ মরে ভেসে ওঠে। তিনি আরো বলেন ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষিদের তালিকাও প্রস্তুত করা হচ্ছে।