রবিবার ● ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » করোনা আপডেট » স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত চরাঞ্চলের মানুষ
স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত চরাঞ্চলের মানুষ
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। বিগত ৯ বছর আগে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখনও জনবল রয়েছে ৩১ শয্যার। জনবল সংকট থাকার পরেও ৩ জন স্টাফকে ডেপুটেশনে অন্যত্র দেয়া হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন নাই, ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে থাকায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে চরাঞ্চল বেষ্টিত দরিদ্র প্রীড়িত এই অঞ্চলের মানুষ সরকারি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ফুলছড়ি উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী সাঘাটা ও সদর উপজেলার চরাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসার একমাত্র আশ্রয় স্থল এই ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে কোন চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না এতদঞ্চলের মানুষ।
জানা গেছে, ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১১ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখনো জনবল রয়েছে ৩১ শয্যার। হাসপাতালটিতে ৯ জন ডাক্তারের স্থলে মাত্র ৪ জন ডাক্তার কর্মরত রয়েছে। আবাসিক মেডিকেল অফিসার, ৫ জন জুনিয়ার কনসালট্যান্টের মধ্যে গাইনী এন্ড অবস, মেডিসিন, সার্জারি ও এনেসথেসিয়া কনসালটেন্টের পদ শূন্য রয়েছে। আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদশুন্য থাকায় একজন মেডিকেল অফিসারকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ডাঃ সালেহীন কাদেরী নামে অন্য আর একজন মেডিকেল অফিসার ২০০৬ সালের ৬ ফেব্র“য়ারি থেকে অদ্যাবধি অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছে। দীর্ঘদিন হলো মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল) পদটি ফাঁকা পরে রয়েছে। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) পদে একজন কর্মরত থাকলেও অন্যজন ডেপুটেশনে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত রয়েছে। একজনকে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনে দেয়া হয়েছে।
সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকের পদ দুইটি, নার্সের ১৪টি পদের মধ্যে ২টি, প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারিসহ মাতৃস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে ৪ জন মিড ওয়াইফের ৩ জন নিয়মিত কাজ করছেন। পরিসংখ্যান পদটি, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের ৩টি পদের মধ্যে ২টি, ফার্মাসিস্ট ও স্টোর কিপারের ২টি পদ, স্বাস্থ্য সহকারীর ৮টি, এমএলএসএস এর পদ ফাঁকা রয়েছে ২টি। বাবুর্চি ২টি পদের মধ্যে ১টি এবং ওয়ার্ড বয়ের পদ, পরিচ্ছন্ন কর্মীর ৫টি পদের মধ্যে ৩টি পদই শূন্য রয়েছে। এছাড়া একজনকে ডেপুটেশনে দেয়া হয়েছে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে। জুনিয়র মেকানিককে দেয়া হয়েছে ফার্মাসিস্টের দায়িত্ব এবং একজন স্বাস্থ্য সহকারীকে দেয়া হয়েছে স্টোর কিপারের দায়িত্ব।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো. রফিকুজ্জামান জানান, হাসপাতালে জনবল চেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারপরেও স্বল্প সংখ্যক ডাক্তার ও সাপোর্ট ষ্টাফ নিয়ে সাধ্যমত সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। ইতিপূর্বে বিভিন্ন কারণে হাসপাতালটিতে অচলাবস্থা তৈরি হলেও বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত আরএমও, চিকিৎসক এবং নার্সসহ অন্যান্য সকলের আন্তরিক সেবাদানের মাধ্যমে এ হাসপাতালের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরে এসেছে।
গাইবান্ধা জেলা আইন শৃংখলা কমিটি সভা অনুষ্ঠিত
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা জেলা আইন শৃংখলা কমিটি ও আইন শৃংখলা বিষয়ক অন্যান্য মাসিক সভা রোববার জেলা কালেক্টরেট সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল মতিন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. সাদেকুর রহমান গত সভার কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পৌর মেয়র অ্যাড. শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেড কোয়াটার্স মো. আবু খায়ের, এনএসআই’র ডেপুটি ডাইরেক্টর, পলাশবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নেসকো’র-১ ও নেসকো-২ ও গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নির্বাহী প্রকৌশলী, সাংবাদিক, জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাকসুদার রহমান শাহান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মৃদুল মোস্তাফিজ ঝন্টু, গাইবান্ধা র্যাব ক্যাম্প ইনচার্জ, জেলা ভোক্তা অধিকারের সহকারি পরিচালক, জেলা মার্কেটিং অফিসার, জেলা মাদক নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা, জেলা ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক প্রমুখ।
জেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায় জেলার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ছাড়াও করোনা পরিস্থিতি, ফোরলেন প্রকল্প বাস্তবায়ন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য নিয়ন্ত্রন, ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রন, জরুরী ভিত্তিতে ডিবি রোডের ফোরলেন প্রকল্পভূক্ত সড়কের উন্নয়ন, মাদক দ্রব্যের অপব্যবহার প্রতিরোধ এবং আইন শৃংখলা পরিস্থিতিসহ জেলার সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভাগুলোতে সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্য, উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, র্যাব, বিজিবি, মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, জেল সুপারসহ জেলার সকল বিভাগীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চালককে হত্যা করে অটোভ্যান ছিনতাই
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শাখাহার ইউনিয়নের বৈরাগীরহাট এলাকায় রাস্তার পাশে ধান ক্ষেত থেকে দিলবার (১৭) নামের এক অটোভ্যান চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। দিলবার ওই ইউনিয়নের পিয়ারপুর গ্রামের আলাল উদ্দিনের ছেলে।
রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে স্থানীয়রা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে বৈরাগীহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে খবর দেয়। খবর পেয়ে দিলবারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রতক্ষ্যদর্শী ও পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দিলবার প্রতিদিনের ন্যায় শনিবার বিকালে বাড়ী থেকে ব্যাটারীচালিত অটোভ্যান নিয়ে বের হলেও আর বাড়ী ফিরে আসেনি। বাড়ী না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দিলবারের মরদেহ সনাক্ত করেন তার মা দোলেনা বেগম, ভাই দেলোয়ার ও মামা নুনু মিয়া। নিহত দিলবারের গলায় গামছা পেঁচানো ও শরীরে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন ছিলো। ধারনা করা হচ্ছে, দুবৃর্ত্তরা দিলবারকে মারপিট ও শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে অটোভ্যানটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
গোবিন্দগঞ্জ থানার বৈরাগীহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মিলন চ্যাটার্জী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।