বুধবার ● ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ৩ মাসে একজন অভিযুক্তকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ
রাঙামাটিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ৩ মাসে একজন অভিযুক্তকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ
নির্মল বড়ুয়া মিলন :: একজন নারীর বিরুদ্ধে নানাভাবে অনলাইনে সাইবার অপরাধ সংগঠিত করায় রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলায় সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করার তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও পাঁচজন অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি বরকল থানা পুলিশ।
বাদির দায়ের করা অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রটি প্রযুক্তির মাধ্যমে ইলেক্টনিক্স ডিভাইস ব্যবহার করে প্রতারনার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এছাড়া খাবারে নেশা জাতিয় দ্রব পান করিয়ে আপত্তিকর ভিডিও ধারন এবং ঐ ভিডিও সহ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করে সাইবার অপরাধ সংগঠিত করায় রাঙামাটি জেলার বরকল থানায় গত ২২ জুন-২০২০ রাখী খীসা বাদি হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আজ ২৩ সেপ্টেম্বর-২০২০ ইংরেজি তারিখ এ মামলার ৯০ দিন পূর্ণ হলো।
যা বরকল থানা মামলা নং-০১ তারিখ ২২ জুন-২০২০ এবং রাঙামাটি কগনিজেন্স আদালতের মামলা নং- ২০৯/২০২০ ।
এ মামলার অভিযুক্তরা হচ্ছে : ১। নকুল চন্দ্র শর্মা, পিতা-মৃত সুধন চন্দ্র শর্মা, গ্রাম- হরিণা বাজার এলাকা, ২। মো. সোহেল ৩। মো. সুমন পারভেজ উভয়ের পিতা- আব্দুল মালেক, গ্রাম- হরিণা বাজার এলাকা (আমতলা), ৪। মো. ইউছুফ রানা, পিতা-মৃত আলি আহম্মদ, গ্রাম- হরিণা বাজার এলাকা (আমতলা), থানা- বরকল, উপজেলা- বরকল ও ৫। অমর শান্তি চাকমা পিতা- চিরনজীব চাকমা, মাতা- ইন্দ্রদেবী চাকমা, গ্রাম-কুসুমছড়ি, সুভলং, বর্তমান ঠিকানা- গ্রাম-ধনুবাগ-মাষ্টার পাড়া (সূর্যের হাসি ক্লিনিক ছোট হরিণা শাখা), থানা- বরকল, উপজেলা- বরকল, জেলা-রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
উল্লেখিত ৫ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বরকল থানায় গত ২২ জুন-২০২০ তারিখ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৪ (২)/ ২৫ (২)/ ২৯/ ৩০/ ৩১ (২)/ ৩৫ (২) ২০১৮ ধারায় মামলা দায়ের করার পরও ১ ও ২ নাম্বার অভিযুক্ত চট্টগ্রাম শহরে চাকুরী করছে এছাড়া অন্য ৩জন অভিযুক্তরা বরকলের হরিণায় বসে চাকুরী করছে এবং ছোট হরিণা বাজারে বসে ব্যবসা পরিচালনা করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে সূর্যের হাসি ক্লিনিক ছ্টো হরিণা শাখার ভারপ্রাপ্ত শাখা ম্যানেজার মামলার অপর অভিযুক্ত অমর শান্তি চাকমা মুঠোফোনে সিএইচটি মিডিয়াকে জানায়, এ মামলার তদন্তকারী অফিসার (আইও) তার মোবাইল ফোনটি জব্দ করে আইও জিম্মায় নিয়ে গেছেন এবং আপত্তিকর ভিডিওটি আমার মোবাইলে ছিলো যা পুলিশ খুজে পেয়েছেন, বলে স্বীকার করে অভিযুক্ত অমর শান্তি চাকমা।
মামলার বিষয়ে বাঘাইছড়ি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল চৌধুরী সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, সিডিআর সংগ্রহ করা হয়েছে, মামলার অগ্রগতি রয়েছে। অভিযুক্তদের অবস্থান নির্নয় করা হয়েছে মামলার আইও সুস্থ্য হয়ে কর্মস্থলে যোগদান করিলে অভিযান পরিচালনা করা হবে। যদি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হয় ? জানতে চাইলে, বাঘাইছড়ি সার্কেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পুলিশ সুপার বলেন, তাহলে ফরেনসিক রিপোর্টের ভিত্তিতে সংগ্রহ করা তথ্যের মাধ্যমে চার্জসীট রাঙামাটি কগনিজেন্স আদালতের মাধ্যমে সাইবার ট্রাইব্যুনাল (বাংলাদেশ) ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হবে। সাইবার ট্রাইব্যুনাল থেকে অভিযুক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা বা ওয়ারেন্ট জারি করা হবে তখনও যদি অভিযুক্ত আসামীরা পালাতক থাকে তখন আদালতের আদেশে তাদের সম্পদ ক্রোকও হতে পারে।
এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর মো. কামাল হোসেন সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি চিকিৎসা কালিন ছুটিতে রয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী নভেম্বর মাসে এ মামলার ৯০ কর্মদিবস পূর্ণ হবে। ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু দুর্গম এলাকা হওয়ার কারণে অভিযুক্তদের আটক করতে বেগ পেতে হচ্ছে।
সাময়ীক ভাবে এ মামলার কার্যভার বরকল থানার অন্য আরেকজন সাব-ইন্সপেক্টরকে দায়িত্ব দেয়া আছে, এছাড়া বাদির প্রদত্ত অভিযাগ ২য় বারের মত ঢাকা সিআইডিতে ফরেনসিক টেষ্ট রিপোর্টের জন্য পাঠানো হয়েছে বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর মো. কামাল হোসেন।