শিরোনাম:
●   ফটিকছড়িতে যুবককে পিটিয়ে হত্যা ●   গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসিতে ঝুলাতে হবে : জামাল ●   নতুন বাংলাদেশে আওয়ামীলীগের ঠাঁই নাই : হুম্মাম কাদের চৌধুরী ●   রাউজানে বিএনপির নেতার পিতার মৃত্যু ●   হাটহাজারী মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অভিষেক ●   মিরসরাইয়ে ইসলামী সংগীত প্রতিযোগীতার পুরষ্কার বিতরণ ●   ঈশ্বরগঞ্জে আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে আগুন : প্রায় ২৫লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি ●   বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আশুলিয়া থানা কমিটি গঠন ●   জঙ্গল থেকে ঝাড় ফুল সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করে রফিক ●   কুমিল্লায় যৌথবাহিনীর হাতে যুবদল নেতার প্রাণ হারানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ●   ফটিকছড়িতে ফসলি জমির মাটি কাটার অপরাধে ৭ ব্যক্তির জেল ●   রাউজানে ব্যবসায়ী হত্যা : পরিবার বলছেন মামলা করলে, আমাদের নিরাপত্তা কে দেবে ? ●   একুশে পদক সাংবাদিকতায় মফস্বল থেকে ১জনকে দেয়ার নীতিমালা পরিবর্তন করা দরকার ●   কুষ্টিয়ায় বিএনপি’র বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ ●   ঝালকাঠি আইনজীবী সমিতির নির্বাচন : সভাপতি শাহাদাৎ, সম্পাদক নাসিম ●   ঈশ্বরগঞ্জ কালীবাড়ী মন্দিরে হরিনাম সংকীর্ত্তণ ●   প্রজ্ঞ্য ও দূরদর্শিতার অভাবে পরিবর্তনের সম্ভাবনা অনেকটা মাঠে মারা যাচ্ছে : সাইফুল হক ●   রাবিপ্রবি’তে ক্যারিয়ার ক্লাবের উদ্যোগে প্রফেশনাল সিভি রাইটিং প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত ●   ঈশ্বরগঞ্জে মদ তৈরির কাচামালসহ আটক-২ ●   জনকথা’র সিলেট বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান হাফিজুল ●   অপরাধীদের আতঙ্ক ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি ওবায়দুর রহমান ●   রাবিপ্রবি’তে জনতা ব্যাংক পিএলসির এটিএম বুথ উদ্বোধন ●   পার্বতীপুরে মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত-২ : আহত-১ ●   মিরসরাইয়ের ইউএনও জেরিনের বিরুদ্ধে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ ●   পার্বতীপুরে রেললাইনে সার বোঝাই ট্রাক বিকল : ৩ ঘন্টা রেল যোগাযোগ বন্ধ ●   পানছড়িতে বিজিবি লোগাং জোন কর্তৃক শীতবস্ত্র ও শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ ●   চুয়েটে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৫ সম্পন্ন ●   রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ●   চুয়েট অফিসার্স এসোসিয়েশনের জরুরী সভা অনুষ্ঠিত ●   আবুরহাট দুরন্ত সংঘের কমিটি ঘোষণা
রাঙামাটি, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
বৃহস্পতিবার ● ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » কৃষি » ড্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চারার নার্সারী করে কোটিপতি হলেন কৃষক এম এ করিম
প্রথম পাতা » কৃষি » ড্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চারার নার্সারী করে কোটিপতি হলেন কৃষক এম এ করিম
বৃহস্পতিবার ● ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ড্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চারার নার্সারী করে কোটিপতি হলেন কৃষক এম এ করিম

ছবি : সংবাদ সংক্রান্তএম এ কাদির চৌধুরী ফারহান, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :: শান্তিতে জাতিসংঘ পদকপ্রাপ্ত সাবেক সেনা সদস্য এম এ করিম (৫৫)। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার জালালপুর গ্রামে তাঁর বাড়ি। চাকরির সময়সীমা পার হওয়ার পর অবসরে যান তিনি, কিন্তু কাজ থেকে তাঁর অবসর মেলেনি। কারণ, তিনি একজন সফল ‘ড্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চারা উৎপাদক’।

এক সময় এম এ করিম নিজে একাই ড্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চারা উৎপাদন করা শুরু করেছিলেন, এখন তিনি নিজে স্বাবলম্বিতো হয়েছেন, করেছেন দু’শত মানুষের কর্ম-সংস্থানও। এ বছর তিনি ৫বিঘা জমিতে করেছিলেন ড্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চারার নার্সারী। কোটি টাকার উপড়ে আয়ও করেছেন এই নার্সারী থেকে। সরেজমিনে আলাপকালে এমনই জানালেন এম এ করিম নিজেই।

ড্রাফটিং পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে এম এ করিম জানান, বনবেগুন হচ্ছে টমেটোর একটি জংলি জাত, গ্রাম-গঞ্জে এ বেগুনের হরেক নাম। এই বেগুন চারার গোড়ার দিকের অংশের সঙ্গে টমেটোর চারার ওপরের দিকের অংশ জোড়া দিয়ে করা হয় গ্রাফটিং। এভাবে লাগানো টমেটোর চারা বড় হয়ে ঢলে পড়ে না, রোগবালাইও তেমন হয় না। উপরন্ত ফলন মেলে প্রচুর। যেখানে সাধারণ একটি গাছে পাঁচ-দশ কেজি টমেটো মেলে, সেখানে গ্রাফটিং করা প্রতি গাছে মেলে বিশ থেকে পঁচিশ কেজি।

তিনি জানান, গ্রাফটিং করা টমেটো গাছ পানি সহনীয়। তাই ভারী বৃষ্টিতেও এই টমেটোগাছ নষ্ট হয় না। ‘গ্রাফটিং চারার চাহিদা অনেক। নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের আরো আট থেকে দশটি জেলায় সরবরাহ করে থাকি। অনেকে মৌসুমের আগেই চারার সংখ্যা জানিয়ে অর্ডার দেন। তাদেরকে সময়মতো সরবরাহ করতে হিমশিম খাই। তিনি জানান, অনেকে আষাঢ়-শ্রাবণ থেকে চারা রোপণ শুরু করেন। আগাম টমেটো বের করতে পারলে লাভ বেশি। তখন কেজিপ্রতি টমেটো ১০০-১১০ টাকা বিক্রি হয়।

উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে প্রায় অর্ধশত কৃষক আছেন যাঁরা এম এ করিমের গ্রাফটিং করা চারা ব্যবহার করে টমেটোর চাষ করছেন। এম এ করিম নিজেও এ বছর পার্থখোলার সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রায় ২১ বিঘা জমিতে গ্রাফটিং পদ্ধতির চারা দিয়ে টমেটোর চাষ করেছেন। ক্ষেতে টমেটোও ধরেছে, এর মধ্যেই টমেটো পাঁকতে শুরু করেছে।

সরেজমিনে ২৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার জালালপুর গ্রামে ঢুকেই বিভিন্ন জাতের সবজি ও টমেটো চাষের নমুনা দেখা গেল। গ্রামের খানিকটা ভেতরে গিয়ে চোখে পড়ল এ বাড়ির উঠান, ওবাড়ির উঠান, বাড়ির পাশে খালি জমিতে বাঁশ ও পলিথিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি তাঁবু। এগুলো গ্রাফটিং চারা তৈরির অস্থায়ী ঘর। রোদ-বৃষ্টি থেকে চারা বাঁচাতে এ ব্যবস্থা।

এম এ করিমের নিজ জমিতেও কয়েকটি তাঁবু দেখা গেল। তবে বেশির ভাগ তাঁবু চারাশূন্য। জিজ্ঞাসা করে জানা গেল, এখন চারা রোপণের শেষ সময় বলে অধিকাংশ চারাই বিক্রি হয়ে গেছে। এরপরও একটি তাঁবুতে চারা গ্রাফটিংয়ের কাজ করছিলেন পাঁচজন, তাঁরা শ্রমিক। এম এ করিমের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন তারা নিয়মিত গ্রাফটিংয়ের টেকনেশিয়ান হিসেবে কাজ করছেন।

তিনি জানান, এ বছর তিনি ২০ লাখ চারার গ্রাফটিং করেছেন। বারি-৮ (বাংলাদেশী), মঙ্গল রাজা (ফ্রান্স) নামে টমেটোর বীজ এবং বনবেগুনের বীজ বুনেছিলেন। বনবেগুনের দুই মাস বয়সী চারার সঙ্গে টমেটোর এক মাস বয়সী চারার গ্রাফটিং করেছেন। গ্রাফটিং করা চারা ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে রোপণ করতে হয়। প্রতিটি চারা ১০ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি করেছেন। গ্রাফটিংয়ের কাজে নিজে সার্বক্ষণিক শ্রম দিয়েছেন। তার সঙ্গে নিয়মিত খেটেছেন প্রায় ১৫০ জন দক্ষ শ্রমিক। তাঁদের মাসিক ২০-২৫ হাজার টাকা ইনকাম।

তার এভাবে চারা উৎপাদন করতে বিনিয়োগ হয়েছে সীমিত। এ বছর প্রায় ২০ লক্ষ চারা বিক্রি করেছেন, যার বাজার মুল্য দেড় থেকে দুই কোটি টাকা। এতে এ মৌসুমে চারা বিক্রি থেকে ব্যপক লাভ করেছেন । ট্রাকযোগে চারা নিয়ে গেছেন দেশের বিভিন্ন স্থানের কৃষকেরা। এ ছাড়া কৃষকেরাও তাঁর কাছ থেকে চারা সংগ্রহের পাশাপাশি নিয়মিত পরামর্শ নিচ্ছেন বলে জানান এম এ করিম।

‘অসময়ের টমেটো চাষী’ খ্যাত এম এ করিম সম্পর্কে জানতে চাইলে কমলগঞ্জের জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা টমেটো চাষী মোতালেব বক্ত বলেন, এম এ করিম সেনা সদস্য ছিলেন। আদতে তিনি একজন উদ্ভাবনী কৃষক। নানা ফসল নিয়ে তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। টমেটোর এই গ্রাফটিং প্রযুক্তি তাঁর কারণে সহজেই এলাকার সাধারণ কৃষকের কাছে পৌঁছাতে পেরেছেন। নিজে লাভবান হয়ে এলাকার কৃষকদের বিরতিহীনভাবে পরামর্শ দিয়ে চলছেন মানুষটি।

সাবেক এ সেনা সদস্য ২০০২ সালে অবসরে এসে টমেটো চাষ শুরু করলে উৎপাদনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেন তিনি। টমেটো চাষে সফল চাষী হিসেবে তিনি ২০০৫ সালে পেয়েছেন জাতীয় কৃষি পুরষ্কার। পুরষ্কারটি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে তখন তার হাতে তোলে দেন। এরপর থেকে এই উৎসাহকে কাজে লাগিয়ে হয়েছেন তিনি সফল কৃষক।

আলাপকালে এই সফল টমেটো চাষী একরকম অভিযোগ করেই বলেন, সিংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ যদি আরো আন্তরিক হতো, তবে মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা কৃষিতে আরো বিপ্লব ঘটাতে পারতো। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ কৃষি নির্ভর দেশ। কিন্তু ৮০ ভাগ কৃষি নির্ভর এ দেশে কৃষিতে সরকার কৃষকদের যথাযথ মুল্যায়ন করে না, যা খুবই দু:খজনক। অন্যান্য বিভাগে জাতীয় পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় লক্ষ লক্ষ টাকা। আর কৃষিতে দেওয়া হয় ৫-৬ হাজার টাকার পুরস্কার। এজন্যেই কৃষকেরা কৃষিতে উৎসাহ পায় না। সরকার যদি কৃষিকে আরো গুরুত্ব দেয়, তবে দেশ কৃষিতে আরো এগিয়ে যাবে এমনটাই মনে করেন কৃষক এম এ করিম।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)