শিরোনাম:
●   মহালছড়িতে আওয়ামীলীগ নেতা গ্রেফতার ●   প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজের রজতজয়ন্তী উৎসব ●   শাহরাস্তিতে আন্তর্জাতিক ক্বেরাত সম্মেলন অনুষ্ঠিত ●   পানছড়ি ৩ বিজিবি’র পক্ষ থেকে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সাথে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় ●   ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তরুণের আত্মহত্যা ●   দ্রুত বাজার নিয়ন্ত্রণের ডাক দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ ●   ভোটকেন্দ্রে শূন্যভোটের মাধ্যমে পার্বত্যবাসী ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে ●   ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা নানা সুরতে আবির্ভুত হওয়ার পাঁয়তারা করছে ●   কাউখালীতে উইভ এনজিওর অবহিতকরণ সভা ●   খাগড়াছড়িতে ইত্তেফাকের ৭২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ●   বেগম রোকেয়া এ্যাওয়ার্ড পেলেন সাংবাদিক সাব্বির ●   বারইয়ারহাট ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফারুক,সম্পাদক ইউসুফ ●   দীঘিনালায় গলায় ফাঁস দেয়া যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ●   ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মা নিহত, ছেলে আহত ●   পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালনা বোর্ড ২য় সভা অনুষ্ঠিত ●   রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ●   মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন ●   মানিকছড়িতে ট্রাকের নীচে মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু ●   আল ফালাহ ইসলামি একাডেমীর সবক প্রদান অনুষ্ঠান ●   ১১ দফা অবহিতকরণে আত্রাইয়ে আলোচনা সভা ●   পার্বতীপুর রেলওয়ে ইর্য়াডের আম গাছে যুবকের আত্মহত্যা ●   রংধনু ক্লাবের কার্যকরী পরিষদ গঠিত ●   কাউখালী তাহেরিয়া রশিদা সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসার সভা ●   পাকুন্দিয়ায় ইয়ুথ পিস অ্যাম্বাসেডর গ্রুপ গঠিত ●   বৈরী আবহাওয়ায় ও শীতের তীব্রতায় বাড়ছে কৃষকের দুশ্চিন্তা ●   কোন হটকারিতায় গণঅভ্যুত্থানের অর্জন নষ্ট করা যাবেনা ●   তরফভাইখাঁ সমাজকল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ ●   মিরসরাইয়ে শীতার্তের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ ●   ঈশ্বরগঞ্জে জিয়াউর রহমান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ●   লংগদু এস এস সি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা সামগ্রী বিতরন
রাঙামাটি, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
শুক্রবার ● ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » কৃষি » রাতের আঁধারে একের পর এক নষ্ট করছে ফলন্ত ক্ষেত : স্বপ্ন ভাঙছে কৃষকের
প্রথম পাতা » কৃষি » রাতের আঁধারে একের পর এক নষ্ট করছে ফলন্ত ক্ষেত : স্বপ্ন ভাঙছে কৃষকের
শুক্রবার ● ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

রাতের আঁধারে একের পর এক নষ্ট করছে ফলন্ত ক্ষেত : স্বপ্ন ভাঙছে কৃষকের

ছবি : সংবাদ সংক্রান্তজাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে ফসলী ক্ষেত বিনষ্টের ঘটনা। দূবৃর্ত্তরা রাতের আঁধারে একের পর এক নৃশংস ভাবে ধরন্ত-ফলন্ত ক্ষেত নষ্ট করছে। কৃষকেরা ধারদেনার মাধ্যমে ফসল চাষ করার পর ভরা ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় তারা একেবারে পথে বসে যাচ্ছেন। রাতের আঁধারে কে বা কারা লোক চক্ষুর আড়ালে এমন জঘন্যতম কাজটি করছে। যে কারণে ক্ষতিগ্রস্থরা নির্দিষ্টভাবে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করতে পারছেন না। ফলে এমন ক্ষতিকর কাজ করেও মনুষ্যত্বহীন দুর্বৃত্তরা থাকছে ধরা ছোয়ার বাইরে। এদিকে প্রায়ই ক্ষেত নষ্টের ঘটনা ঘটায় সবজি ক্ষেতের মালিকেরা রয়েছেন অচেনা এক আতঙ্কে। প্রশাসন বলছে, ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক, গোষ্টিগত বিরোধের জেরে এমনটি হয়ে থাকে। তবে এটাকে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টির পায়তারা হতে পারে এমনটিও উড়িয়ে দিচ্ছে না প্রশাসন। ভুক্তভোগী কৃষকদেরসূত্রে জানাগেছে, বিগত কয়েক মাস ধরে শত্রুতা করে মানুষের অগোচরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের সবজি ক্ষেত কেটে সাবাড় করছে। পুকুরে কখনও কীটনাশক দিয়ে আবার গ্যাস বড়ি ব্যবহারের মাধ্যমে মাছ নিধন করছে। কৃষকেরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপাদন করলেও সমাজের গুটি কয়েক দুষ্ট প্রকৃতির মানুষ দ্বারা স্বপ্ন ভাঙছে তাদের। তারা বলছেন, শত্রুতার মাধ্যমে কৃষকের ভরা ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে। এটা মনুষ্যত্বহীনতা ছাড়া আর কিছুই নয়। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, গত ২০ জুন বাবরা গ্রামের আলী বকসের ২ ছেলে কৃষক টিপু সুলতান ও শহিদুল ইসলামের দুই ভায়ের ১৫ কাঠা জমির কাঁদিওয়ালা কলাগাছ কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা। একইভাবে ৩ জুলাই মল্লিকপুর গ্রামের মল্লিক মন্ডলের ছেলে সবজি চাষী মাজেদুল মন্ডলের বেথুলী মাঠের আড়াই বিঘা জমির ৩ শতাধিক ধরন্ত পেপে গাছ কেটে দেয়। এর ঠিক ৪ দিন পরে ৭ জুলাই পৌর এলাকার ফয়লা গ্রামের তাকের হোসেনের ছেলে আবু সাঈদের ১৫ শতক জমির ধরন্ত করলা ক্ষেত কেটে দেয়। ১৩ জুলাই বারোবাজারের ঘোপ গ্রামের মাহতাব মুন্সির ছেলে আবদুর রশিদের দেড় বিঘা জমির সিমগাছে কীটনাশক স্প্রে করে পুড়িয়ে দেয়। ৯ আগস্ট তিল্লা গ্রামের সতীশ বিশ্বাসের ছেলে কৃষক বিকাশ বিশ্বাসের ১৫ শতক ধরন্ত করলা ক্ষেত কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা। ২৮ আগস্ট সাইটবাড়িয়া গ্রামের মাছচাষী ইউপি সদস্য কবিরুল ইসলাম নান্নুর পুকুরে গ্যাস বড়ি দিয়ে প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকার মাছ নিধন করে। এর ৩ দিন পর ৩১ আগস্ট একই ইউনিয়নের রাড়িপাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্যের ৪৮ শতক মুল্যবান দার্জিলিং লেবু ও থাই পেয়ারার কলম কেটে দেয় দূর্বৃত্তরা। এরআগে ২৫ আগস্ট বলরামপুর গ্রামের মাছচাষী মমরেজ আলীর পুকুরে একইভাবে বিষ দিয়ে প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার মাছ মেরে দেয়। ৬ সেপ্টেম্বর সাইটবাড়িয়া গ্রামের আনছার আলী মোল্যার ছেলে হতদরিদ্র কৃষক বাপ্পি মোল্যার ৯ শতক ধরন্ত বেগুন ক্ষেত কেটে দিয়ে সর্বশান্ত করে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর পৌর এলাকার খয়েরতলা গ্রামের রফি বিশ্বাসের পুকুরে গ্যাস বড়ি প্রয়োগ করে লক্ষাধিক টাকার মাছ নিধন করে দুর্বৃত্তরা। সর্বশেষ ২২ সেপ্টেম্বর পৌর এলাকার চাপালী গ্রামে মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে আতিয়ার রহমানের প্রায় ১ বিঘা জমির লাউ গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ক্ষতিগ্রস্থ মাছ চাষী সাইটবাড়িয়া গ্রামের কবিরুল ইসলাম নান্নু জানান, ধারদেনার মাধ্যমে মাছ চাষ করেছিলাম। পুকুরের মাছও বেশ বড় হয়েছিল। কিন্তু রাতের আঁধারে কে বা কারা পুকুরে গ্যাস বড়ি দিয়ে লক্ষাধিক টাকার মাছ মেরে দিয়েছে। সকালে পুকুর থেকে মরা মাছ তোলার সময় গ্যাস বড়ি পেয়েছিলাম। তিনি বলেন, আমি কারও শত্রু হতে পারি। অথবা আমার কোন অপরাধ থাকতে পারে কিন্তু পুকুরের মাছগুলো কি অপরাধ করেছে ?। তাছাড়াও একজনের ক্ষতি করে তাদেরই বা কি লাভ ?। এখন কোন ভাবেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারছিনা। নান্নু আরও জানান, রাতের আঁধারে কে বা কারা মাছ নিধন করেছে। আমি কাউকে দেখিনি ফলে শুধু থানায় একটি সাধারন ডাইয়েরী করেছি। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আবদুর রশিদ জানান, আমি একজন সবজি চাষী। মাঠে অন্য ফসলের সাথে দেড় বিঘা জমিতে সিমের চাষ করেছিলাম। সতেজ গাছগুলো বানে উঠে লতিয়ে ফুল ধরা শুরু হয়েছিল। কিছুদিন পরেই সিম তোলা যেতো। কিন্তু শত্রুতা করে কে বা কারা রাতের আঁধারে গাছ বিনাশকরা কীটনাশক স্প্রে করে আমার ক্ষেতের সব সিমগাছ পুড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, আমার জানামতে আমি কারও ক্ষতি করিনি। সারাদিন চাষকাজে ব্যস্ত থাকি। সে কারণে মনে করি আমার কোন শত্রু নেই। ক্ষেত নষ্ট করার পর এলাকাবাসীর সাথে আমার নিজেকেও হতবাক করেছে। আমরা খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ। যে কারণে ঝামেলা এড়াতে আমি থানা পুলিশ করিনি। সাইটবাড়িয়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ আরেক কৃষক বাপ্পি মোল্যা জানান, মাঠের ৯ শতক জমিই আমার একমাত্র সম্বল। সারাবছর পরের ক্ষেতে কামলার কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরে বিকালে নিজের ওই জমিটাতে বেগুন লাগিয়ে প্রতিনিয়ত পরিশ্রম করি। ক্ষেতের বেগুন গাছগুলোতে বেগুন ধরা শুরু হয়েছিল। কিন্তু আমার ধরন্ত বেগুন ক্ষেত ধারালো কিছু দিয়ে মাটি সমান করে কেটে সাবাড় করে দিয়েছে। না দেখে অনুমান নির্ভর হয়ে কাউকে দোষারোপও করতে পারছিনা। ক্ষেত নষ্ট হওয়ার ফলে আমি আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। যে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আমার বেশ সময় পার করতে হবে। তিনি বলেন, যারা কৃষকের ভরাক্ষেত নষ্ঠ করতে পারে সমাজের দুষ্টু প্রকৃতির এ মানুষগুলো সব ধরনের অপরাধমুলক কাজ করতে পারে। এমন জঘন্য কাজ করা শুধুমাত্র জঘন্য মানসিকতার মানুষদের পক্ষেই সম্ভব। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহাঃ মাহাফুজুর রহমান মিয়া জানান, কৃষকের ভরা ক্ষেত কেটে দেয়ার মত ক্ষতি পুশিয়ে উঠার নয়। সম্প্রতি এমন ঘটনার কথা শুনছি। কিন্তু দুষ্টু প্রকৃতির এ মানুষগুলোর বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থরা সন্দেহ করলেও তা অনুমান নির্ভর হওয়ায় কেউ অভিযোগ দিতে চাচ্ছেন না। বিগত ৩/৪ মাসে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ফসলহানী ঘটলেও মাত্র ৩ জন থানায় সাধারন ডাইয়েরী করেছেন। তারাও বলতে পারছেন না কারা এমন জঘন্য কাজ করছে। ফলে এক ধরনের জটিলতা থেকেই যাচ্ছে। তারপরও পুলিশ সামাজিক ও গোষ্টিগত বিরোধ, সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক কলহের জের ধরে এটা হতে পারে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে। তবে এটা সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য কোন বিশেষ মহল করছে কিনা সেটাও উড়িয়ে না দিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ জানান, কৃষকদের পরিশ্রমের ফসল যারা রাতের আঁধারে বিনষ্ট করছে তারা মনুষ্যত্বহীন পশুর মত। ভরাক্ষেত নষ্ট হওয়ায় প্রান্তিক পর্যায়ের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা পথে বসে যাচ্ছেন। যে বিরোধের জের ধরেই হোক না কেন কৃষকের ক্ষতি কোনভাবেই কাম্য নয়। স্থানীয় সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার বলেন, একজন কৃষকের ভরা ক্ষেত নষ্ট হলে তার পাজর ভেঙে যায়। যারা ক্ষেত নষ্ট করছে তাদের কোন লাভ হচ্ছে না। তবে যাদের ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে তারা নিঃস্ব হচ্ছে। রাতের আঁধারে কৃষকের ভরাক্ষেত নষ্ট করাটা এক ধরনের বর্বরতা,নৃশংসতা, যা কোন মানুষের পক্ষেই মেনে নেয়া সম্ভব নয়। সম্প্রতি বিষয়টি সকলকে ভাবিয়ে তুলেছে। কারা এমন অমানবিক কাজ করছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান এই সাংসদ।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)