শনিবার ● ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » কৃষি » ইলিশ চাষের খবর চারিদিকে হৈ চৈ
ইলিশ চাষের খবর চারিদিকে হৈ চৈ
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: চারিদিকে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছে মহেশপুরের মনিপুরি ইলিশ চাষের খবর। মাছগুলো কেবল বড় হচ্ছে। কিচু দিন পরেই বাজারজাত করা হবে। মানুষ মুখিয়ে আছে এই মাছ ভক্ষন করতে। বাজারে প্রায় সময়ই ইলিশ মাছের দাম চড়া, ইচ্ছা থাকলেও সবার কেনার ক্ষমতা নেই। আবার বছরের অধিকাংশ সময় ঠিকমতো ইলিশ পাওয়াও যায় না। এই অবস্থার অবসান ঘটাতে ঝিনাইদহের মহেশপুরে শুরু হয়েছে মনিপুরি ইলিশের চাষ। মাছটি দেখতে মাথার অংশ ইলিশের আর পেছনের অংশ পুটি মাছের মতো, কিন্তু স্বাদ ও গন্ধে পুরোটাই ইলিশ। অনেকে মাছটিকে পেংবা বলেও চেনেন। মহেশপুরের মৎস্য চাষীরা প্রথম এই মনিপুরি ইলিশের চাষ করেছেন। উপজেলার বাশবাড়িয়া ও পান্তাপাড়া ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে প্রায় অর্ধশত পুকুরে ১২ লাখ পোনা ছাড়া হয়েছে। ২ মাস আগে পোনা ছাড়া হয়েছে। ৭ থেকে ৮ মাস বয়স হলেই বাজারে তোলা যাবে। মিঠাপানিতে উৎপাদিত এই মাছ বাজারে পর্যাপ্ত আমদানি হলে ইলিশের চাহিদা অনেকটা পুরণের পাশাপাশি চাষীরাও লাভবান হবেন। মহেশপুরের তুলসীতলা গ্রামের মৎস্যচাষী আব্দুল আলিম জানান, উপজেলার পান্তাপাড়া ও বাশবাড়িয়া ইউনিয়নের পান্তাপাড়া, তুলসীতলা ও বাগানমাঠ গ্রামে অর্ধশত পুকুরে এই মনিপুরি মাছের চাষ হয়েছে। অলিমুজ্জামান প্রথম মাছটি এই এলাকায় নিয়ে আসলেও বর্তমানে আয়াত আলী, আত্তাব আলী, সজিব হোসেন, ওসমান গণী, জায়েদ আলী, আব্দুর রহিম, নয়ন মিয়া, সাহাবুদ্দিন আহম্মদ, ইদ্রিস আলী, মনিরুল ইসলাম, মকছেদ আলী, জুলমত আলী, আলিউজ্জামান সহ বেশ কয়েকজন মৎস্যচাষী এই মাছের চাষ করেছেন। প্রথম বছরেই এই পুকুরগুলোতে ১২ লাখ পোনা ছাড়া হয়েছে। আব্দুল আলিম আরো জানান, তিনি ৪ বিঘা জলাকারের একটি পুকুরে ৬০ হাজার পোনা ছেড়েছেন। প্রতিটি বাচ্চা মাছ ১ টাকা ৫৫ পয়সা করে কিনতে হয়েছে। পুকুরে পোনা ছাড়ার সময় কেজিতে ৫ হাজার বাচ্চা ছিল, যা গত দেড় মাসে অনেকটা বড় হয়েছে। বর্তমানে ৩৫ টি মাছে এক কেজি ওজন হচ্ছে। তিনি ময়মনসিংহ থেকে এই মাছের পোনা আমদানি করেন বলে জানান। মাছটি ভারতের মনিপুরি রাজ্যে চাষ হচ্ছে কয়েক বছর। সেখানে ৮ শত থেকে ৯ শত টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ময়মনসিংহের একটি হ্যাচারী মালিক ২০১৯ সালে মা মাছ সংগ্রহ করেন। এরপর সেই মাছ থেকে ডিম সংগ্রহ করে বাচ্চা তৈরী করেছেন। তিনিই এই মাছের পোনা বিক্রি করছেন। ময়মনসিংহ জেলার বন্ধন হ্যাচারীর মালিক কামাল হোসেন জানান, তারা এ বছর পেংবা মাছের পোনা ছেড়েছেন। প্রায় ১৫ লাখ পোনা বিক্রি করেছেন। যার বেশির ভাগই ঝিনাইদহে দেওয়া হয়েছে। মহেশপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, মাছটি চাষীরা সংগ্রহ করলেও তারা সার্বক্ষনিক দেখভাল করছেন। কখন কি পরিচর্যা করতে হবে তা দেখিয়ে থাকেন। তিনি আরো বলেন, মাছটি পেংবা বলেও অনেক স্থানে পরিচিত। তবে ভারতের মনিপুরি রাজ্যে এর বেশি চাষ হওয়ায় এটাকে মনিপুরি ইলিশ হিসেবে পরিচিত।
নিখোঁজের ৪ দিন পর কলেজ ছাত্রের লাশ ধান ক্ষেতের সেচ পাম্পের ঘর থেকে উদ্ধার
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার আউশিয়া গ্রামে নিখোঁজের ৪ দিন পর সুজন হোসেন (২০) নামের এক কলেজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার দিকে ওই গ্রামের ধান ক্ষেতের বোরিং ঘর (সেচ পাম্পের ঘর) থেকে মাটিচাপা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সুজন হোসেন আউশিয়া গ্রামে মালয়েশিয়া প্রবাসী জিল্লুর রহমানের ছেলে। স্থানীয়ররা জানায়, গত রোববার বিকেলে বাড়ি থেকে জমিতে দেওয়ার জন্য সার কেনার জন্য শৈলকুপা বাজারে যায় সুজন হোসেন। এরপর থেকেই সে নিখোঁজ ছিল। এ ঘটনায় শৈলকুপা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে তার স্বজনরা। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনার পরপরই সাকিব ও নাজমুল নামে দুই জনকে আটক করে । পরে হৃদয় নামে আরো একজন কে আটক করে। তার দেয়া তথ্য মতে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কিছু কিশোর এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বলে ধারনা করা হচ্ছে। টাকার জন্য এ ঘটনা ঘটাতে পারে। নিহতের স্বজনরা জানান, শৈলকুপার হাজামপাড়ার রাকিব নামের এক যুবকের কাছে সুজন টাকা পেত। রোববার বিকেলে শৈলকুপা বাজারে সার কেনার সময় রাকিবের ছোট ভাই সাকিব টাকা দেওয়ার কথা বলে মোটর সাইকেল যোগে সুজনকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিল সে। ঘটনার পর থেকে সাকিব পলাতক রয়েছে।
বাড়ির সামনে ঝুলছে “চোরাকারবারীর বাড়ি” সম্বলিত নোটিশ, লজ্জায় বের হতে পারে না পরিবারের সদস্যরা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় গ্রামের একটি বাড়ির সামনে ঝুলছে “চোরাকারবারীর বাড়ি” সম্বলিত নোটিশ। বিজিবির পক্ষ থেকে বাড়ির প্রবেশদ্বারে এই সাইনবোর্ডটি ঝুলিয়ে দেওয়ায় লজ্জা ও অপমানে পরিবারের লোকজন বাইরে বের হতে পারেন না। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, দিনমজুর মেহেদী হাসান ওরফে সুমন (২২) গিয়েছিলেন ভাতর থেকে গরু আনতে। গত বছরের ৮ নভেম্বর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র গুলিতে প্রাণ হারান সুমন। তিনদিন পর তার লাশ ফেরত পায় পরিবার। বাড়ির এক ছেলের এভাবে অকাল মৃত্যুর পর গোটা পরিবার যখন শোকাহত, ঠিক তখনই ওই পরিবারে নেমে এসেছে আরেক অমানবিক ঘটনা। গোটা পরিবারের সদস্যরা যা বয়ে চলেছেন মাসের পর মাস। বিজিবি’র পক্ষ থেকে সুমনের বাবা আব্দুল মান্নানের বাড়ির প্রবেশদ্বারে ঝুলিয়ে দিয়েছে এটি চোরাকারবারীর বাড়ি। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, প্রথমে দেওয়া হয় গরু চোরাকারবারীর বাড়ি লেখা একটি বোর্ড, যা ঝড়ে নষ্ট হয়ে যায়। পরে আবার দেওয়া হয়েছে চোরাকারবারীর বাড়ি। এই বোর্ডটি লাগিয়ে তাদের পাহারা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে লজ্জায় পাড়ায় বের হতে পারেন না পরিবারের সদস্যরা। রাস্তা দিয়ে যাওয়া পথচারীরা দাড়িয়ে লেখাটি পড়েন আর নানা মন্তব্য করেন, যা তাদের ব্যাথিত করে। গৃহকর্তা আব্দুল মান্নান দুঃখ করে বলেন, মাঝে মধ্যে মনে হয় বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়, কিন্তু দরিদ্র হওয়ায় কোথাও যেতে পারছেন না। চোখ বন্ধ করে পড়ে আছেন। তিনি বলেন, বড় ছেলে সুমন বিএসএফ এর গুলিতে মারা গেছে আর মেঝো ছেলে খালিদ হাসান ওরফে ইমন (১৯) কৃষি কাজ করেন। ছোট ছেলে জাহিদ হাসান (১১) পড়ালেখা করে। একমাত্র মেয়ে সুমি খাতুনকে বিয়ে দিয়েছেন। বাড়িটিতে এখন ১১ জন সদস্য। বাড়িতে বিবাহযোগ্য মেয়ে রয়েছে, আছে স্কুল-কলেজে পড়–য়া ছেলে-মেয়ে। যাদের সকলের মাথা নিচু করে দিচ্ছে বাড়ির প্রবেশদ্বারে থাকা এই বোর্ডটি। গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন জানান, তারাও এটা দেখে লজ্জা পান। এভাবে গোটা পরিবারকে অপবাদ দেওয়া ঠিন নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন। স্থানীয় শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আমানুল্লাহ বলেন, বিষয়টি তাদেরও কষ্ট দেয়। কিন্তু বিজিবি’র সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তারা বুঝতে চান না। তিনি এই বিষয়টির একটা সমাধান দাবি করেন। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহ মিন্টু বলেন, এটা কোনো ভাবেই কেউ লিখতে পারেন না। আইনে আছে একজনের অপরাধ আরেকজন নেবে না, এ ক্ষেত্রে ওই পরিবারটি নিরাপরাধ। ফলে এটা আইনেও সমর্থন করে না, পাশাপাশি মানবাধিকারের চরম লংঘন। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার ঝিনাইদহ সদর ইউনিটের সভাপতি আমিনুর রহমান জানান, এটা মানবাধিকার লংঘন। তার পরিবারের অন্য সদস্যদের অপরাধ না থাকলেও শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিজিবি খালিশপুর ৫৮ ব্যাটেলিয়ান এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল কামরুল আহসান জানান, সুমনের পরিবারের কাছে চোরাকারবারীদের নাম জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা দেয়নি, উল্টো চোরাকারবারীদের নিকট থেকে টাকা নিয়ে চেপে গেছেন। তিনি আরো বলেন, সীমান্তে গরু আনতে গিয়ে কেউ মারা গেলে দেশের বদনাম হয়। এ ক্ষেত্রে একটি পরিবারের বদনামের চেয়ে কম গুরুত্বের নয়। অন্য কারো বাড়িতে এভাবে লাগানো হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের ইচ্ছা আছে অর্থ বরাদ্ধ পেলে আরো লাগানো হবে।
ঝিনাইদহ জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির প্রশাসক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রীট
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির প্রশাসক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবার হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে (যার পিটিশন নং-৫৭৪৬/২০২০)। রিটটি দায়ের করেছেন মালিক সমিতির নব-নির্বাচিত কমিটির সাধারন সম্পাদক আবু সাঈদ বিশ্বাস। হাইকোর্ট জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির প্রশাসক নিয়োগ কেন অবৈধ ঘোষনা করা হবে না তা জানতে চেয়ে জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার, সদর থানা অফিসার ইনচার্জকে আগামী ২৮ দিনের মধ্যে কারন দর্শানোর আদেশ দিয়েছেন। জানা গেছে, গত ২৯ আগস্ট ঝিনাইদহ-২ আসনের এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি উপস্থিত হয়ে দ্বন্দ্ব নিরসনে সমিতির সদস্যদের নিয়ে আলোচনা সভা করেন। পরে সবার মতামতের ভিত্তিতে রোকনুজ্জামান রানুকে সভাপতি ও আবু সাঈদ বিশ্বাসকে সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। একই সময় ১৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। এরপর গঠিত মালিক সমিতির নির্বাচন কমিশনারের অনুরোধে নব-নির্বাচিতদের শপথ বাক্য পাঠ করান এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি। পরে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ’র সুপারিশক্রমে গত ১০ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের বাণিজ্য সংগঠনের পরিচালক অতিরিক্ত সচিব ড.মোঃ জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত একটি আদেশে প্রশাসক নিয়োগের অনুমোদন দেন। পরে নির্বাচিত কমিটির সাধারন সম্পাদক বাদী হয়ে হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন।