বুধবার ● ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » করতোয়ার পানি বিপদসীমার উপরে বৃদ্ধি
করতোয়ার পানি বিপদসীমার উপরে বৃদ্ধি
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে গাইবান্ধায় করতোয়া, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ঘাঘটসহ জেলার সবগুলো নদীর পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমার ৯৫ সে.মি. এবং ঘাঘট নদীর পানি ৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রের পানি অনেকটা বৃদ্ধি পেলেও এখনও বিপদসীমার নিচে রয়েছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার চরাঞ্চল এবং নদী তীরবর্তী নিচু এলাকাগুলো ডুবে গেছে। ফলে ওইসব এলাকার সহস্রাধিক বাড়িঘরে পানি উঠেছে। অপরদিকে করতোয়া নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দরবস্ত, শিবপুর, সাপমারা, নাকাই, কাটাবাড়ি, ফুলবাড়ি, হরিরামপুর, মহিমাগঞ্জ, রাখালবুরুজ, শালমারা, তালুকানুপুর এবং পলাশবাড়ি উপজেলার কিশোরগাড়ি ও হোসেনপুর ইউনিয়নের আরও নতুন নতুন এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। গোবিন্দগঞ্জ হাসপাতালসহ পৌরসভার বেশ কিছু এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এছাড়া গোাবিন্দগঞ্জ ঘোড়াঘাট দিনাজপুর উপ-মহাসড়কের চার মাথা এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে গোবিন্দগঞ্জের নদী তীরবর্তী ১৮টি গ্রামের কলা, আখ ও রোপা আমনসহ বিভিন্ন শাক সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
গোবিন্দগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন জানান, পৌরসভাসহ ১০টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। প্রায় ৮ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি রয়েছে। ইতিমধ্যে পৌরসভায় ২টি এবং হরিরামপুরে ১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেগুলোতে শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। নতুন করে আরও আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। দুর্গত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ শুরু করা হয়েছে।
এতিমখানার সভাপতি ও ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় উত্তর সীচা দারুল উলুম আজিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার সভাপতি শিক্ষক ফজলুল হক মিঠু ও ক্যাশিয়ার আব্দুল হামিদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে জেলা প্রশাসক, জেলা সমাজসেবার উপ-পরিচালক, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। এদিকে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়ায় মাদ্রাসার জমি দাতা ও এলাকার সচেতন মহলকে সুন্দরগঞ্জ সমাজসেবা বিভাগের উচ্চমান সহকারি আব্দুস ছাত্তার, সভাপতি ও ক্যাশিয়ার কর্তৃক নানা ধরণের হুমকি প্রদান করে আসছে।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, সুন্দরগঞ্জে চন্ডিপুর ইউনিয়নে ওই মাদ্রাসা ও এতিমখানাটি ২০০৩ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত হয়। এতিমখানাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতি অর্থ বছরে সরকারিভাবে এতিমদের জন্য ৬ মাস পর পর অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হয়। উক্ত অর্থ মাদ্রাসার কোন এতিম ও মাদ্রাসার উন্নয়নের কাজে কোন অর্থ ব্যয় না করে সভাপতি বরাদ্দকৃত পুরো অর্থই আত্মসাৎ করা হয়। এদিকে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক এতিমদের নামে বরাদ্দকৃত অর্থ প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা করে বরাদ্দ রয়েছে বিষয়টি এলাকাবাসি জানতে চাইলে সভাপতি ও ক্যাশিয়ার হিসাব দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। শুধু তাই নয়, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে এতিমখানায় কাগজ-কলমে ১৯ জন এতিম ছাত্রের হিসাব দেখিয়ে অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে। অথচ বিগত দুই বছরে এতিমখানায় মাত্র একজন এতিম ছাত্র রয়েছে। এছাড়াও মাদ্রাসা ও এতিমখানায় সরকার বরাদ্দকৃত টিন মনগড়া বিক্রি করেও অর্থ আত্মসাৎ করে। এই অর্থ আত্মসাৎ ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ইতোপূর্বে ৩ বার এতিমখানায় তদন্ত করলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
শুধু তাই নয়, ২০০০ সালে স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলার রহমান নান্নু দাতা হিসেবে ২৪ শতক জমি মাদ্রাসা ও এতিমখানার জন্য দান করে এবং মাদ্রাসা ও এতিমখানাটি রেজিস্ট্রেশন হলে তাকে দাতা সদস্য করবে। কিন্তু বিগত ১৭ বৎসর হলো মাদ্রাসা ও এতিমখানার কোন কমিটি গঠন না করে উক্ত জমি সভাপতি ফজলুল করিম মিঠু তার বলে দাবি করে আসছে।
এব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ সমাজসেবা বিভাগের উচ্চমান সহকারি আব্দুস ছাত্তারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেন। এতিমখানার শিক্ষক ও সভাপতি ফজলুল হক মিঠু তার বিরুদ্ধে আনীত অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি মহল চক্রান্ত করে বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। তিনি বলেন, আমি এলাকার কাউকে কোন ধরণের হুমকি দেয়নি এবং তিনি কোন অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িত নই।