রবিবার ● ৪ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » রাঙ্গুনিয়ায় বড়বোনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক : ধর্ষণের শিকার ছোটবোন
রাঙ্গুনিয়ায় বড়বোনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক : ধর্ষণের শিকার ছোটবোন
আমির হামজা, স্টাফ রিপোর্টার :: রাঙ্গুনিয়ায় এক কিশোরী কন্যা (১৫)কে ধর্ষণের অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া-রাউজান সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম’র তৎপরতায় মামলা দায়েরের মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে পালাতক অবস্থায় অভিযুক্ত ধর্ষক মো. সাজ্জাদ (২২)’কে আটক করতে সক্ষম হয়।
পুলিশের সূত্রে জানা যায়, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার গাবতল এলাকার আব্দুশ শুক্কুর ওরফে লেবার শুক্কুরের পুত্র সাজ্জাদ দীর্ঘদিন যাবত স্থানীয় এক তরুণীর সাথে প্রেমের সম্পর্কে লিপ্ত ছিল। ঐ তরুণীর বাবা-মা দুজনেই বিদেশে থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ধর্ষক সাজ্জাদ তরুণীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তার আপন কিশোরী ছোটবোন (১৫) এর দিকেও সাজ্জাদ খারাপ দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করে। এবং কি অভিযুক্ত ধর্ষক সাজ্জাদ ঐ কিশোরী’কে নানা কৌশলে যৌন আমন্ত্রণ করত। কিন্তু কিশোরী তাঁর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে ধর্ষক মো. সাজ্জাদ ব্যর্থ হয়ে প্রতিশোধস্বরূপ ঔ কিশোরীকে ধর্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়।
এই ঘটনায় পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক গত ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ধর্ষিতা কিশোরীকে মুঠোফোনে কৌশলে ডেকে নেয় সাজ্জাদ। এরপর ধর্ষক সাজ্জাদের সহযোগী আসামি রিপন (১৯) এর সহায়তায় মুখ চেপে ধরে তাকে অপেক্ষমাণ সিএনজি-অটোরিকশায় উঠিয়ে রাঙামাটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। ঐ কিশোরী চিৎকার করতে চাইলে ধর্ষক সাজ্জাদ তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। জোরপূর্বক সেখানে তাকে রাতভর ধর্ষণ করে সাজ্জাদ। পরদিন ধর্ষিতা কিশোরী সুযোগ বুঝে তার মামাকে ফোন করে নিজ অবস্থান জানান। সেই অনুযায়ী ধর্ষিতার মামা এবং অন্যরা ঘটনাস্থলে হাজির হওয়ার বিষয়টি টের পেয়ে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যায় ধর্ষক সাজ্জাদ ও সহযোগী রিপন।
এই ঘটনায় পরবর্তীতে গত ২ অক্টোবর (শুক্রবার) দুপুরে ধর্ষিতার নানী বাদী হয়ে রাঙ্গুনিয়া মডেল থানায় সাজ্জাদ ও রিপনকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের ৫ ঘন্টার মাথায় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া-রাউজান সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম’র প্রত্যক্ষ পরিকল্পনা, তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনায় উপজেলার হালিমপুর এলাকা থেকে প্রধান আসামি সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশের একটি চৌকস দল।
পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. হেলালুদ্দিনের আদালতে হাজির করা হলে সেখানে ১৬৪ ধারায় প্রদত্ত জবানবন্দিতে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে সাজ্জাদ। পরবর্তীতে আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় প্রদত্ত জবানবন্দিতে এ ধর্ষণকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে নিয়েছেন গ্রেপ্তারকৃত সাজ্জাদ। ধর্ষককে গ্রেফতারে পুলিশের এই তাৎক্ষনিক পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ধর্ষিতার পরিবারসহ স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া-রাউজান সার্কেল এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, ধর্ষণের ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে সেটা মামলা হিসেবে রেকর্ড করার পাশাপাশি আমরা আসামিকে গ্রেপ্তারে তৎপর হই। সেই অনুযায়ী গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অজ্ঞাত স্থানের উদ্দেশে পালিয়ে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তে প্রধান আসামি সাজ্জাদকে আমরা গ্রেফতার করি।
তিনি আরোও বলেন, কেউ নিষ্ঠুরতা করে পার পাবে না। দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া যখনই ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, আমরা বেশিরভাগ সময় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগটুকুও দিইনি। তার আগেই আমরা তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। আমাদের কাজ সবসময় মানুষের সেবায় নিয়জিত আছে এবং অব্যাহত থাকবেই।