সোমবার ● ৫ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » রাউজানে ষাটোর্ধ্ব সাধন বড়ুয়ার বিরুদ্ধে ১১ বছরের শিশু ধর্ষনের অভিযোগ
রাউজানে ষাটোর্ধ্ব সাধন বড়ুয়ার বিরুদ্ধে ১১ বছরের শিশু ধর্ষনের অভিযোগ
রাঙামাটি :: ২০২০ সালে এক বছরে এবার মহামারী করোনা ভাইরাসকেও ছাড়িয়ে গেছে ধর্ষণের ঘটনা। প্রতিদিন দেশে কোন কোন জেলায় ঘটছে নারী ও শিশু ধর্ষণের মতো ঘটনা। চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার আবুরখীল, নন্দনকানন, ১২ নং উরকিরচর ইউনিয়নে সাধন বড়ুয়া নামের ৬০ বছরের বৃদ্ধের বিরুদ্ধে ১১ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ রবিবার ৪ অক্টোম্বর রাউজান থানায় উপস্থিত হয়ে মৃত যামিনী বড়ুয়ার পুত্র সাধন বড়ুয়া (৬০) এর বিরুদ্ধে ধর্ষণের শিকার ১১ বছরের শিশুর পিতা ও তার বড় ভাই এবং তার ধর্ষিতা কণ্যা ছদ্মনাম কলি বড়ুয়া (১১) সহ আজ থানায় হাজির হয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে লিখিত ভাবে একটি এজাহার দায়ের করেন।
লিখিত এজাহার সূত্রে জানায়ায়, গতকাল ৩ অক্টোম্বর শনিবর বিকাল আনুমানিক ৪ টার দিকে অভিযুক্ত সাধন বড়ুয়ার বসতঘরের দক্ষিণ পার্শ্বের পুকুর পাড়ে নিয়ে একাধিক বার নাবালিকা শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়।
ঘটনার বিবরণে ধর্ষণের শিকার শিশুর পিতা জানান, তার স্ত্রী আনুমানিক ৮ বছর পূর্বে তার নাবালক পুত্র এবং তার মেয়ে কলি বড়ুয়া রেখে মৃত্যু বরন করেন। তার ছেলে ও মেয়ের দেখাশোন করার মত কেউ না থাকার কারণে তার ছেলে ও মেয়ে কলি বড়ুয়া (১১)কে লেখা পড়া ও দেখাশোনার স্বার্থে রাউজান থানাধীন আবুরখীল নন্দন কাননস্থ তার ছোটবোন এর তত্ত্বাবধানে তাহার শশুরবাড়িতে রেখে পড়াশোনা অব্যাহত রাখেন। অভিযুক্ত সাধন বড়ুয়া গতকাল ৩ অক্টোম্বর-২০২০ তারিখে বিকাল আনুমানিক ৪ টার সময় তার অবুজ মাতৃহারা নাবালিকা কণ্যা কলি বড়ুয়া (১১) কে অভিযুক্ত সাধন বড়ুয়া ফুসলাইয়া ও লোভ লালসা দেখাইয়া সাধন বড়ুয়ার বসতঘরের দক্ষিণ পার্শ্বের পুকুর পাড়ে জঙ্গলে নিয়ে তার মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষন করে এবং তার মেয়েকে ৫শত টাকার একটি নোট ধরিয়ে দেয়। ধর্ষনের শিকার পিতার বোন বোন তার মেয়ের হাতে ৫শত টাকার নোট দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার মেয়ে কলি বড়ুয়া তার বোনের কাছে স্বীকার করে যে, তার অবুজ নাবালিকা শিশুকণ্যা কলি বড়ুয়া (১১ কে দীর্ঘদিন ধরিয়া ফুসলিয়ে ও লোভ লালসা দেখিয়ে অভিযুক্ত সাধন বড়ুয়া তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষন করিয়া আসিতেছে। বিষয়টি মোবাইল ফোনে গতকাল ৩ অক্টোম্বর-২০২০ তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার সময় মোবাইল ফোনে ঘটনার বিষয়টি জানালে তিনি ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকায় আজ ৪ অক্টোম্বর-২০২০ তারিখ সকাল আনুমানিক ৯টার সময় আবুরখীল, নন্দনকানন তার ছোট বোনের বাড়ীতে তিনি বোন ও তার অবুজ শিশুকণ্যা কলি বড়ুয়াকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে অভিযুক্ত সাধন বড়ুয়া (৬০) তার মেয়েকে ধর্ষন করিয়া একটি ৫শত টাকার একটি নোট ধরিয়ে দেয় বলে স্বীকার করে। তার অবুঝ নাবালিকা কণ্যা কলি বড়ুয়া (১১) কে নিয়া রাউজান থানা হাজির হয়ে এবং ন্যায় বিচারের প্রার্থনা করেন।
ধর্ষণের শিকার ১১ বছরের শিশুর পিতা বলেন, রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ্ আল হারুনের পরামর্শে ধর্ষণের বিচার চেয়ে এজাহারটি রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি-তদন্ত) নূর হোসেন দুলাল এর নিকট জমা দেওয়া হয়। মামলা নং অনলাইনে এন্ট্রি করার পরে জানাবেন বলেছেন ওসি তদন্ত।
তিনি আরো বলেন, রাউজান উপজেলার ১২ নং উরকিরচর ইউনিয়নে ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান অমিত বিজয় বড়ুয়ার আহবানের সাড়া দিয়ে স্থানীয় ভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার লক্ষ্যে রবিবার রাত ৯টার দিকে একটি গ্রাম্য শালিস বৈঠকের আমি আমার কণ্যাকে নিয়ে উপস্থিত হলে স্থানীয় মুরব্বীরা আমাকে জানায়, একজন মহিলা মেম্বারকে সাথে নিয়ে বে-সরকারী ভাবে নিজেদের উদ্যোগে ধর্ষনের শিকার শিশুটির ডাক্তারী পরিক্ষা করাতে। আমি তাদের বলেছি, বে-সরকারী ভাবে নিজেদের উদ্যোগে ধর্ষনের শিকার শিশুটির ডাক্তারী পরিক্ষা করার আইনগত কোন ভিত্তি নাই।
সরকারী ভাবে পুলিশের মাধ্যেমে অভিযুক্ত ধর্ষক এবং ধর্ষনের শিকার শিশুটির ডাক্তারী পরিক্ষা সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন ধর্ষনের শিকার শিশুটির পিতা ও তার স্বজনরা। কিন্তু যদি ডাক্তারী পরীক্ষায় ধর্ষনের আলামত পাওয়া না যায় তাহলে আমাদের পুরো পরিবারটির বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়েছেন ওয়ার্ড মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান অমিত বিজয় বড়ুয়া। আমরা এখন নিরাপত্ত্বাহীনতায় ভুগছি। তারপরও আমি এ ধর্ষকের শাস্তি চাই।
এবিষয়ে রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ্ আল হারুনের সাথে গণমাধ্যম কর্মীদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে ধর্ষনের এজাহারের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে এধরনের কোন অভিযোগ পাননি বলে তিনি এজাহারের বিষয়টি অস্বীকার করেন।