বৃহস্পতিবার ● ৮ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে দুই আ’লীগ নেতার অস্তিত্বের লড়াই
বিশ্বনাথে দুই আ’লীগ নেতার অস্তিত্বের লড়াই
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিজয় নিয়ে নামি-দামি দুই আ’লীগ নেতার অস্তিত্বের লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ দুই নেতার একজন হচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও সদ্য সাবেক জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী। অপরজন হচ্ছেন জেলা আ’লীগের সাবেক উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য ও নৌকা প্রতীকে বিজয়ী বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া।
উভয় নেতার বাড়িই হচ্ছে এই ইউনিয়নে। কিন্তু তাদের নিজেদের ইউনিয়ন নির্বাচনে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর জন্যে নৌকার পরাজয় হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। তাদের মতে দুই নেতার রাজনৈতিক জীবনেও অনেকটা অস্তিত্বের লড়াই হয়ে দাঁড়াবে।
জানাযায়, সীমানা নির্ধারণ জটিলতার কারনে প্রায় ১৭ বছর পর আগামী ২৯ অক্টোবর ওই ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গতমাসে তফসীল ঘোষণার পর চেয়ারম্যান পদে নৌকার দাবিদার হন ৫ জন আ’লীগ নেতা। তারা হচ্ছেন উপজেলা ও ইউনিয়ন আ’লীগের উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য সামছু মিয়া লয়লুছ, উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি জবেদুর রহমান, আসাদুজ্জামান আসাদ, আ’লীগ নেতা আব্দুল মানিক ও আব্দুল তাহিদ।
অবশেষে ২৯ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ হল রুমে জেলা ও উপজেলা আ’লীগের নেতৃবৃন্দের এক মতবিনিময় সভা শেষে ওই ৫ প্রর্থীদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।নির্বাচনে স্থানীয় ইউনিয়ন আ’লীগের কমিটি থেকে ২০ জন ভোটারের ভোটের মাধ্যমে দলীয় মনোনীত প্রার্থী বাচাই করেন নেতৃবৃন্দ। এতে ৯ ভোট পেয়ে নির্বাচীত হন জবেদুর রহমান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী সামছু মিয়া লয়লুছ ৬ ভোট পান।
আ’লীগের দলীয় প্রার্থী নির্বাচীত হওয়ার পর উপজেলা আ’লীগের সভাপতিসহ নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে ৪ অক্টোবর উপজেলা নির্বাচন অফিসে মনোনয়নপত্র ও দাখিল জবেদুর রহমান। একই দিনে সামছু মিয়া লয়লুছ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। উভয় প্রার্থীই মাঠে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে নৌকার প্রার্থী জবেদুর রহমান বলেন, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আ’লীগসহ তৃনমূল সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সবাই আমার সাথে রয়েছেন। আর বিদ্রোহী প্রার্থীর বিষয়টা আমার দেখার বিষয় নয়, সেটি আমার সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ দেখবেন বলে জানান।
বিদ্রোহীপ্রার্থী সামছু মিয়া লয়লুছ বলেন, তিনি দলীয় কোন সিদ্ধান্তে নয়, স্থানীয় ওয়ার্ডবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি প্রার্থী হয়েছেন।
জানতে চাইলে সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন- কেউ প্রার্থী হলে কিছুই করার নেই। তবে আমরা চেষ্ঠা করবো তাকে নির্বাচন থেকে সরানোর।
এদিকে, এস এম নুনু মিয়া বলেন, ওই নির্বাচনে আ’লীগের কোন বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে কটোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপার উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আলহাজ্ব পংকি খান বলেন- দল থেকে বিদ্রোহী কোন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
বিশ্বনাথে বিকাশ প্রতারণার ফাঁদে কৃষাণী পারভিন
বিশ্বনাথ :: কখনো বিকাশ কর্মকর্তা, কখনো বা এনজিও কর্মী সেজে গ্রামের সহজ-সরল গ্রাহকদের বোকা বানিয়ে প্রতিনিয়ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একদল প্রতারক চক্র। তারা নানা কৌশলে লুট করছে টাকা। আর প্রতারণার শিকার হয়েও কিছুই করার থাকছেনা গ্রাহকদের।
গেল ক’দিন পূর্বে বিকাশ প্রতারণার শিকার হন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের বাউসী গ্রামের কৃষাণী পারভিন বেগম। তিনি এনজিও প্রতিষ্ঠান ‘সূচনা’র সদস্যও। প্রতারকচক্র ০১৮ সিরিয়ালের একাধিক নাম্বার থেকে তার ব্যবহৃত ০১৭৫২৬২৪৭৮৭ নাম্বারে রাত ৮ টায় ফোন দেয়। নিজেকে ‘সূচনা’র কর্মী দাবী করে বলে, ‘হাঁস-মুরগি পালনের জন্যে পূর্বের ন্যায় বিকাশের মাধ্যমে আপনাকে কিছু টাকা দেয়া হবে। টাকা পাঠাতে আপনার বিকাশ পিন নাম্বার লাগবে’। কথা মতো পিন নাম্বার দেয়া মাত্র কৃষাণী পারভিনের বিকাশ একাউন্ট থেকে ১২শ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্র। একই ভাবে গ্রামের কৃষ্ণা রাণী বৈদ্যা ০১৭০৩১৪১৫৫২৫ নাম্বারে ফোন দেয় প্রতারকরা। বিকাশ কর্মী পরিচয় দিয়ে জানায়, তার একাউন্ট সচল রাখতে তাদের কথা মতো বিভিন্ন কোড নাম্বার দিতে। এক পর্যায়ে পিন নাম্বারের সাথে ২১১ যোগ করতে বলায় তিনি যোগ করে ফলাফল জানিয়ে প্রতারণার শিকার হন। একই কায়দায় স্থানীয় পীরের বাজারের ব্যবসায়ী ফাহিম আবরার প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে খুইয়েছেন ৫ হাজার টাকা। শুধু এ ক’জনই নয়, প্রতিদিন এভাবে শতাধিক গ্রাহক শিকার হয়েছেন বিকাশ প্রতারণার। প্রতারকদের ব্যবহৃত নাম্বারগুলো হচ্ছে ০১৭৯৬২০৬৫৩৩, ০১৪০৩০৮৫৫৩৯, ০১৭৫৯৫৯৯৮৬১, ০১৭৫১৫৮৮২৬৫।
পারভিন বেগম জানান, ‘সূচনা’র কথা বলায় আমি সরল বিশ্বাসে পিন নাম্বার দিয়েছি। আমার প্রশ,œ আমি যে ‘সূচনা’র সদস্য এসব ওরা জানে কি করে?
কৃষ্ণা রাণী বৈদ্য জানান, প্রতারণার শিকার হয়ে বিকাশ অফিসে ফোন করণে তারা কেবল পিন পরিবর্তন করার পরামর্শ দেন। এর বাহিরে কোন সহায়তা পাইনি।
এনজিও সংস্থা ‘সূচনা’র উপজেলার প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. মোসাব্বির রহমান বলেন, আমি নিশ্চিত এটা স্থানীয় প্রতারক চক্রের কাজ। ‘সূচনা’র কেউ বিকাশের পিন চাওয়ার কোন সুযোগ নেই। চাইলেই তার চাকুরী চলে যাবে।
স্থানীয় বিকাশ এজেন্ট তাজুল ইসলাম, প্রতিদিন একাধিক গ্রাহক প্রতারণার শিকার হয়ে আমাদের কাছে আসেন। আমাদের কিছুই করার নেই শান্তনা দেয়া ছাড়া। প্রতারকচক্রের প্রত্যেকটা সিম কারো না কারো নামেতো নিবন্ধিত। একমাত্র প্রশাসনই চেষ্ঠা করলে ওদের পাকড়াও করতে পারবে।
এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইন-চার্জ শামীম মূসা বলেন, গতকাল (৭ সেপ্টেম্বর) একজন গ্রাহক বিকাশ প্রতারণার শিকার হয়ে সাধারণ ডায়েরী করেছেন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।