বৃহস্পতিবার ● ৮ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » অপরাধ » গাইবান্ধায় জোড়া খুনের মামলায় ৩ আসামীর মৃত্যুদন্ড
গাইবান্ধায় জোড়া খুনের মামলায় ৩ আসামীর মৃত্যুদন্ড
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের পূর্ব ঝিনিয়া গ্রামে জোড়া খুনের মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদন্ডের রায় দেয়া হয়েছে। মামলার অপর চার আসামির মধ্যে আবুল হোসেন নামে একজনের মুত্যু হয়েছে এবং ৩ জন নারী আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ৮ অক্টোবর দুপুরে গাইবান্ধা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিক এই রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলো- হাফিজার রহমান, হযরত আলী ও আজিজল হোসেন। তারা সহদর ভাই। মৃত্যুদন্ডদের মধ্যে হাফিজার রহমান পলাতক রয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আদালতে দু’জন উপস্থিত ছিল।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের পূর্ব ঝিনিয়া গ্রামের হযরত আলীর সাথে একই গ্রামের আব্দুল জলিলের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে হযরত আলী আমন ধান চাষ করে। আদালতে মামলার রায় পেয়ে ২০১৬ সালের ১২ নভেম্বর আব্দুল জলিল তার লোকজন নিয়ে ধান কাটতে যায়। ধান কাটার বিষয়টি আগেভাগে জানতে পেরে হযরত আলী গোপনে জমির পার্শ্ববর্তী তার রাইচ মিল থেকে বিদ্যুতের তার পেতে সম্পুর্ণ জমি ঘিরে রাখে। ওইদিন সকালে আব্দুল জলিলের আত্মীয় তসলিম উদ্দিন নারী-পুরুষ শ্রমিক নিয়ে ওই জমিতে ধান কাটতে নামলে প্রথমে তসলিম উদ্দিন বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে তার চাচাতো বোন মর্জিনা খাতুনও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। এতে আরও ৪ জন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়।
এ ঘটনায় নিহত তসলিম উদ্দিনের বাবা মফিজল হক বাদি হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় ওইদিন রাতে ৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। সেসময় পুলিশ আবুল হোসেনের ছেলে হযরত আলী, হাফিজার রহমান, আজিজল হক, মৃত বজর আলীর ছেলে আবুল হোসেন, হযরত আলীর স্ত্রী গোলেনুর, আবুল হোসেনের স্ত্রী জরিনা বেগম, মোজাহার আলীর স্ত্রী আকলিমা বেগম ও হাবিজার রহমানের স্ত্রী মোর্শেদা আক্তারকে গ্রেফতার করে।
গাইবান্ধা জেলা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, এই নৃশংস হত্যাকান্ডে অপরাধীদের অপরাধ সন্দেহাতীত প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক ৩ আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডের এই রায় ঘোষণা করেন।
গাইবান্ধায় সাতদিনব্যাপী ফুড কনটেস্ট বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার ফুড লাভারস গ্রুপের উদ্যোগে ফেসবুক পেজে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত সাতদিনব্যাপী ফুড কনটেস্ট অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার জেলা শহর সংলগ্ন ঘাঘট নদীর পাড়ে স্থাপিত নান্দনিক রেস্টুরেন্ট ঘাঘট পাড় সেন্টার মিলনায়তনে পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ঘাঘট পাড় সেন্টারের সেফ মো. হাবিব খানের তৈরী লাল গাজর দিয়ে আকর্ষনীয় একটি ফুলের তোড়া প্রদর্শিত হয়।
ফুড লাভারস ফেসবুক পেজের এ্যাডমিন গাইবান্ধা জেলা এপেক্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট এ.এইচ এম মনোয়ার হোসেন লাভলুর সভাপতিত্বে এতে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের সভাপতি কেএম রেজাউল হক, সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সাবু, ফটো সাংবাদিক কুদ্দুস আলম, অ্যাড. সরদার রোকনুজ্জামান পলাশ, ঘাঘট পাড় সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী মাকসুদার আক্তার তনু প্রমুখ। এছাড়াও ফুড লাভারস গ্রুপের মডারেটরদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন আলিফ রহমান বিজয়, মাহীম ইবনে খুদি, রাকিবুল হাসান, আব্দুল্যাহ ইবনে খুরশিদ, সাহানা কেমি।
ফুড কনটেস্টে ৫১৬টি খাবারের ছবি নিয়ে ১৫৯ জন প্রতিযোগি স্বত:স্ফুর্তভাবে অংশ গ্রহণ করে। এতে ২২ হাজার ৩৯৮ জন লাইক এবং ১২ হাজার ৬৯০ জন কমেন্ট করে। এসমস্ত লাইক কমেন্ট ও বিচারক প্যানেলের মূল্যায়নের ভিত্তিতে ১৬ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রথম স্থান অধিকার করে মো. মেহেদী হাসান, দ্বিতীয় খাদিজা আকতার লতা এবং তৃতীয় হয়েছে ফারিয়া কবির বুসরা। এছাড়া আরও ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। তারা হলো- হামিদুল ইসলাম, মুর্তজা আফরোজ নাফিস, মামুন হোসেন, সুমাইয়া বিনতে মোর্শেদ মেধা, ইসতিয়াক রহমান, কনক রহমান, লিরা খান, মো. আসাদুজ্জামান রিয়াদ, এসএ নিজি ও শেখ মো. মোশারফ হোসেন। এছাড়া বাংলাদেশের অন্যতম ফটো সাংবাদিক কুদ্দুস আলমের নির্বাচনে সেরা ৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। তারা হলেন- রওজাতুন্নাহার লাবণ্য, মো. হাবিব খান ও রায়হানুল ইসলাম কাজল। বিজয়ীদের ক্রেস্ট এবং নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। এরমধ্যে প্রথম স্থান অধিকারকারি মেহেদী হাসান তার পুরস্কারের অর্থ শিশুদের খাদ্য বিতরণের জন্য ব্যয় করার ঘোষণা দেয়।
গাইবান্ধার মানুষের মধ্যে খাদ্য ও স্বাস্থ্য সচেনতা তৈরী এবং জেলায় গড়ে ওঠা উন্নতমানের নতুন নতুন রেস্টুরেন্ট, ক্যাাটারিং ও হোম ফুড ডেলিভারী সার্ভিসের তথ্য মানুষের কাছে পৌছে দেয়া এবং গ্রাহক রিভিউয়ের মাধ্যমে উন্নতমানের খাদ্য বিষয়ক প্রচার প্রচারণা চালানোর লক্ষ্যে গাইবান্ধার ফুড লাভারস গ্রুপটি এবছরের ২৪ জুলাই থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। বর্তমানে এ গ্রুপটির সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার।