শিরোনাম:
●   সফল হতে চাইলে সরকারকে এজেন্ডা কমিয়ে আনা দরকার ●   খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের নির্বাচিত নতুন কমিটির প্রথম সভা ●   খেজুর গাছের দায়িত্ব নিলো মানুষ যে সেচ্ছাসেবী নামের সংগঠন ●   শ্রমিক নেতা শহীদুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির শোক ●   কাপ্তাইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ছাত্রের পুনর্বাসনে মানবিক সহায়তায় ৪১ বিজিবি ●   সূর্যের দেখা নেই, আত্রাইয়ে আবারও বাড়েছে শীতের তীব্রতা ●   মিরসরাইয়ে গাছের চারা বিতরণ ●   কাপ্তাইয়ে জাতীয় সমাজসেবা দিবস উদযাপন ●   বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে সমস্যা জানালেন সিজিএএ নেতারা ●   খাগড়াছড়িতে ট্রাক চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত ●   নবীগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা বিজয় রায়ের পরলোক গমন ●   কাপ্তাইয়ে হালদা নদীর মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র ও সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধকরণ সেমিনার অনুষ্ঠিত ●   ঈশ্বরগঞ্জে ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ●   খাগড়াছড়িতে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ●   পানছড়িতে তারণ্যের উৎসব ২০২৫ উদযাপন ●   এম.এ হায়দার প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের মা সমাবেশ ●   রাউজানে বাঁধাকপি ও ফুলকপির বাম্পার ফলন ●   ভারত তীর্থমুখ পৌষ মেলায় আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্য সকল প্রস্তুতি গ্রহন ●   ঈশ্বরগঞ্জে শ্রমিক দলের আনন্দ মিছিল ●   ভদন্ত জোতির্ময় মহাথেরোর মাতা মনিবালা বড়ুয়ার স্মরনে সংঘদান অনুষ্ঠিত ●   ঈশ্বরগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত ইউএনওর মতবিনিময় ●   রাঙামাটিতে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভার বিষয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিবাদ ●   দুই মালিক সমিতির দ্বন্দ্বে বাস চলাচল বন্ধ : ৫ হাজার শ্রমিক বেকার ●   শামছুল হক স্মৃতি আইডিয়াল স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ●   ফাতেমা নগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থলুটের অভিযোগ ●   মিরসরাইয়ে সোনালী স্বপ্নের উদ্যোগে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ ●   ঘোড়াঘাটে অবৈধ দখলে রাস্তা ও ফুটপাথ জনদূর্ভোগ চরমে ●   কাউখালী পাইন বাগান দারুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত ●   কুষ্টিয়ায় সমিতির টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বে যুবকের হাত কর্তন ●   অপহরণ, ধর্ষণ ও নির্যাতনে নয় পাপিয়া মারা গেছে ক্যান্সারে
রাঙামাটি, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
সোমবার ● ১২ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » হাজারো প্রতিকূলতায় অনলাইন ক্লাস
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » হাজারো প্রতিকূলতায় অনলাইন ক্লাস
সোমবার ● ১২ অক্টোবর ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

হাজারো প্রতিকূলতায় অনলাইন ক্লাস

ছবি : নজরুল ইসলাম তোফানজরুল ইসলাম তোফা :: সারা বিশ্বসহ পুরো বাংলাদেশে করোনার করাল গ্রাসে বিপর্যস্ত। থমকে আছে জীবনের গতি। সমস্যা সমাধানকল্পে মানুষ হয়ে পড়ছে নিরুপায়। মৌলিক চাহিদার জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে রাষ্ট্র সহ পরিবার। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসাসহ সকল খাতে দেখা দিয়েছে খুব মন্দাভাব। সুতরাং প্রতিটি দেশের মত এ বাংলাদেশও নিজস্ব সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে যেন করোনাকালে জীবনযাত্রা মানটা গতিশীল রাখতে চেষ্টা চালাচ্ছে। যা বলতে তাহলো শিক্ষাখাতেও দেখা দিয়েছে বৃহৎ স্থবিরতা। এ স্থবিরতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইন ক্লাসের বিস্তার ঘটছে অতিদ্রুত গতিতে। প্রাইমারি থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ে অনলাইনে ক্লাস চালু করেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। বহু শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের কাছে বিষয়টি একেবারেই নতুন। তথাপি বিদ্যমান বাস্তবতার কারণেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসের দিকে ঝুঁকছেন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের যেন দিনে দিনে পড়াশোনাও থমকে গেছে। এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো, এমন এই করোনা কালের বাস্তবতাতে লকডাউন, আইসোলেশন, হোম কোয়ারেন্টাইন, সোশ্যাল ডিস্টেন্স ইত্যাদি যে সব শব্দ গুলো ও পরিস্থিতির সাথেই আমরা পরিচয় হয়েছি। তদ্রূপ অনলাইন ক্লাসের সাথেও সবার পরিচয় হচ্ছে। আগে ছিলনা এখন আসছে অনেক কিছু নতুন শব্দ। এই শব্দগুলোকে নিয়েই বিরূপ পরিস্থিতিতে বসবাস করছেন অনেকেই। বিশেষ করে প্রবীণ শিক্ষক এবং গ্রামাঞ্চলের শিক্ষক বা ছাত্র/ছাত্রীরা। শিক্ষাবিদরা একদিকে যেমন দেখছেন অসম্ভাবনা তেমনি অন্যদিকে সম্মুখীন হচ্ছেন বিভিন্ন সমস্যায়। অনলাইনে ক্লাস নিয়ে নানান জনের ভাবনাগুলো থেকেই উঠে আসছে এভাবে ক্লাস নিয়ে তেমন লাভ হবে না। বলা যায় যে, শুভঙ্করের ফাঁকি! তবুও শিক্ষা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে না পড়ে, সেটাই সকলের উদ্দেশ্য বা বর্তমান সরকারের সুচিন্তা। সুতরাং এজন্যই না পাওয়ার চেয়েও কিছুটা পাওয়া যাবে বলেই অনলাইনে ক্লাসের গুরুত্বের কথা ভাবছেন।

সমস্যা হলো যে অনলাইনে পাঠদানের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যালেন্স, নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট ডিভাইসের প্রয়োজন অত্যাবশ্যক। তা বহু ছাত্র/ছাত্রী এবং শিক্ষকদের কাছে নেই। বিশ্ববিদ্যালয় এবং শহরের কলেজের শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগের ইন্টারনেট ডিভাইস অর্থাৎ মোবাইল এবং ল্যাপটপ হয়তো থাকে। তবে নেটওয়ার্কের সহজলভ্যতা নিয়ে গ্রামাঞ্চলে বহু ঝামেলা রয়েছে। যাদের ইন্টারনেট ডিভাইস নেই, তাদের জন্যে ডিপার্টমেন্টভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে হয়তো কিছুটা উপকৃত হবে। আরও একটা কমন শেয়ার ড্রাইভও জরুরি যেখান থেকেই শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ডকুমেন্ট গুলোকে ডাউনলোড করে নিতে পারে। সবার কথাকে চিন্তা করতে হবে। ইন্টারনেট ব্যালেন্স ক্রয় করাটাও এখন অনেকের জন্যেই কষ্টকর। সে দিকেও একটা ভাল সিদ্ধান্ত থাকা দরকার বলে মনে করি।

জানা দরকার যে,সরকারী হিসাবে বাংলাদেশে প্রায় ৬৪ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৭ হাজারের মত মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ২হাজার ৫শত কলেজ আছে, তার মোট শিক্ষার্থী প্রায় ৫ কোটি। এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসে যুক্ত করা একটি বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ। দেশের অনেকগুলো এলাকায় ইন্টারনেট কিংবা টিভির আওতায় নেই। তাই, অনেকেই যেন ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে বা অনলাইনে শিক্ষাকার্যক্রম হতে বঞ্চিত হচ্ছে। আবার একজন ছাত্রের নিকট থেকে জানা, অনলাইনে যেহেতু অনেকগুলো ডিভাইসের মাধ্যমেই ছাত্র/ছাত্রীরা লগ ইন করছে, তাই এত গুলি যন্ত্রের শব্দের ফলে তৈরি হচ্ছে প্রচন্ড নয়েস। তাই অনলাইন ক্লাসের জন্যে জরুরি স্মার্টফোন/ল্যাপটপ/ট্যাব নেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে কি না তা অনিশ্চিত। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের এককালীন সুদ বিহীন ঋণদান কিংবা ঋণ এবং কিস্তিতে ল্যাপটপ/ট্যাব/স্মার্টফোন কেনার সু-ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি ছিল। যা করাই হয়নি। কিছু দিন আগেই প্রকাশিত ডেটা প্যাকেজের মূল্য বিচারে সারাবিশ্বের চেয়ে বাংলাদেশের মূল্য অনেক বেশি। করানোর এমন সময়েই শিক্ষার্থীদের ‘পার্টটাইম আয়ের অংশ বন্ধ’ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ বর্তমানে আর্থিক সংকটে রয়েছে। তার ওপর ডাটা প্যাকেজ কেনার নাই সামর্থ্য। নতুন বাজেটে ‘মোবাইল সার্ভিস চার্জ বৃদ্ধি’ করাতেই যেন ইন্টারনেটের খরচ আরো ৫% বাড়িয়ে দিয়েছে।

খুব কাছেরই এক শিক্ষক তিনি প্রকাশে অনিচ্ছুক, তিনি শিক্ষার্থীগুলোকে অনলাইন ক্লাসে যুক্ত করাতে না পেরে বলেন, একাধিক সমস্যা তুলে ধরেই ‘ছাত্র/ছাত্রীরা’ ক্লাস মুখী হচ্ছে না। অনলাইনের ক্লাসটি এক প্রকার অসম্ভব। তিনি আরো বলেন যেখানে কোন অপারেটর তাদের ৬৪ জেলাতে নেটওয়ার্ক কাভারেজ করতে সক্ষম নয়। আর ২ জি দিয়ে ফেসবুক চালাতে বহু কষ্ট হয়। তাতে ৩/৪জি নেট ছাড়া লাইভ ক্লাস সম্ভব হয় না। তাছাড়াও খুবই বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেব উচ্চ মূল্যের ইন্টারনেট। আবার বহু জনের ভালো মানের মোবাইল নেই, যাদের যা আছে তা হ্যাং হয়ে যায়। অনলাইনে ক্লাস চলাকালীন বাসায় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকা কিংবা বিভিন্ন ডিভাইস চালানোর দক্ষতা না থাকা, ইন্টারনেট না থাকা বা পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ না পাওয়ার দরুণ ক্লাসের ব্যর্থতা নেমে আসে। এমতাবস্থায় কিকরে ক্লাসের পরিপূর্ণতা ফিরিয়ে আনবেন, তা নিয়েই তো শিক্ষক-ছাত্র-অভিভাবক এবং সরকারের সকল মহল দিশেহারা। অনলাইনে ক্লাস শুধু তাত্ত্বিক পাঠদান সম্ভব হচ্ছে কিন্তু ব্যবহারিক ক্লাসটা না হওয়ার অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। শুধু মাত্র পরীক্ষার বৈতরণি পারি দিয়ে সেশনজট মোকাবেলা করাটা সম্ভব এছাড়া ব্যবহারিক ক্লাস দিয়ে শিক্ষার্থীর কখনোই সুফল বয়ে আনবে না। মানসম্মত শিক্ষার ঘাটতি থেকে যাবে। বলতেই হয় যে, চারুকলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ ক্লাসই হাতে কলমে ধরে ধরেই বারবার শিক্ষা দিতে হয়। এখানে ব্যবহারিক এক একটা ক্লাস ৫/৬দিন ৯টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবেই চলে। আবার মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা যদি হাতে কলমে শিক্ষা না নেয় তাহলে শুধুই সার্টিফিকেট অর্জন হব। তাদের নামের সাথেই একজন ডাক্তার যুক্ত হবে কিন্তু তারা স্বস্ব কর্মক্ষেত্রে যেন অদক্ষ থেকে যাবে। এ দেশে এমন বেশ কিছুটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তাদের শিক্ষা কার্য ক্রমে বারবার হাতে ধরিয়েই প্র্যাকটিস করাতে হয়, মুখের কথার গুরুত্ব খুবই কম।

এমতাবস্থায় এ অনলাইনে ক্লাস বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনাবিহীন যাত্রাটা অবশ্যই সংকটময়। সামাজিক ভাবে এমন অবস্থা আরও যেন বৈষম্যময় করে তুলছে। যা কিনা শিক্ষার্থীদের এক বড় অংশের ‘অনলাইন ক্লাস’ অনিশ্চিত করে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় চরিত্রের সঙ্গে বা চারুকলা কিংবা মেডিকেল চরিত্রের সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। আবার শিক্ষাক্ষেত্রে নানান বৈষম্যের বিষয় আলোচনায় এলেই অনেক শিক্ষকরা “ধরি মাছ না ছুঁই পানির মতো” রয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের চাপেও কোনো রকম প্রস্তুতি ছাড়াই সীমিত সক্ষমতা নিয়ে ক্লাস শুরু করেছে কেউ কেউ। আসলেই এইদেশে অনলাইন ক্লাসের জন্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলা হয় নি। তাই সবাই সীমিত পরিসরেই চালাতে চাইলেও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন সেটাও অনুপস্থিত আছে। তাছাড়াও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগই শিক্ষার্থীরা যেহেতু প্রত্যন্ত অঞ্চলে রয়েছে সেহেতু বলা যায় ‘নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট’ সেবার বিষ উপেক্ষিত রয়েছে। চারুকলা অনুষদ কিংবা চারুকলা কলেজের ব্যবহারিক এবং বিজ্ঞান অনুষদের ল্যাবভিত্তিক ক্লাস এখানে অনুপস্থিত। এছাড়াও বিজ্ঞান অনুষদের ফলিত বিভাগগুলো শুধু থিওরিভিত্তিক ক্লাস করছে। একই অবস্থাতে রয়েছে চারুকলা অনুষদ এবং কলেজ। শুধুই লেকচার দিচ্ছে তার বাইরে প্রাকটিক্যাল ক্লাসের যে প্রয়োজনীয়তা তা একেবারে যেন অনুপস্থিত আছে অনলাইন ক্লাসে। এছাড়াও সকল স্কুল কলেজ ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগের ক্লাস রুমের বাইরে যে পড়ার আবহ থাকে সে বিষয়ে কোনোই ইঙ্গিত নেই। তাই এই করোনাকালেই ছাত্র/ছাত্রীরা ‘ডিজিটাল লাইব্রেরির’ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছ। ক্লাসের বাইরে ম্যাটারিয়ালস দেওয়া ও শিক্ষার্থীদের লজিস্টিক সাপোর্টের বিষয়টিও আমলে নেওয়া হয় নি। সুতরাং, অনলাইনে ক্লাসটা যেন শুভঙ্করের ফাঁকি!

একটা সময় ছিল যখন ফোন এবং ল্যাপটপে মুখ গুঁজে থাকলেই জুটত কেবল বকুনি। কিন্তু এই করোনা বিপদে বা সঙ্কটে সন্তানদের মা-বাবারা খুব কষ্ট করেই মোবাইল কিনে দিচ্ছে। কোথাও চলছে ‘ভিডিও কনফারেন্স’ এবং কোথাও আবার হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ বা কোথাও নানান অ্যাপ নিয়ে ছাত্র-ছাত্রী কিংবা শিক্ষকদের ব্যতিব্যস্ততা। শহরের পাশাপাশি অনলাইনে ক্লাসে পাল্লা দিচ্ছে প্রত্যন্ত এলাকার নানান স্কুল কলেজও। বর্তমান সরকার সংসদ টিভিতে খুব নিয়মিতভাবে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্যে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করছে। এদিকে আশার খবর অনলাইনে ক্লাস শুরু করার জন্যে সরকার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে যেন জুম অ্যাপসের মতোই নিজস্ব একটি ‘অনলাইন প্লাটফর্ম’ তৈরির চেষ্টাও করছে। যাতে করে শিক্ষার্থীদের সু-শিক্ষা কার্যক্রমকে সেই অ্যাপসের মাধম্যেই যুক্ত করা যায়। এতে করে বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইন পাঠদান প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়া সম্ভব হবে। আবার শিক্ষাবর্ষের মেয়াদটা বৃদ্ধি করা হবে এ কথাও বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ দেশের শিক্ষার্থীর পড়া শোনাকে গতিশীল রাখার জন্যই ”শিক্ষা মন্ত্রণালয়” অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকেই যেন ‘আদর্শ’ মানছে। আবার যেন এটাও বলেছে, “সু-শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় অনলাইন মাধ্যমে দেখা দিয়েছে বেশ কিছু সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা।

তবুও আমরা একটি সুস্থ বিশ্বের, একটি সুস্থ পরিবেশের স্বপ্ন দেখি। আমরা স্বপ্ন দেখি জ্ঞান বা সু-শিক্ষা’র একটি আলোকিত বাংলাদেশের। একসময়েই করোনার দুঃস্বপ্ন থেমে যাবে। তার আগের সময় টুকু ভালো কিছু করবার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে। এক্ষেত্রে বহু সমস্যা, সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও অনলাইন ক্লাসের দিকে ঝুঁকতে হবে। বিদ্যমান সমস্যা ও অসুবিধা গুলো ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠে, ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্যেই হোক এবং করোনা কালিন মুহূর্তের জন্যই হোক অতিদ্রুত অনলাইন ক্লাসটাকে ‘শিক্ষা ও শিক্ষার্থী বান্ধব’ করে তুলতে হবে। এমন করোনা পরিস্থিতি কিযে হয় তা কেউ জানেনা। তাই এই পরিস্থিতিতে অনলাইনে ক্লাসের অন্যতম সফলতা হলো, দীর্ঘদিন ‘গৃহবন্ধি থাকা’ অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশুনার সাথে যুক্ত থাকতে পারছে।

তাই আপাতত ভালোয় মন্দয় মিশিয়েই চলছে অনলাইন ক্লাশ। বহু সমস্যা আছে, তবে এটার প্রয়োজনও আছে, যা অস্বিকার করা যাবে না। আশা করা যায় ধীরেধীরেই এই সমস্ত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে। অনলাইনে ও অফলাইনে স্বেচ্ছামূলক কাজ করার প্রতি শিক্ষক বা শিক্ষার্থীদেরকে আগ্রহী করে তুলতেই পারেন বর্তমানের সরকার। তাছাড়া দৈনন্দিন কাজে ব্যবহূত জরুরি অ্যাপ ও সফটওয়্যার শিক্ষা, শিক্ষার্থীদের জন্যে বিশেষত এটা হয়তো শ্রেষ্ঠ সময়, যা তার ‘স্কিল বৃদ্ধিতে সহায়ক’ হতেও পারে। শত শত প্রতিকূলতায় ডিজিটালাইজেশনের পথে যাত্রার প্রথম ধাপ। যুগের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিকায়ন গ্রহণ করে নিয়েই অনলাইন ভিক্তিক কর্মকাণ্ড সমূহ এগিয়েও নিয়ে যেতে পারে সম্মুখ যাত্রায়। অনস্বীকার্য, অনলাইন ক্লাসের বদৌলতে দূরত্বের কারনেই যে কোর্সগুলো করা সম্ভব হচ্ছিল না তা হয়েছে সহজলভ্য। অনেক শিক্ষার্থী এ সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়ে সারা বিশ্বের নামি-দামি বিদ্যাপীঠ হতে নিয়মিতভাবে কোর্স করে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকবে। সুতরাং মন্দের ভালো এই অনলাইনের ক্লাস। দোদুল্যমান সমস্যা দূরীকরণেই “বর্তমান সরকার” যেগুলো বৃহৎ পদক্ষেপ নিয়েছে তারমধ্যেই অনলাইনের ক্লাসটা অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য। যদিও স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়ার প্রযুক্তি ‘আছে বা নাই’ তার বৈষম্যের মাত্রা অনেকটা মারাত্মক। তবুও, একাডেমিক পড়াশোনার বাইরে অন্যান্য পড়া শোনা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্যসহ বিশ্ব সাহিত্য নিয়ে অধ্যয়ন করার জন্য এমন অনলাইন মাধ্যম অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

লেখক :: নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।





উপ সম্পাদকীয় এর আরও খবর

পার্বত্য চুক্তির ২৭ বছর : শান্তি চুক্তি পাহাড়ে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ পার্বত্য চুক্তির ২৭ বছর : শান্তি চুক্তি পাহাড়ে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ
একেএম মকছুদ আহমেদ এর সাংবাদিকতায় ৫৫ বছর :  গণমাধ্যমের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ, হামলা ও হুমকি বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থি একেএম মকছুদ আহমেদ এর সাংবাদিকতায় ৫৫ বছর : গণমাধ্যমের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ, হামলা ও হুমকি বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থি
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মৌলভীবাজারের পাঁচগাঁওয়ের দূর্গাপূজা ও কিছু কথা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মৌলভীবাজারের পাঁচগাঁওয়ের দূর্গাপূজা ও কিছু কথা
পার্বত্য চুক্তির ২৬ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ কি-কি বৈষম্যের স্বীকার তা নিয়ে একটি পর্যালোচনা পার্বত্য চুক্তির ২৬ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ কি-কি বৈষম্যের স্বীকার তা নিয়ে একটি পর্যালোচনা
আন্তর্বর্তীকালিন সরকার পাহাড়ের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিলে নিতে হবে গভীর বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে আন্তর্বর্তীকালিন সরকার পাহাড়ের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিলে নিতে হবে গভীর বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে
সবকিছু কেড়ে নিয়েছে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার আওয়ামীলীগ সবকিছু কেড়ে নিয়েছে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার আওয়ামীলীগ
রাঙামাটিতে ঐক্যবদ্ধ বড়ুয়া সমাজ গড়ে তোলার সম্ভবনার পথ দেখা দিয়েছে রাঙামাটিতে ঐক্যবদ্ধ বড়ুয়া সমাজ গড়ে তোলার সম্ভবনার পথ দেখা দিয়েছে
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১৯০০ সালের রেগুলেশান, (সংশোধিত) ১৯২০ আইনটি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পরিপন্থি নয় কি ? বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১৯০০ সালের রেগুলেশান, (সংশোধিত) ১৯২০ আইনটি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পরিপন্থি নয় কি ?
আগামীতে  কারা দেশ চালাবে ? …সাইফুল হক আগামীতে কারা দেশ চালাবে ? …সাইফুল হক
সীমান্ত সড়ক পশ্চাদপদ পার্বত্য অঞ্চলকে উন্নয়নের স্রোতধারায় একীভূত করেছে সীমান্ত সড়ক পশ্চাদপদ পার্বত্য অঞ্চলকে উন্নয়নের স্রোতধারায় একীভূত করেছে

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)