মঙ্গলবার ● ১৩ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » ঢাকা » ধর্ষণ প্রতিরোধে রাষ্ট্রপতির মৃত্যুদণ্ডের অধ্যাদেশ ধর্ষিতাদের জীবনাশংকা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে
ধর্ষণ প্রতিরোধে রাষ্ট্রপতির মৃত্যুদণ্ডের অধ্যাদেশ ধর্ষিতাদের জীবনাশংকা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে
ঢাকা :: বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক আজ এক বিবৃতিতে ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতন দমনে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ সম্পর্কে বলেছে, ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সম্ভব দ্রুততম সময়ে কার্যকরি সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। প্রয়োজন এই ব্যাপারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ৯০ দিনের মধ্যে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান কার্যকরি হলে ধর্ষিতার প্রাণহানির আশঙ্কা বেড়ে যাবে। ধর্ষিতা যাতে স্বাক্ষ্য দিতে না পারে তার জন্য তাকে মেরে ফেলার ভয়ানক রোমহর্ষক ঘটনাও বেড়ে যাবে। তদুপরি এই আইনের অপপ্রয়োগের আশঙ্কাও রয়েছে। বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, মাদক নির্মূলে গত তিন/চার বছরে চার শতাধিক ব্যক্তিকে বিচার-আচার ছাড়া হত্যা করা হলেও তাতে মাদক নির্মূল হয়নি, মাদকের ব্যবসাও কমেনি।
তিনি বলেন, কেবল মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালু করে হত্যা-খুনের মত ফৌজদারী অপরাধ কমেনি। তিনি উল্লেখ করেন, যে সকল দেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বহাল রয়েছে, সেসব অধিকাংশ দেশেই ধর্ষণের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাওয়ার তথ্য জানা যায় না।
তিনি বলেন, অধিকাংশ ধর্ষণের ঘটনাই সংঘটিত হয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ছত্রছায়ায়। ক্ষমতার বেপরোয়া ও নগ্ন প্রদর্শনীর মাধ্যমে অতীতের অসংখ্য ঘটনার বিচার না হবার কারণে। আর ধর্ষিতাদের বড় অংশই সমাজের গরীব ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠির পরিবারের সদস্য।
তিনি বলেন, ক্ষমতার অবৈধ ও অনৈতিক ছত্রছায়া বন্ধ না হলে যে রজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা ধর্ষণে প্রণোদনা যোগায়। ধর্ষকদের উৎপাদন-পুনরুৎপাদন ঘটায় জবাবদিহীতাহীন ও লাগামহীন এই ব্যবস্থার মূলোৎপাটন ছাড়া ধর্ষণের মত অপরাধসমূহকে নির্মূল করা যাবে না।
তিনি জাতীয় সংসদে এই অধ্যাদেশ আইনে পরিণত করার আগে সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নেবার পরামর্শ প্রদান করেন।
তিনি ধর্ষণ প্রতিরোধে রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিরোধ জোরদার করার আহ্বান জানান।