শনিবার ● ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » রাঙামাটিতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ২০ লক্ষ টাকার অবৈধ জ্বালানী কাঠ জব্দ
রাঙামাটিতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ২০ লক্ষ টাকার অবৈধ জ্বালানী কাঠ জব্দ
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (২০ফেব্রুয়ারী ২০১৬ : বাংলাদেশ : সময় : বিকাল ৪.১৫মিঃ) রাঙামাটি সদর জোন ১৬ ইনফেন্টারী রেজিমেন্টের মানিকছড়ি ক্যাম্পের সেনাবাহিনীর সদস্য, বন বিভাগের সদস্য ও মানিকছড়ি পুলিশ ফাড়ির সদস্যরা যৌথ অভিযান পরিচালনা করে ১৭ টি চান্দের গাড়ী ৩ টি মোটর সাইকেলসহ ১০ হাজার সিএফটি অবৈধ (পারমিট বিহীন) দেশীয় জ্বালানী কাঠ জব্দ করেছে৷
২০ ফেব্রুয়ারী শনিবার আনুমানিক রাত দেড় টায় রাঙামাটি সদরের মানিকছড়ি এলাকার মাদ্রাসার পিছনে ও আমতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অভিযান চালিয়ে ৪ টি স্থানে বিভিন্ন এলাকা থেকে পারমিট বিহীন দেশীয় জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করে মজুদ অবস্থায় কাঠভর্তি ১৩ টি ও খালি ৪ টি চান্দের গাড়ী এবং ব্যবসায়ীদের ব্যবহৃত চট্টমেট্রো-হ-১২-০৮৪০, চট্টমেট্রো-ল-১২-২৮১৪ ও চট্টমেট্রো-ল-১২-৭৬৬৩ মোটর সাইকেল যৌথ অভিযান পরিচালনা করে জব্দ করতে সক্ষম হয় ৷
এসময় দুইজন ব্যবসায়ী ও দুই জন শ্রমিক আটক করেন ৷ আটককৃতরা হচ্ছে মানিকছড়ি এলাকার মোঃ নুরুল হক এর পুত্র ছগির আহম্মদ, আব্দুল মাছুম এর পুত্র ওসমান গণি, রাঙ্গুনিয়ার মোঃ ইউনুছ এর পুত্র আইয়ুব আলি ও ইউনুছ আলির পুত্র মোঃ সেলিম বলে জানিয়েছেন মানিকছড়ি পুলিশ ফাড়ির আইসি এসআই সাফায়েত হোসেন ৷ জব্দকৃত জ্বালানী কাঠ ১০ হাজার সিএফটির আনুমানিক মূল্য ২০ লক্ষ টাকা ৷
রাঙামাটি সদরের মানিকছড়ি এলাকা থেকে দীর্ঘদিন যাবত একটি সিন্ডিকেট রাতের আঁধারে রাঙ্গুনিয়া এলাকার ইটভাটা গুলিতে জ্বালানী কাঠ পাচার করে আসছে ৷ মানিকছড়ি এলাকাটিতে গাড়ী ও নৌকা পথে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দেশীয় জ্বালানী কাঠ অবৈধ পন্থায় বন বিভাগের কোন ধরনের অনুমতি ছাড়া বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট কাঠ পাচারে সক্রিয় আছে দীর্ঘদিন যাবত ৷
এবিষয়ে রাঙামাটি অঞ্চলের প্রধান বন সংরক্ষক মোহাম্মদ শামসুল আজম বলেন, মানিকছড়ি এলাকাটি জুম বন বিভাগের, রাতের বেলায় এ এলাকায় আমাদের বন বিভাগের কর্মকর্তা ও বন প্রহরীরা নিরাপত্তা হীনতায় থাকেন, একারণে স্থানীয় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে অবৈধ জ্বালানী কাঠ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে ৷ মুলতঃ সেনাবাহিনীর সহযোগীতার কারণে এসমস্ত অবৈধ জ্বালানী কাঠ জব্দ করা হয়েছে ৷
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জ্বালানী কাঠ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সদস্য বলেন, এই এলাকার জ্বালানী কাঠগুলো মুলতঃ পাহাড়ের বিভিন্ন মালিক পাহাড়ীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা, এসব জ্বালানী কাঠ রাঙ্গুনিয়ার ইটভাটাতে বিক্রি করা হয় ৷ এখানে দু’টি সিন্ডিকেট রয়েছে- একটি পরিচালনা করেন পাহাড়ীরা অপরটি পরিচালনা করেন বাঙ্গালীরা ৷ এখানে যেসব জ্বালানী কাঠ জব্দ করা হয়েছে এগুলোর মালিক বাঙ্গালীরা ৷ এই জ্বালানী কাঠগুলি পাহাড়ীদের কাছ থেকে আগাম টাকা দিয়ে ক্রয় করা হয়েছে ৷ স্থানীয় প্রশাসন সব সময় বাঙ্গালীদের কাঠ জব্দ করেন, পাহাড়ীদের জ্বালানী কাঠ গুলোর মালিক কে বা কারা এবং এসব কাঠর সঠিক কাগজপত্র যাচাই বাছাই করেন না ৷ এর আগেও এলাকায় ডিজিএফআইকে লক্ষ করে পাহাড়ী যুবকদের মধ্যে কে বা কারা কান্ঠা’র মারবেল নিক্ষেপ করে ৷ তিনি আরো বলেন, এসব জ্বালানী কাঠ জব্দ করে বন বিভাগের তেমন কোন লাভ হবেনা,কারণ এসব কাঠ জব্দ করার পর এর পিছনে যে সরকারী অর্থ ব্যয়ের হিসাব দেখানো হয় বিক্রির সময় সে পরিমাণ অর্থ বন বিভাগের মাধ্যমে সরকারের কোষাগারে জমা হয় তা তিন ভাগের একভাগ ৷ যেমন এর আগেও এধরনের জ্বালানী কাঠ জব্দ করা হয়েছিলো, সেসব কাঠ বনবিভাগের অফিস প্রাঙ্গনে নিতে শ্রমিক ও ট্রাক ভাড়া বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা সেসব জ্বালানী কাঠ নিলামের মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে মাত্র দেড় লক্ষ টাকার মত ৷
এসব জ্বালানী কাঠ আবার নিলামের মাধ্যমে বন বিভাগ থেকে আমরাই কিনে নেবো, মাঝখানে হয়তো ১৫-২০ দিন এই জ্বালানী কাঠের ব্যবসা বন্ধ থাকবে ৷
জ্বালানী কাঠ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট এর এই সদস্য বলেন সবচাইতে ভাল হবে, বন বিভাগ আগের মত বিভিন্ন পাহাড় থেকে সংগহ করা জ্বালানী কাঠের ফারমিট ইসু করা প্রথা চালু করা ৷ এতে এই খ্যাত থেকে সরকার রাজস্ব পাবেন ৷