রবিবার ● ১৮ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » ধর্ম » শেষ মুহুর্তে শিল্পীর রঙ তুলির আঁচড়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে দেবীর রুপ
শেষ মুহুর্তে শিল্পীর রঙ তুলির আঁচড়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে দেবীর রুপ
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: বৈশিক করোনা মহামারির মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পুজা। আর মাত্র কিছু দিন বাঁকি শারদীয় দূর্গা পুজার। দূর্গা পুজাকে সামনে রেখে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার পূজা ম-প গুলোতে প্রতিমা তৈরিতে শিল্পীর রঙ তুলির আঁচড়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে দেবীর রুপ। শিল্পীদের নিপুন হাতে ইতোমধ্যে মাটির কাজ শেষ করে চলছে রঙ তুলির কাজ। শিল্পীর রঙ তুলির আঁচড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে দশভূজা দেবীদুর্গাসহ বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতিমূর্তী। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে দেবীদুর্গা শক্তি ও সুন্দরের প্রতীক। প্রতি বছর অশ্বরের বিনাশ কল্পে মা দেবী দূর্গা এই ধরাধামে আবির্ভুত হয়। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, সমাজ থেকে অন্যায় অবিচার গ¬ানি দূর করার জন্যই এই পূজার আয়োজন।
এবছর উপজেলায় ৪৭টি মন্ডপে পুজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সত্যেন চক্রবর্তী ।
পুজা উৎসবকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে মন্দির গুলোতে চলছে সাজসজ্জার প্রস্তুতি। ইতি মধ্যে বেশির ভাগ মন্ডপে প্রতিমায় মাটি লাগানোর কাজ প্রায় শেষ।কিছু কিছু মন্দিরে শুরু হয়েছে রং তুলির কাজ।
আগামী ২২-২৬ অক্টোবর ৫ দিন ব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পুজা অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় শিল্পী ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে আগত শিল্পীরা এখানে এসে প্রতিমা তৈরি ও রং তুলির কাজ করছেন। অন্যদিকে প্রতিমার পাশাপাশি বাদ্যযন্ত্র ঠিক ও তৈরী করতে ব্যস্ত সময় পার করছে ঢাক-ঢোল, কাঁশি ও বাঁশির কারিগররা।
আলাপচারিতায় নিজের সম্পর্কে ভবানীপুর ভবেশ মালাকার যা বললেন, ছোটবেলা থেকে কাদামাটি ও রঙতুলির সঙ্গে বেড়ে ওঠা ভবেশ মালাকারের জন্মস্থান নওগাঁ জেলার আত্রাই থানার ভবানীপুর গ্রামে। এখানে তিনি প্রতিমা তৈরি করে থাকেন। প্রতি বছর তিনি ২৫ থেকে ৩০ সেট প্রতিমা তৈরির অর্ডার নেন। এবার ও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ইতোমধ্যে ৭ সেট প্রতিমা ডেলিভারি দিয়েছেন তিনি। প্রতি সেট প্রতিমা তৈরিতে ব্যয় হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। তা আবার বিক্রি হয় ২৫ হাজার টাকায়।
এ বিষয়ে ভাবানীপুর সার্বজনীন দূর্গা মন্দির কমিটির সভাপতি শ্রী. অনুপ কুমার দত্ত বাদল জানান, করোনা পরিস্থিতির কারনে বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ ২৬ টি নির্দেশনা আমাদেরকে দিয়েছেন। বর্তমান সরকার তাদের সার্বিকভাবে সহযোগীতার পাশাপাশি আর্থিক ভাবে ও সহযোগীতা করে আসছে। এবং এবারের পূজায় তাদের আনন্দো ও বেশি হবে।
পুজাকে সামনে রেখে সম্ভবনার কথা জানালেন আত্রাই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোসলেম উদ্দিন জানান, শান্তিপূর্ন ভাবে হিন্দু ধর্মের প্রধান উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা অনুষ্ঠান সম্পুন্ন করার লক্ষে আইন শৃংখলা বাহিনী সজাগ দৃষ্টি রাখছে। আইন শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তিন স্থরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে এবং থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) দের বিভিন্ন মন্ডপের দায়িত্ব দিয়ে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সবকটি পূজা মন্ডপ গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকবে বলেও অফিসার ইনচার্জ জানিয়েছেন। অন্যান্য বছরের চাইতে এবার জোরালো প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করি এবারের পূজায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবেনা। তবে এ জন্য তিনি সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ছানাউল ইসলাম বলেন, বৈশিক করোনা পরিস্থিতির কারনে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের পুজা একটু ভিন্ন ভাবে পালিত হবে। আশা করছি সরকারী নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে পুজা অনুষ্ঠিত হবে।