বুধবার ● ২১ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » ধর্ষণবিরোধী লংমার্চে হামলার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ
ধর্ষণবিরোধী লংমার্চে হামলার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে ঢাকা টু নোয়াখালী লং মার্চের উপর সন্ত্রাসী হামলা এবং ফেনীতে পাহাড়ি তরুণী ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাঙামাটি জেলা শাখা।
আজ বুধবার ২১ অক্টোবর সকাল ১১টায় রাঙামাটি সদর উপজেলার কুদুকছড়িতে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে পিসিপি নেতা এক্যাসন চাকমা’র সঞ্চলনায় বক্তব্য রাখেন পিসিপি’র রাঙামাটি জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নিকন চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা শাখার সহ-সভাপতি রুপসী চাকমা।
সমাবেশে বক্তারা সারাদেশে নারী ধর্ষণ নির্যাতন বৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ধর্ষণের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলন এবং ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করে আইন সংশোধন করার পরও ধর্ষণ থামছে না। এ যেন করোনা মহামারির চেয়েও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেশে দীর্ঘ বিচারহীনতা, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া এবং অপরাধীরা ক্ষমতাশালীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকার কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, সরকার ধর্ষণ বন্ধে সঠিক পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো ধর্ষণের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করছে তাদের উপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। গত ১৭ অক্টোবর ফেনীতে ঢাকা টু নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে যাওয়া ধর্ষণবিরোধী লংমার্চে সরকার দলীয় দুর্বৃত্তরা ও পুলিশ দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে। বক্তারা এ হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদানের দাবি করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি তুলে ধরে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্গ্রামে একদিকে রাজনৈতিক দমনপীড়ন ও অন্যদিকে ধর্ষণ যেন একাকার হয়ে গেছে। এখানে জাতিগত নিপীড়নের অংশ হিসেবে ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার কারণে ১৯৯৬ সালে হিল ফেডারেশন নেত্রী কল্পনা চাকমা অপহরণ থেকে শুরু করে এ যাবত যত পাহাড়ি নারী ধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে তার কোন ঘটনারই বিচার হয়নি। ফলে পাহাড়ে চলমান ধর্ষণের ঘটনাগুলোর যে বিচার হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে বলে বক্তারা মন্তব্য করেন।
বক্তারা ফেনীতে পাহাড়ি তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, নারীরা আজ কোথাও নিরাপদ নয়। ফেনীতে বান্ধবীর বাসায় বেড়াতে যাওয়া পাহাড়ি তরুণীকে দফায় দফায় ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে। গতকাল কাপ্তাইয়ের বাঙ্গালহালিয়ায় এক মারমা কলেজ ছাত্রীকে চলন্ত সিএনজিতে ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়েছে। গত মাসে খাগড়াছড়ি সদরের বলপিয়ে আদামে নিজ বাড়িতে ৯ জন সেটলার কর্তৃক এক প্রতিবন্ধী নারী ও সিলেটে এম সি কলেজে ছাত্র লীগের দুর্বৃত্ত কর্তৃক এক নারী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। নোয়াখালীতে বিবস্ত্র করে নারীকে নির্যাতনের মতো বর্বর ঘটনাসহ নানা জায়গায় অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে। এমন ঘটনা প্রতিনিয়তই বাড়ছে বৈ কমছে না। তাই শুধু ঘষামজা করে আইন সংশোধন করলে হবে না, আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।