বুধবার ● ২১ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » দুর্গোৎসব সীমিত হওয়ায় গাইবান্ধার রঙিন পালপাড়া এবার বর্ণহীন
দুর্গোৎসব সীমিত হওয়ায় গাইবান্ধার রঙিন পালপাড়া এবার বর্ণহীন
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আনুষ্ঠানিকতায় দুর্গাপূজা করতে হবে। কোনো উৎসব করা যাবে না। দুর্গাপূজা মন্ডপ সংলগ্ন স্থানে বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠিত মেলার স্থানগুলোতেও এবার কোথাও কোনো মেলা বসানোর অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। ফলে প্রায় বেকার হয়ে পড়েছে গাইবান্ধার মৃৎশিল্পীরা। এছাড়া আগেই যারা দুর্গাপূজার মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন মাটির খেলনা, তৈজাসপত্র ও মেলার বর্ণালী নানা সামগ্রী তৈরি করে রেখে ছিল তারাও তাদের ওই জিনিসগুলো অবিক্রিত থাকার আশংকায় বিপাকে পড়েছে। তাই এ বছর গাইবান্ধার রঙিন কুমোরপাড়া বা পালপাড়াগুলো বর্ণহীন হয়ে পড়েছে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই গাইবান্ধার কুমোরপাড়াগুলো ঝিমিয়ে পড়েছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন বন্ধ রয়েছে। এজন্য কোথাও বৈশাখী মেলার আযোজন করা হয়নি। এই কারণে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে মেলার আয়োজনও নেই। এসব মেলাকে ঘিরে প্রতিবছর মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মাটির তৈরী বর্ণালি নানা খেলনা, পুতুল, শোলার তৈরী ফুল, মাটির ঢোলগাড়ি ও পশুপাখিসহ সাংসারিক ব্যবহৃত জিনিসপত্র তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতো পালপপাড়ার অধিকাংশ বাসিন্দা। কিন্তু এবছর তারা বেকার। মেলা শুরুর অনেক আগে থেকেই মৃৎশিল্পীরা মেলায় বিক্রির উদ্দেশ্যে মাটির জিনিস তৈরির কাজ শুরু করতো। পালপাড়ায় মৃৎশিল্পীদের সেই চিরচেনা ব্যস্ততা এবার চোখে পড়েনি।
বুধবার গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালি ও খোলাহাটির পালপাড়াসহ বিভিন্ন পালপাড়ায় সরেজমিনে গিয়ে মৃৎশিল্পীদের মাঝে হতাশার ছাপ দেখা গেছে। বাদিয়াখালির পালপাড়ার আরতি রাণী বলেন, করোনা ভাইরাস আমাদের একেবারেই পঙ্গু করে ফেলেছে। মেলা না বসায় আমাদেরও কোন কাজ নেই। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘ভগবান অসুখ দিছে, যদি মরার থাকে তো মরব। কিন্তু এখন যে আমাদের না খেয়ে মরার দশা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ও খোলাহাটী ইউনিয়নের পালপাড়া, শিবপুর, ভেলাকোপা, ধুতিচোরা, ফুলছড়ির রসুলপুর, কঞ্চিপাড়া, ভাষারপাড়া, সাঘাটার ঝাড়াবর্ষা, পুটিমারী, সুন্দরগঞ্জের বেলকা, পাঁচপীর, ধুবনী, চন্ডিপুর, কঞ্চিবাড়ী, শ্রীপুর, ধর্মপুর, সাদুল্যাপুরের রসুলপুর, দামোদরপুর, পলাশবাড়ীর হিজলগাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কোচারশহর, আরজিশাহপুর ও শক্তিপুর এবং পলাশবাড়ীর হিজলগাড়ী গ্রামের প্রায় সাড়ে ৭শ’ পরিবার মৃৎশিল্প ও নানা খেলনা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।