রবিবার ● ২৫ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » কৃষি » নতুন জাতের ধান চাষে সফলতার মুখ দেখছে কৃষক
নতুন জাতের ধান চাষে সফলতার মুখ দেখছে কৃষক
তারেক জাহিদ, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ইমদাদুল হক ইন্তা নামের এক কৃষক ভিন্ন জাতের নতুন এক ধান চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। তার নতুন জাতের এ ধান এলাকায় কৃষকদের মধ্যে হৈচৈ ফেলে দিয়েছে। প্রতিদিন এলাকার কৃষকরা তার ধান দেখতে আসছে। বিজাতীয় ধানের সাথে অন্য জাতের ধানের পরাগয়ানের মাধ্যমে নতুন জাতের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন বলে দাবি করছেন ওই কৃষক। তার সংরক্ষিত নতুন জাতের এ ধানের নাম দিয়েছেন তোহামনি। তোহামনির ফলন দেশে চাষ হওয়া অন্য জাতের থেকে বেশি বলেও দাবি করেছেন এই কৃষক। চলতি আমন মৌসুমে তিনি সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে এই ধান চাষ করেছেন। এ ছাড়া একই এলাকার আরো দুই কৃষক দেড় বিঘা জমিতে এ নতুন জাতের ধান চাষ করেছেন। এর আগে গেল বছর ইরি বোরো মৌসুমে ৯ শতক জমিতে তোহামনি ধানের চাষ করে ১০ মন ৭ কেজি ধান পেয়েছিলেন। সেখান থেকে একমন ধানের বীজ রেখে বাকি ধান চাল করে খাচ্ছেন। ইমদাদুল হক কালীগঞ্জ উপজেলার মেগুরখিদ্দা গ্রামের মৃত আবুল হোসেন মন্ডলের ছেলে। কৃষক ইমদাদুল হক আগে পেশায় সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী ছিলেন। কৃষক ইমদাদুলের দাবি, তিনি পরাগায়নের মাধ্যমে বিজাতীয় ধান থেকে নতুন জাতে ধান উদ্ভাবন করেছেন। কিন্তু স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দাবি নিয়ম না মেনে কৃষক পর্যায়ে পরাগয়ানের মাধ্যমে ধানের জাত পরিবর্তন একেবারেই অসম্ভব। ধানের জাত উন্নয়ন করতে হলে বৈজ্ঞানিক কিছু প্রক্রিয়া আছে যা ধাপে ধাপে সম্পন্ন করতে হয়। ইমদাদুলের ধানের আকার মাঝারী চিকুন। একটি ধানের শীষে ৪২০ থেকে ৪৫০ টি ধান হয়। এরমধ্যে ৬০ থেকে ৮০টি ধান অপুষ্ট হয়ে থাকে। কিন্তু দেশে চাষ হওয়া অন্য জাতের ধানে ২৫০ থেকে ৩০০টি ধান থাকে। এ ছাড়া তোহামনি ধান গাছের উচ্চতা মৌসুম ভেদে সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার ফুট উঁচু হয়ে থাকে। ইরি মৌমুমে এই ধানের জীবনকাল ১৫০ দিন এবং আমন মৌসুমে ১২০ থেকে ১৩০ দিন। কৃষক ইমদাদুল হক জানান, ২০১৫ সালের কথা। আমার ধানের ক্ষেতে বিজাতীয় একটি ধান গাছ থেকে ছয়টি ধানের শীষ সংগ্রহ করি। পরে সুবল লতা ধানের সাথে ৪০ গোছ ধানের চারা রোপন করে পরাগয়ানের পর আবার সংগ্রহ করি। পরের বছর বাসমতি ধানের আবার ৪০ গোছ ধানের চারা রোপন করে সংগ্রহ করেন। এরপরের মৌসুমে এক গোন্ডা জমিতে এই ধানের চারা রোপন করে বীজ সংগ্রহ করি। ২০১৯ সালে ইরি বোরো মৌসুমে ৯ শতক জমিতে ধান রোপন করেন। এই জমিতে ১০ মন ৭ কেজি ধান পান। চলতি আমন মৌসুমে সেই বীজ থেকে সাড়ে ৩ বিঘা জমি চাষ করেছেন। দু’এক দিনের মধ্যে ধান কাটবেন। মাঠে চাষ হওয়া অন্য ধানের থেকে আমার ধানের শীষ বড়, ধানও বেশি। সবার আগে পাক ধরেছে। আশা করি ৩৩ শতকের বিঘা জমিতে ৩০ মন ধানের বেশি হবে।গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আক্তারুল ইসলাম জানান, কয়েক বছর ধরে ইমদাদুল হক এই ধান নিয়ে কাজ করছেন। এলাকার কেউ তাকে ধান গবেষক বলে রহস্য করতো, কেউ আবার পাগলও বলতো। কিন্তু গেল ইরি মৌসুমে তার ধান দেখে সবাই অবাক। চলতি মৌসুমে সবাই তার ধান দেখতে আসছে। এখন সবাই তার ধান বীজ নেওয়া জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস কর্মকর্তা শিকদার মোঃ মোহায়মেন আক্তার জানান, আমি সংবাদ পেয়ে তার ধান ক্ষেত দেখতে গিয়েছিলাম। জমিতে নিয়ম মেনে চারা রোপন বা সার কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়নি। তারপরও তার ধান চাষ সন্তোষ জনক। ধানের শীষে যে পরিমান ধান রয়েছে তাতে ফলনও সন্তোষ জনক হবে মনে করছি। কিন্তু জাত উন্নয়নের দাবি নিয়ে কিছু বলতে পারবো না। বাংলাদেশ কৃষি ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা আছেন, নিয়ম মেনে চাষ করছে তারা পরবর্তি মৌসুমে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলতে পারবেন জাত উন্নয়ন হয়েছে কিনা বা আদৌ জাত উন্নয়ন সম্ভব কি না।
৭০ বছরের বৃদ্ধাকে ধর্ষন চেষ্টায় অভিযোগ মতি ফকির পলাতক
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামে ৭০ বছরের এক প্রতিবন্ধি বৃদ্ধাকে ধর্ষনের চেষ্টা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ তদন্তে শুক্রবার সকালে ভবানীপুর পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। শনিবার বিকালে বৃদ্ধা ও তার মেয়ে হরিণাকুন্ডু থানায় উপস্থিত হয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। তাহেরহুদা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বর সাব্বির আহম্মেদ খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানান, গত রোববার (১৮ অক্টোবর) দিনের বেলায় ওই বৃদ্ধা মানিক জোয়ারদারের বাড়ি থেকে বাঁশ বাগানের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় মতিয়ার রহমান ওরফে মতি ফকির (৬০) নামে এক ব্যক্তি তাকে ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। মতি ফকির গোপিনাথপুর গ্রামের মৃত সোনা জোয়ারদারের ছেলে। সে এখন পলাতক রয়েছে। গ্রামবাসি জানায়, গত রোববার বৃদ্ধাকে ধর্ষনের চেষ্টা করা হলে তিনি গ্রামের মন্ডল মাতুব্বরদের দারস্থ হন। কিন্তু কেও তার বিচার করে দেয়নি। বিলম্বে খবর পেয়ে শুক্রবার ভবানীপুর পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে জানতে পেরেছেন বৃদ্ধা ধর্ষন হয়নি, তবে চেষ্টা করা হয়। হরিণাকুন্ডু থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লা জানান, আমি অভিযোগ পেয়েছি। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সে এলাকায় খারাপ মানুষ হিসেবে পরিচিত। তদন্ত করে আমি ব্যবস্থা নেব বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মহেশপুর সীমান্তে ৫৮ বিজিবির অভিযানে ফেন্সিডিলসহ আটক ৫
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তের মতলার আইট গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৫৮ বিজিবির সদস্যরা একশ বোতল ফেনসিডিলসহ চারজনকে আটক করেছে। তাদের কাছ থেকে বল্লম, হাসুয়া ও তারকাটার বেড়া কাটার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন, মহেশপুরের কাজিরবেড় গ্রামের জামির মোল্লার ছেলে মোঃ তাজমুল ফটিক (২৫), মতলার আইট গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে মোঃ মিজানুর রহমান (২৩), তালশার গ্রামের আব্দুল কাদের বিশ্বাসের ছেলে মোঃ আলমগীর (৪০) ও কাজিরবেড় গ্রামের মুরাদের ছেলে মোঃ মানিক (১৮)। মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অতিরিক্ত পরিচালক মেহেদি হাসান খান শনিবার এক ই-মেইল বার্তায় এ তথ্য জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে মহেশপুর ৫৮ ব্যাটালিয়ন এর অধিনস্ত পলিয়ানপুর বিওপির হাবিলদার মোঃ সফিউজ্জামান গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মাতলার আইট নামক স্থান থেকে চার মানবপাচারকারী ও মাদক চোরাকারবারীকে আটক করে। আটককৃত আসামীদেরকে কাছ থেকে মাদকদ্রব্য ও দেশীয় বল্লম, ধারালো হাসুয়া এবং তারকাটা কাটারি উদ্ধার করা হয়। শনিবার সকালে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানায় আটককৃতদের সোপর্দ ও মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে একই দিন মাটিলা বিওপির হাবিলদার জগন্নাথ মিত্র’র নেতৃত্বে একটি টহল দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মহেশপুর উপজেলার মাটিলা থেকে মাদক চোরাকারবারী ঝন্টু বিশ্বাস(৩০) কে আটক করে। তিনি মাগুরার মালোন্দা গ্রামের প্রভাষ বিশ্বাসের ছেলে। তার কাছ থেকে ১৩ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার করা হয়েছে।