রবিবার ● ২৫ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর সড়কে অপরিকল্পিত খোাঁড়াখোঁড়ি
বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর সড়কে অপরিকল্পিত খোাঁড়াখোঁড়ি
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর সড়ক প্রসস্থকরন ও সংস্কার কাজের ধীরগতিতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন জনসাধারণ। উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের সঠিক তদারকি না থাকায় অপরিকল্পিত খোঁড়াখোঁড়ি আর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মনগড়া সময় নিয়ে কাজে অতিষ্টি হয়ে পড়েছে জনজীবন।
প্রায় ১১টি মাস ধরে যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়ায় চলাচল আর লাইনে দাড়িয়ে অযতা সময় নষ্ট করতে হচ্ছেন। বিশেষ করে জনবহুল ওই সড়কে অপরিকল্পিত খোঁড়াখোঁড়িতে প্রতিনিয়তই যানজটের সৃষ্টি হয়ে গর্ভবতিসহ জরুরী রোগীদের নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে দাড়িয়ে কাঁধতে হচ্ছেন অনেক অভিভাবকরা। গত ডিসেম্বর মাসে উপজেলা সদর থেকে বিশ্বনাথ সীমানা মিয়ারবাজারের পশ্চিমে জগন্নাথপুর সীমানা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটারের সড়ক প্রসস্থকরণ ও সংস্কার কাজ শুরু করে মেসার্স শাওন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্টান।
আর এই কাজের তদারকি করছে উপজেলা প্রকৌশলী অফিস। দীর্ঘ ১১ মাসে মাত্র ২ কিলোমিটার কাজও সম্পন্ন করতে পারেনি প্রতিষ্ঠান। প্রায় ১০দিন পূর্বে অপরিকল্পিতভাবে হরিকলস তালুকদার বাড়ির গেটের সামন থেকে কালিগঞ্জবাজারের মাদাই সেতু পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের অর্ধেক অংশে তিনফুট গর্ত করে রাখা হয়েছে।
বাকি অর্ধেক অংশ রাকা হয়েছে যানবাহন চলাচলের জন্য। কিন্তু ওই এক কিলোমিটার দুর থেকে এক প্রান্তের গাড়ি লাইনে দাড় করে অন্য প্রান্তের গাড়ি ছাড়া হয়। এতে অপর প্রান্তের গাড়ি ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
তারপরও অনেকটা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হেলে ধুঁলে সকল প্রকার যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে। এভাবে আর দু’একদিন চলে গেলে মাদাই হাওর খালের পাড় ধ্বসে পড়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
বর্তমানে প্রায় তিন দিন ধরে ওই গর্ত করা এক কিলোমিটার সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে। এনিয়ে পরিবহণ শ্রমকি ও জনসাধারণের মধ্যে ছাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। যে কোনো সময় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের উপর অঘটন ঘটাতে পারে। বিশেষ করে যাতায়াতের একমাত্র এই সড়কের কালিগঞ্জবাজার, বাগিচাবাজার, ময়নাগঞ্জবাজার, পীরেরবাজার ও মিয়ারবাজার এলাকায় বড় ধরণের অঘটন ঘটলে পুলিশ প্রশাসনের লোকজন দ্রুত যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারি জাকির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাইটে থাকা সুহেল মিয়া নামের একজনের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
কিন্তু সুহেল মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ওই এক কিলোমিটার সড়কের অর্ধেক অংশ খোঁড়ার বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন বিষয়টি দেখছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি প্রকৌশলী প্রদীপ চন্দ্র দেবনাথ ক্ষুব্ধ হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, বেশী কথা বললেতো আর কাজ করা সম্ভব হবেনা।
বিশ্বনাথে নদীর ভাঙনে সড়কের বেশিরভাগ অংশ নদী গর্ভে বিলীন
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের গবিন্দনগর গ্রাম (দ্বীপবন্ধ) হতে আশুগঞ্জ বাজার পর্যন্ত ইটসলিং সড়ক মাকুন্দা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে সড়কের বেশিরভাগ অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত শুক্রবার রাতের কোনো এক সময় এ সড়কের প্রায় ৪৬ মিটার অংশ নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে কয়েকটি গ্রামের মানুষ চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। নদীর ভাঙ্গনের কবলের আতংকে রয়েছেন আশপাশ এলাকার কয়েকটি বাড়ির মানুষ।
জানা গেছে, উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের গবিন্দনগর গ্রাম (দ্বীপবন্ধ) হতে আশুগঞ্জ বাজার পর্যন্ত ইটসলিং সড়ক রয়েছে। ওই সড়ক দিয়ে প্রায় ১০-১২ গ্রামের মানুষ গাড়িযোগে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে আসছেন। কিন্তু গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে মাকুন্দা নদীতে পানির স্রোত বেড়ে যায়। এতে নদীর ভাঙনে সড়কের বেশিরভাগ অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে যানবাহান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে এ এলাকার কয়েকটি গ্রামের মানুষকে এখন পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
স্থানীয় লোকজন জানান, জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধ করা না হলে পুরো এলাকা বিলীন হয়ে যাবে। ভাঙন বাড়লে মাকুন্দা নদীর গতিপথও পাল্টে যাবে। এর ফলে ভাঙনের মুখে পড়বে এলাকার কয়েকটি বাড়ি।
স্থানীয় বাসিন্দা মনির মিয়া বলেন, ‘মাকুন্দা নদীতে যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে যেকোনো সময় এলাকার বাড়িঘর ভেসে যাবে। বৃষ্টি হলে নদীতে স্রোত বেড়ে যায়। এলাকার মানুষজন উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন।’
এব্যাপারে খাজাঞ্চী ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার গিয়াস উদ্দিন বলেন, নদীর কবলে বিলীন হওয়া সড়ক পরিদর্শন করে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীকে অবহিত করেছি। দীর্ঘদিন ধরে মাকুন্দা নদীর পাড়ে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) কামরুজ্জামান বলেন, নদী ভাঙনে সড়ক ধসে যাওয়ার বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে আলাপ করেছি।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবি) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, পাউবি সিলেটের সহকারি প্রকৌশলী আল-আমিনকে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করার জন্য পাঠানো হয়েছে। নদী ভাঙন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।