শুক্রবার ● ৩০ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » অগ্রনী ব্যাংকের দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ, ম্যানেজারসহ ২ কর্মকর্তা বরখাস্ত
অগ্রনী ব্যাংকের দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ, ম্যানেজারসহ ২ কর্মকর্তা বরখাস্ত
মো. জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ অগ্রণী ব্যাংকে কৃষকের নামে ভূয়া কাগজ পত্র তৈরি ও মৃত ব্যক্তিদের নামে ঋণ উঠিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপক শৈলেন কুমার বিশ্বাস, ক্রেডিট অফিসার আব্দুস সালামকে বরখাস্ত ও মাঠ সহকারী আজির আলীকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। ঢাকা থেকে আসা অগ্রনী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার রফিকুল ইসলামসহ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি এ সিদ্ধান্ত নেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্যাংকের ম্যানেজার নাজমুস সাদাত। জানা গেছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গত ২৭ অক্টোবর “কালীগঞ্জে কৃষিঋণের ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর দিন ঢাকা থেকে তদন্ত কমিটি এসে দায়ী ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়ে তাদের বরখাস্ত ও অব্যাহতি প্রদান করেন। অগ্রণী ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখার বর্তমান ম্যানেজার নাজমুস সাদাত জানান, আর্থিক অনিয়মের কারণে অগ্রণী ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখার সাবেক ম্যানেজার ও বর্তমান চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক অফিসে কর্মরত শৈলেন কুমার বিশ্বাস, ক্রেডিট অফিসার আব্দুস সালামকে বরখাস্ত ও মাঠ সহকারী (অস্থায়ী) আজির আলীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। ব্যাংকটির পূর্বের ম্যানেজার শৈলেন কুমার বিশ্বাসকে বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক অফিসে কর্মরত, ক্রেডিট অফিসার আব্দুস সালাম কালীগঞ্জ শাখায় ও মাঠ সহকারী আজির আলী ঝিনাইদহ হামদাহ বাসস্ট্যান্ড শাখায় কর্মরত ছিলেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত ২০১৭ সাল থেকে ৪% সুদে কৃষিঋণ বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম করার অভিযোগ পাওয়া যায়। কৃষকের ঋণের কাগজপত্র জাল ও মৃত ব্যক্তিদের নামে ঋণ তুলে ব্যাংকটির সাবেক ম্যানেজারসহ তিন কর্মচারী দুই কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করেন। অনেক কৃষক ঋন না নিয়েও এখন ঋনী। তাদের নাম ব্যবহার করে ঋন উত্তোলন করা হয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের আব্দুল মালেক মৃত্যুবরণ করেন প্রায় ৩ বছর আগে। কিন্তু তার নামে ৪৮ হাজার ঋন তোলা হয়। পুকুরিয়া গ্রামের হোসেন আলী মারা গেছেন ২ বছর আগে। তার নামেও ৪৭ হাজার টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়। এ নিয়ে গত ১ মাস ধরে অগ্রণী ব্যাংকের ঝিনাইদহ আঞ্চলিক অফিস থেকে তদন্ত কমিটি কাজ করছিল।
বিকাশ এজেন্টকে কুপিয়ে জখম
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নে রাজু আহম্মেদ নামে (৩৫) এক বিকাশ এজেন্টকে কুপিয়ে জখম করেছে দূবৃত্তরা। রাজু আহম্মেদ চেউনিয়া গ্রামের রফি মন্ডলের ছেলে। গত বুধবার রাত ১১টার দিকে দোকানঘর নামক স্থান থেকে বাড়ি আসার পথে চেউনিয়া গ্রামের হারুনের বাড়ির সামনে পৌছালে তার উপর হামলা চালানো হয়। আহত ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজন হওয়াই তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। পরিবারের অলিযোগ একই গ্রামের ইরাদুলের ছেলে ইমন (১৭) রাজুর ঘাড়ের পিছনে দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেওয়া দিয়ে তার কাছে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। ইমন কালীগঞ্জের হাসান স্যানেটারিতে কাজ করে। ইমন দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় চুরিসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত বলে গ্রামবাসির অভিযোগ। ৮ মাস আগে চেউনিয়া গ্রামের সিদ্দিকের ছেলে হৃদয়ের মোবাইল চুরি করে ধরা পড়ে ইমন। সে সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সাথে জড়িত থেকে দীর্ঘদিন ধরে নলডাঙ্গা ও মহারজপুর ইউনিয়নে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলেও গ্রামবাসি জানায়। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। দোষীদের গ্রেফতারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও ওসি জানান।
৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গর্ভবতী গৃহবধূকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে (১৯) যশোরের নওয়াপাড়ায়র একটি বাড়িতে চারদিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ওই গৃহবধূ নিজে বাদী হয়ে ঝিনাইদহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৪ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করে। মামলার বিবরণ ও আসামি পক্ষের আইনজীবী আকিদুল ইসলাম জানান, ধর্ষিত গৃহবধূর স্বামী চুয়াডাঙ্গা থেকে যশোর সড়কে চলাচলকারী শাপলা পরিবহনের হেলপার। তার বাড়ি যশোর সদর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামে। আর গৃহবধূর বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার তেতুলবাড়িয়া গ্রামে। দু’বছর আগে তাদের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বর্তমানে ওই গুহবধূ ৫ মাসের গর্ভবতি। চলতি মাসের ১০ তারিখে তার স্বামী ফোনে জানায় দুপুরে বারোবাজার বাসস্টান্ডে দাড়ালে তাকে মথুরাপুর শশুরালয়ে নামিয়ে দেবে। স্বামীর কথা অনুযায়ী ঘটনার দিন দুপুরে বারোবাজার বাসস্টান্ডে আসে। সে সময় সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা বাবা’র বাড়ির পাশ্ববর্তি তেতুলবাড়িয়া গ্রামের তিন যুবক মথুরাপুর পৌছে দেবে বলে ওই সড়কে চলাচলকারী গড়াই পরিবহনে তুলে যশোরের নওয়াপাড়ায় একটি বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে। এরপর পিয়াস, তরু, রাকিব ও তরিকুল চার দিক আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষন করে। এরমধ্যে প্রধান আসামি পিয়াস শাপলা পরিবহনের সুপারভাইজার। পরে মেয়েটিকে তারা ছেড়ে দিলে সে বাবার বাড়ি চলে আসে। তখন নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই গৃহবধূকে মামলা না দিতে চাপ দিতে থাকে। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই গৃহবধূ নিজে বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে পিয়াস, তরু, রাকিব ও তরিকুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। আইনজীবী আরো জানান, মামলা হয়েছে। এখন আদালতের প্রক্রিয়া অনুসারে বিচারকার্য চলবে।