শুক্রবার ● ৩০ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » দুর্নীতির অভিযোগ শৈলকুপার ইউএনওকে বদলী
দুর্নীতির অভিযোগ শৈলকুপার ইউএনওকে বদলী
মো. জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: বহু আলোচনা সমালোচনার পর অবশেষে বদলী হলেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তাকে বদলী করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি অনুবিভাগের উপ-সচিব আলিয়া মেহের স্বাক্ষরিত এ বদলীর আদেশ ২৯ অক্টোবর জারী করা হয়। সম্প্রতি ঘর নির্মাণ নিয়ে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অর্থায়নে ‘জমি আছে ঘর নাই’ আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পে শৈলকুপায় ৩৭ টি ঘর নির্মাণের শুরু থেকে দুর্ণীতির অভিযোগ ওঠে। উপকারভোগীরা অভিযোগ তোলে নিন্মমানের ইট, বালি, সিমেন্ট দিয়ে ঘর নির্মাণ কাজ হচ্ছে। নির্মানাধীন অবস্থায় ধ্বসে পড়ে বিভিন্ন এলাকার ৫ টি ঘর। আন্দোলনের বার্তা ২৪ সহ গণমাধ্যমে এসব নিয়ে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হয়। যা গত সপ্তাহে অনুসন্ধানে নামে দুদক। দুদকের সরেজমিন অনুসন্ধানের এক সপ্তাহের মাথায় ইউএনও শৈলকুপা ছাড়লেন। এর এক সপ্তাহ আগে ঘর নির্মানের সাথে জড়িত ইউএনওর কার্যালয়ের অফিস সহকারী মিন্টু ও আরেক অফিস সহকারী আক্তার হোসেন কে শৈলকুপা থেকে সরিয়ে অন্যত্র বদলী করা হয়। শৈলকুপার পিআইওর সাথেও এর আগে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছিলেন ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। মোঃ সাইফুল ইসলাম বিগত ১ বছরের কিছু সময় আগে ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলা থেকে বদলী হয়ে শৈলকুপা আসেন। শৈলকুপা এসে একের পর এক নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ গণমাধ্যমে বিস্তর লেখালেখি হয়। অবশ্য ইউএনও মাঝে মধ্যে তার ফেসবুক আইডিতে এসব ঘটনা কে মিথ্যাচার দাবি করে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ব্যাখ্যা দেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাকে ছাড়তে হলো শৈলকুপা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম কে পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সহকারি প্রধান হিসেবে বদলী করা হয়েছে। ২৯ অক্টোবর ২০২০ইং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি অনুবিভাগের উপ সচিব আলিয়া মেহের স্বাক্ষরিত এ বদলীর আদেশ জারী করা হয়।
চলন্ত বাসের মধ্যে মলম পাটির কবলে ৬৫ বছরের বৃদ্ধ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ যশোর মহাসড়কের পাশে অচেতন অবস্থায় রাত সাড়ে ৭টার সময় পড়েছিল ৬৫ বছরের বৃদ্ধ মতিয়ার রহমান। প্রায় মৃত ভেবে কেউ ছুয়েও দেখছেনা। এমনি সময়ে সেখানে ছুটে আসেন কালীগঞ্জ থানার এস আই আবুল খায়ের। তিনি তাৎক্ষনিক ভাবে ওই বৃদ্ধকে তুলে নিয়ে ভর্তি করেন কালীগঞ্জ হাসপাতালে। বৃদ্ধের মুমুর্ষ অবস্থায় নিজের টাকায় কিছু প্রয়োজনীয় ঔষধও কিনে দেন। এরপর ডাক্তারদের ১ ঘন্টা প্রচেষ্টায় পর ফিরে আসে ওই বৃদ্ধের জ্ঞান। পুলিশ কর্মকর্তার এমন মহানুভবতায় এ যাত্রায় প্রানে রক্ষা পায় উপজেলার মহেশপুরের আজমপুর গ্রামের বৃদ্ধ মতিয়ার। পরে বৃদ্ধের সন্তানদের খবর দিয়ে ডেকে এনে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কালীগঞ্জ থানার এস আই আবুল খায়ের জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭ টার দিকে খবর পান মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের সামনে অচেতন অবস্থায় এক বৃদ্ধ পড়ে আছে। তিনি দ্রুত সেখানে গিয়ে জানতে পারেন একটি যাত্রীবাহি পরিবহন থেকে ওই বৃদ্ধকে ফেলে রেখে গেছে। এমন অবস্থায় তাৎক্ষনিকভাবে তিনি স্থানীয় কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় ওই বৃদ্ধকে তুলে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এস আই আবুল খায়ের আরো জানান, সড়কে চলন্ত বাসের মধ্যে মলম পাটির কবলে পড়ে অচেতন হয়ে পড়াতে বৃদ্ধকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে গিয়েছিল। তিনি তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠলে বৃদ্ধের বাড়িতে খবর দেন। এরপর রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বৃদ্ধের পুত্র মাসুদ হাসপাতালে আসলে তার হাতে পিতাকে তুলে দেওয়া হয়।
মহেশপুরে বিজিবি কর্তৃক ভারতীয় ইয়াবাসহ আসামী আটক
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি) এর অধিনন্ত শ্যামকুড় বিওপির নায়েব সুবেদার মোঃ সিরাজুল ইসলাম এর নেতৃত্বে ০৫ সদস্য বিশিষ্ট টহল দল নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সীমান্ত শূন্য লাইন হতে আনুমানিক ১ কিঃমিঃ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার নলবিলপাড়া গ্রামের ব্রীজ উপর হতে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে মাদক চোরাকারবারী মোঃ ফারুক সরকার (৪০), পিতা-মৃত সিদ্দিক সরকার, গ্রাম-শ্যামকুড় নলবিলপড়া, ডাকঘর-শ্যামকুড়, থানা-মহেশপুর, জেলা-ঝিনাইদহকে ১০ পিস ভারতীয় ইয়াবাসহ আটক করা হয়। আটককৃত আসামীকে মাদক দ্রব্যসহ ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানায় সোপর্দ ও মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ব্রি-ধান ৭৫ ফলনে চমক, কৃষকদের মুখে বইছে তৃপ্তির হাসি
ঝিনাইদহ :: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত ব্রি-ধান ৭৫ ফলনে চমক সৃষ্টি করেছে, যা কৃষকের ঘরে উঠতে শুরু করেছে। এ জাতের ধান চাষে কম খরচে অল্পদিনে অধিক ফলন পেয়ে কৃষকেরা বেজায় খুশি। তাদের মধ্যে একজন ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের কৃষক শাহাজান মন্ডল। তিনি এ বছর দুটি খেত মিলে মোট ১৮ কাঠা জমিতে ব্রি-ধান ৭৫ চাষ করে এলাকার অন্য কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন। এখনই তিনি ওই জমিতে বোনাস ফসল হিসেবে ইচ্ছামতো রবিশস্যের চাষ করতে পারবেন এই ভেবে তার মনে দিচ্ছে খুশির দোলা। কৃষক শাহাজান মন্ডল উপজেলার কোলা ইউনিয়নের খড়িকাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল খালেক মন্ডলের ছেলে। তার খেতের ধান দেখে অন্য কৃষকেরাও ঝুঁকছেন ব্রি-ধান ৭৫ চাষে। যে কারণে তার খেতের ধান বীজ হিসেবে সবাই পেতে চাচ্ছেন। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৫৭০ হেক্টর। কিন্তু চাষ হয়েছে ১৮ হাজার ৪০০ হেক্টর। এর মধ্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত ব্র্রি-ধান ৭৫ চাষ হয়েছে ১৭৫ হেক্টর জমিতে। এ জাতের ধানের বীজ ২০১৮ সালে উদ্ভাবিত, যা সরকারি প্রনোদনা হিসেবে কৃষকদের বিনামূল্যে দেয়া হয়েছিল। সরেজমিনে শাহাজাহান আলী মন্ডলের একটি ধানখেতে গেলে দেখা যায়, ধান পেকে সোনালি রঙ ধারণ করতে শুরু করেছে। ধানের বাইল বা শিষ ধানের ভারে নুইয়ে পড়ছে। ধান দেখে কৃষক শাহাজান খেতে দাঁড়িয়েই তৃপ্তির হাসি হাসছেন। শাহাজান মন্ডল জানান, মাঠে তার নিজের ৩ বিঘা চাষযোগ্য জমি আছে। আর বছরে ১২ হাজার টাকার চুক্তিতে আরও ৪ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে বিভিন্ন জাতের আমন ধানের চাষ করেছেন। এর মধ্যে কৃষি অফিস থেকে বীজ নিয়ে বর্গা নেয়া দুই দাগের ১৮ কাঠা জমিতে নতুন জাতের ব্রি-ধান ৭৫ চাষ করেছেন। এর মধ্যে ১১ কাঠার এক খন্ডের খেতের ধান কেটে মাড়াই সম্পন্ন করেছেন। তিনি জানান, ওই ১১ কাঠায় তিনি মোট সাড়ে ১৭ মণ ধান পেয়েছেন। রোপণের সময় থেকে ৭২ দিন সময় লেগেছে। আর এ জাতের ধানের বাকি আরেক খেতেই রয়েছে। দুয়েক দিনের মধ্যে কেটে মাড়াই করবেন। তিনি বলেন, নতুন জাতের ব্রি-ধান ৭৫ তাদের মাঠে এ বছরই প্রথম চাষ করেছেন। একই সঙ্গে রোপণ করা অন্য জাতের ধান সবেমাত্র বাইল বা শিষ বের হচ্ছে। অথচ ব্র্রি-ধান ৭৫ ঘরে উঠিয়ে এখন মসুর চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করতে বেশ সময় পাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, এ ধান রোপণের পর থেকে মাত্র একবার সার দিয়েছেন। আর রোগবালাই নেই বললেই চলে। কম উৎপাদন ব্যয়ে অল্প সময়ে ভালো ফলন পেয়েছেন। কৃষক শাজাহান আরও বলেন, তিনি বিগত ১৮ বছর ধরে কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। সব মৌসুমেই তিনি ধানের চাষ করে থাকেন। কোন কোন বছর ফলন এত কম হয় যে উৎপাদন ব্যয় ঘরে আনাটাও কষ্ট হয়ে যায়। সেদিক বিবেচনায় বর্তমান সময়ে ব্রি-ধান ৭৫ সবচেয়ে কৃষকবান্ধব বলে মনে করছেন। ফলে আগামীতে তিনি সব জমিতেই এ জাতের ধানের চাষ করবেন। ওই গ্রামের আরেক কৃষক জামাল হোসেন জানান, তাদের গ্রামের সারা মাঠেই এখন আমন ধান। কিন্তু কৃষক শাহাজান মন্ডলের খেতে নতুন জাতের ধান হয়েছে দেখার মতো। শুধু তাই নয়, তার ধানখেতের পাশ দিয়ে গেলে এ জাতের ধানের মিষ্টি সুগন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আবার ফলনও ভালো। এখন গ্রামের অধিকাংশ মানুষ তার নিকট বীজের জন্য ধান কিনতে চাচ্ছেন। তিনি নিজেও আগামীতে এ ধানের চাষ করবেন। আর সবচেয়ে বড় কথা এ ধান চাষ করে সহজেই রবিশস্যের চাষ করা সম্ভব। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার মোহায়মেন ইসলাম জানান, এ উপজেলার কৃষক শাহাজান মন্ডল একা নন এ উপজেলায় মোট ১৭৫ হেক্টর জমিতে ব্রি-ধান ৭৫ চাষ করা হয়েছে। এ ধানে উৎপাদন ব্যয় অনেক কম। অপেক্ষাকৃত কম দিনে সংগ্রহ করা যায়। ফলনও বেশি। তাই কৃষকদের দৃষ্টি এখন ব্রি-্র-ধান ৭৫ এর দিকে। কৃষি অফিসের মাঠকর্মীসহ কৃষকেরা সরাসরি এসেই এ ধানের ভালো ফলনের গল্প শোনাচ্ছেন। তিনি নিজেও কয়েকটি খেতে ধান দেখে প্রমান পেয়েছেন। ব্রি-ধান ৭৫ এর পাকা খেতের পাশে গেলে একটা মিষ্টি সুগন্ধ পাওয়া যায়। এটি সাড়া ফেলেছে কৃষকদের মাঝে। ফলে আগামীতে এ ধানের চাষ ব্যাপক হারে বাড়বে বলে তিনি মনে করছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ঝিনাইদহের উপপরিচালক কৃপাংশ শেখর বিশ্বাস জানান, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ব্রি-ধান ৭৫ এর জাত উদ্ভাবন করে। এরপর ২০১৮ সালে সরকারিভাবে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয়। এ জাতের ধানবীজ কৃষকদেরকে প্রণোদনা হিসেবে দেয়ার পর কৃষকেরা চাষ করেছেন। ফলন ভালো পাওয়ায় এখন সাড়া পড়ে গেছে জেলাব্যাপী। তিনি বলেন, এ জাতের পাকা ধানখেতের পাশ দিয়ে গেলে মিষ্টি গন্ধ পাওয়া যায়। তাই এটাকে সুগন্ধি ধান বলা হয়। কম আয়ুষ্কালের ধান হওয়ায় কৃষকেরা ধান কেটেই আবার ভালোভাবে অন্য ফসল চাষের সুযোগ পাচ্ছেন। এখন থেকেই কৃষকেরা আগামী দিনের জন্য বীজ নিয়ে ভাবছেন। তিনি আরও বলেন, তাদের প্রদর্শনী প্লট থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন। আর কৃষক পর্যায়ের খেতের ধানের বীজ সংরক্ষণের জন্য প্রযুক্তি সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে। কৃষকের হাসিতে সারা দেশ হাসে। আর এটা ভাবতেও ভালো লাগে বলে যোগ করেন এ কৃষিবিদ।
ঝিনাইদহ জেল সুপারের বিদায় সংম্বর্ধনা অনুষ্ঠিত
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ জেলা কারাগারের জেল সুপার গোলাম হোসেনের বদলী জনিত বিদায় সংম্বর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার রাতে জেলা কারাগার মিলনায়তনে এ সংম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ। জেলা কারাগারের জেলার আবুল বাশারের সভাপতিত্বে বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আসাদুজ্জামান, ডেপুটি জেলার ডালিয়া রহমান, জেলা কারা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা: আবু সাঈদ। এছাড়াও জেলা কারাগারের সকল কর্মকর্তা ও সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে বিদায়ী জেল সুপার গোলাম হোসেনকে ফুল ও ক্রেষ্ট উপহার দেন অতিথিবৃন্দ।