মঙ্গলবার ● ৩ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » গ্রেপ্তার-আতংক পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মী
গ্রেপ্তার-আতংক পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মী
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে গ্রেপ্তার-আতঙ্ক বিরাজ করছে। গ্রেপ্তার এড়াতে তাঁরা এখন এলাকায় থাকছেন না। (৩০ অক্টোবর) গত শুক্রবার রাতে দলটির ৩৫ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে আরও ১২০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ মামলা করে।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর অনুষ্ঠিত বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের দিন বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) সরকারি কাজে বাঁধা, প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অবরুদ্ধ করে পুলিশের ওপর হামলা ও নির্বাচনি সরঞ্জাম বহনকারি গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগে থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পরপরই গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি থাকায় উপজেলা বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের কয়েকশত নেকাকর্মী গা ডাকা দিয়েছেন। মামলার অভিযুক্তরা হলেন-দশঘর ইউপির নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান এমাদ উদ্দিন খান, উপজেলা বিএনপি নেতা আরব খান, জয়নাল আবেদীন, জানু মিয়া, পৌর বিএনপি নেতা আহেমদ-নূর উদ্দিন, আবদুর রহমান খালেদ, ফরিদ আহমদ, বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম হান্দু মিয়া, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আবেদুর রহমান আছকির, গোবিন্দ মালাকার, যুবদল নেতা আবদুর রব সরকার, দৌলতপুর যুবদলের সভাপতি আব্দুর রউফ, যুবদল নেতা মিজবাহ খান, সুলতান খান, আবদুুল মুমিন কালু, আনোয়ার হোসেন, জাকির আহমদ, উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক হোসাইন আহমেদ প্রবেল, সদস্য সুলতান মিয়া, পৌর ছাত্রদলের আহবায়ক ফখরুল ইসলাম রেজা, ছাত্রদল নেতা নাজমুল হাসান শিমুল, নিজাম উদ্দিন, তেরাব আলী, জাহেদ, হিফজুর রহমান, আতিনুর রহমান আতিকুর, দিলু মিয়া, বেলাল, মখলিছুর রহমান, রাশেদ মিয়া, লিফু মিয়া, রেজাউল করিম রাজু, সালমান, ছাইদুর রহমান, রুফু মিয়া। পুলিশ জানায়, গত ২৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দশঘর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের পর দশঘর এনইউ উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র থেকে সন্ধ্যায় ব্যালট বাক্স ও নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে উপজেলা সদরে ফেরার সময় পুলিশের উপর হামলা করে অভিযুক্তরা। এসময় নির্বাচনী সরঞ্জাম বহনকারী একটি পিকআপ (মিনি ট্রাক) গাড়ির গ্লাস ভাংচুর করে অভিযুক্তরা। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এব্যাপারে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত (আহবায়ক) জালালউদ্দিন বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের দমন করা যাবেনা। ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে।
এ মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তি বলেন, মামলার অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ মামলার কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি বলে তিনি জানান।
বিশ্বনাথে হত্যা মামলায় ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ও শিশু রবিউল ইসলাম (১২) হত্যায় মামলায় ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। তিনি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরি গ্রামের আজিজুর রহমান গেদুর ছেলে ও দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য গোলাম হোসেন (৪৫)। রোববার গভীর রাতে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ সোমবার ২ নভেযম্বর গ্রেপ্তারকৃত ইউপি সদস্যকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার এসআই দেবাশীষ শর্মার নেতৃত্বে একদল পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে উপজেলার গোয়াহরি গ্রামে অভিযান চালিয়ে শিশু রবিউল হত্যা মামলায় ইউপি সদস্য গোলাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ইউপি সদস্যকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
শিশু হত্যা মামলায় ইউপি সদস্য গ্রেপ্তারের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। শিশু রবিউল হত্যার অপর আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং হত্যা রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, গত ১২ অক্টোবর সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার নওধার-রহমাননগর গ্রামের বাড়ি থেকে বের হলে ‘নিখোঁজ’ হয়ে যায় রবিউল। কিন্তু পরদিন ১৩ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে উপজেলার ‘রামপাশা-বৈরাগীবাজার’ সড়কের বাল্লার সেতুর পাশের ডোবা থেকে শিশু রবিউলের লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। নিহতের বাবা উপজেলার নওধার-রহমাননগর গ্রামের আকবর আলী বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে এ মামলা করেন। মামলায় প্রতিবেশী তিন জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন।