সোমবার ● ৯ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » রাজশাহী » বাগমারায় ভাতার বই নিয়ে শুনীতির বাড়িতে প্রশাসনের কর্মকর্তা
বাগমারায় ভাতার বই নিয়ে শুনীতির বাড়িতে প্রশাসনের কর্মকর্তা
মাইনুল হাসান, রাজশাহী প্রতিনিধি :: রাজশাহীর বাগমারার ওরাওঁ সম্প্রদায়ের একমাত্র বয়স্ক সেই নারী শুনীতি রানী (৬৩) অবশেষে বয়স্ক ভাতার বই হাতে পেলেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর হাতে ভাতার বই তুলে দেওয়া হয়েছে। এর আগে তাঁকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে সহযোগিতাও করা হয়।
‘ভাতা না পেয়ে শুনীতি রানীর কষ্টের জীবন’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে শুনীতি রানীর বয়স্ক ও বিধবা ভাতা না পাওয়া এবং দুর্দশা নিয়ে একটি চিত্র ফুটে ওঠে। সংবাদটি প্রকাশের পরেই স্থানীয় লোকজন তাঁদের ফেসবুকে শেয়ার করে তা প্রচারণা চালান। ওই দিনই সংবাদটি বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নজরে আসে। পরের দিন তিনি দপ্তরের লোকজন পাঠিয়ে শুনীতি রানীর খোঁজ-খবর নেন। তাঁর বিষয়ে জানার পর তাঁকে নিজ দপ্তরে ডেকে পাঠান। তৃতীয় লিঙ্গের এক প্রতিবেশির সহযোগিতায় গত ৫ নভেম্বর ইউএনও’র দপ্তরে আসেন শুনীতি রানী। ইউএনও এক বস্তা বিভিন্ন ধরণের খাদ্য সামগ্রী ছাড়াও নগদ অর্থ (দুই হাজার টাকা) তুৃলে দেন শুনীতি রানীর হাতে। ভ্যানে করে তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।
ওই দিনই শুনীতি রানীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, তাঁর ও নমিনির পাসপোর্ট আকারের ছবি সংগ্রহ করে বয়স্ক ভাতার জন্য। ব্যাংক হিসাব চালুসহ বিভিন্ন দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে আজ সোমবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে ভাতার বই হস্তান্তর করা হয়। শুনীতি রানীর বাড়িতে গিয়ে তার হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে উপহার হিসাবে ভাতার বই হাতে তুলে দেন।
এ সময় তাঁর সাথে ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান অনিল কুমার সরকার, উপজেলা প্রকৌলশী সানোয়ার হোসেন, সমাজসেবা অফিসার আব্দুল মমিন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান প্রমুখ।
ইউএনও শরিফ আহম্মেদ বলেন, সংবাদের মাধ্যমে বিষয়টি তাঁর নজরে এসেছে। বয়স্কভাতার তালিকাভুক্ত করা হলো। এছাড়াও বিভিন্ন সমস্যায় শুনীতির পাশে উপজেলা প্রশাসন থাকবে বলে জানিয়েছেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুল মমিন জানান, গত জুলাই মাস থেকে শুনীতি ভাতার সুবিধা পাবেন। এখন থেকে প্রতিমাসে তিনি ৫০০ টাকা করে ভাতা পাবেন।
জানা যায়, উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জে বসবাস ওরাওঁ সম্প্রদায়ের এই নারীর। স্বামী মারা গেছেন এক যুগ আগে। এরপর থেকে তিনি ভবানীগঞ্জ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের পেছনে একটি খুপরিতে বসবাস করছেন শুনীতি। হাট-বাজার ঝাড়ু দিয়ে ও মাছের আড়তে পরিচ্ছন্নতার কাজ করে কোনো রকম জীবন যাপন করে আসছেন তিনি। সরকার বয়স্ক ও বিধবা ভাতা চালু করলেও এই বৃদ্ধা ছিলেন বঞ্চিত।